অপবাদ দিয়ে কাউকে দায়িত্ব থেকে সরাবে না বিসিবি
বিজয় দিবস প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের পর তখন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দে মশগুল। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের থেকে একে একে নিচ্ছিলেন ক্রেস্ট। শহীদ মুশতাক একাদশের হয়ে খেলা হাবিবুল বাশার ক্রেস্ট নিয়েই ছুটলেন অস্থায়ী মঞ্চের পেছনে। তার মোবাইলে কল বেজেই চলছে।
হাবিবুল কথার মাঝখানে প্রতিপক্ষ দলে থাকা মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে ডেকে নেন। ধারণা করা যাচ্ছিল, ফোনের ওপারে বিশেষ কেউ যার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশারের। জানিয়ে রাখা ভালো, রাত পোহালেই নিউ জিল্যান্ডে প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দলের সঙ্গে এবার কোনো নির্বাচক নেই। তাই ফোনে ব্যস্ত থাকাটা অস্বাভাবিক নয় মোটেও।
নির্বাচক প্যানেলের দুই সদস্য যখন ফোনে ব্যস্ত আরেক নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক মাঠেই ছিলেন। তিনজনই শনিবার খেলেছেন বিজয় দিবস প্রীতি ক্রিকেটে। রাজ্জাকের বলে মিনহাজুল আবেদীন ৭ রানে বোল্ড হওয়ায় কাউকে কাউকে বলতে শোনা গেল, ‘মাঠে-ও রাজ্জাক আউট করে দিলেন মিনহাজুলকে।’
মাঠে-ও বলতে, মাঠের বাইরে আউট করেছেন এমনটা নয়। তবে প্রধান নির্বাচকের সিংহাসন মোটামুটি নড়ে গেছে বলাই যায়। মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আর হাবিবুল বাশার সুমনের সাথে বিসিবির চুক্তি আছে বর্তমান বছরের শেষ দিন পর্যন্ত। শোনা যাচ্ছে, প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করে আসা মিনহাজুলের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের ইচ্ছে নেই বিসিবির। তাই আলোচনায় উঠছে নির্বাচক প্যানেলের দায়িত্ব কে পেতে যাচ্ছে?
হাবিবুল বাশার নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন ১৩ বছর। তার প্রমোশন হবে কিনা সেটা নিয়ে চলছে জল্পনা। কেউ কেউ তার পক্ষে। কেউ তার ওপর রাখতে পারছেন না পূর্ণ আস্থা। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক যে প্রধান নির্বাচক হিসেবে বিবেচনায় আছেন। তবে পরিবর্তন যে আসছে তা বোঝা গেল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথায়, ‘পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। লম্বা সময় হয়েছে। সবসময়ই পরিবর্তন হওয়াটা ভালো।’
সঙ্গে বিসিবি সভাপতি এ-ও বলেছেন, যদি কাউকে সরাতে হয় তাকে সসম্মানেই সরাবে বোর্ড, ‘কিন্তু কাউকে এক্সকিউজ করে বাদ দেওয়া, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাদ দেওয়া, এটা খুব খারাপ ঘটনা সৃষ্টি করবে।’
নির্বাচক হতে হলে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার হতে হবে এমন কোনো ধারা নেই বিসিবির গাইডলাইনে। সুনির্দিষ্ট কোনো নীতি নেই। নিশ্চিত করেছেন বিসিবি সভাপতি। নির্বাচক প্যানেল নির্বাচন করতে বিসিবির একটি কমিটি কাজ করে। তারা বোর্ড সভায় কয়েকটি নাম উপস্থাপন করেন। বোর্ড পরিচালকরা সেই নামগুলো থেকে সম্ভাব্য সেরা প্রার্থীকে বেছে নেয়।
নির্বাচক প্যানেলের নির্বাচন প্রক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘আমাদের একটা কমিটি আছে, ওই কমিটি আমাদের কাছে নাম প্রস্তাব করবে। উনারা দেখবেন কারা কারা আগ্রহী প্লাস ওদের প্রেফারেন্স কী। সেটা নিয়ে বোর্ডে আলোচনা হবে। সেখান থেকে আমরা সিলেক্ট করব। আসলে কে কে হবে, কে আসবে, এই মুহূর্তে এটা বলা খুব কঠিন। তবে কারও যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে সে প্রকাশ করতে পারে। কোন সমস্যা নেই।’
বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল এই পদে দায়িত্ব পেতে আগ্রহের কথা বলেছিলেন গণমাধ্যমে। আশরাফুলের জন্যও মঞ্চ উন্মুক্ত আছে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান। নতুন বছরে নতুন কাউকে কি নির্বাচক পদে দেখা যাবে? সময়ের কাছেই তোলা থাক এই প্রশ্ন।
ইয়াসিন/আমিনুল