ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৯ ১৪৩১

সাত উইকেটের বড় জয়ে সিরিজ নিউ জিল্যান্ডের

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১১:৪১, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
সাত উইকেটের বড় জয়ে সিরিজ নিউ জিল্যান্ডের

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২৯১/১০ (৪৯.৫ ওভার)
নিউ জিল‍্যান্ড: ২৯৬/৩ (৪৬.২ ওভার)
ফলাফল: নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী

এই ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের জন্য সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। তাতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতাই করতে পারলো না নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বিশাল ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ৭ উইকেটের ব্যবধানে বড় পরাজয়ে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারের একার লড়াই কোনো কাজেই আসলো না।

আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নিউ জিল্যান্ডের নেলসনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত দেড়শ (১৬৯) রানের ইনিংসের পরও ৪৯.৫ ওভারে ২৯১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে উইল ইয়াং ও হেনরি নিকোলসের দুটি ৯০ ছাড়ানো ইনিংসে ভর করে ৩ উইকেট হারিয়ে ২২ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় নিউ জিল্যান্ড। 

আরো পড়ুন:

শরিফুলের আঘাতে নব্বইয়ের ঘরে ফিরলেন নিকোলস
একই ইনিংসে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে নার্ভাস নাইন্টিনের শিকার হলেন হেনরি নিকোলস। এর আগে উইল ইয়াংকে ফিরিয়েছেন হাসান মাহমুদ। এবার ৯৫ রানের মাথায় শরিফুলের বলে উইকেট ছুঁড়ে দিলেন নিকোলস।শরিফুল ইসলামের শর্ট বলে পুল করে ডিপ মিডউইকেটে রিশাদ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ৯৯ বলে এক ছক্কা ও আট চারে ৯৫ রান করেন নিকোলস।

৪১ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ২৬২। ক্রিজে টম লাথামের সঙ্গী টম ব্লান্ডেল।

নিকোলস-লাথামের জুটিতে পঞ্চাশ
আবারো পঞ্চাশ রানের জুটি পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড। টানা তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পেল স্বাগতিকরা। হেনরি নিকোলস ও টম লাথামের জুটিতে ৪২ বলে এসেছে পঞ্চাশ। ৯৬ বলে এক ছক্কা ও সাত চারে নিকোলস খেলছেন ৯১ রানে। ১৭ বলে তিন চারে ল‍্যাথামের রান ২১।

৪০ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ২ উইকেটে ২৫৪। জয়ের জন‍্য শেষ ১০ ওভারে স্বাগতিকদের চাই ৩৮ রান।

হাসানের দ্বিতীয় আঘাতে সেঞ্চুরি বঞ্চিত ইয়াং
রান দিলেন, সুযোগ তৈরী করলেন এবং উইকেট নিলেন। এই হলো হাসান মাহমুদের আরও একটি ওভারের সার সংক্ষেপ তার ওভারে প্রথম তিন বলে হেনরি নিকোলসের ব‍্যাটে তিনটি বাউন্ডারি হজম করেন তিনি। পঞ্চম বলে সহজ ফিরতি ক‍্যাচ নিয়ে বিদায় করেন উইল ইয়াংকে। তাতে ভাঙে ১৩১ বল স্থায়ী ১২৮ রানের জুটি। ৯৪ বলে দুই ছক্কা ও আট চারে ৮৯ রান করেন ইয়াং।

৩৩ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ২ উইকেটে ২০৪।

নিকোলসের পঞ্চাশ
প্রথম দুই ব্যাটারের মতো পঞ্চাশ স্পর্শ করেছেন হেনরি নিকোলসও। ফিফটির ঘর ছুঁতে তার লেগেছে ৬৪ বল। এই সময়ে তার ব‍্যাট থেকে এসেছে তিনটি চার। দারুণ স্ট্রাইক রোটেটে বাকি রান করেছেন এই ব্যাটার। উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে তিনি গড়েছেন শতরানের জুটি।

৩১ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ১ উইকেটে ১৮৭।

ইয়াং-নিকোলসের জুটিতে পঞ্চাশ, নিউ জিল্যান্ডের দেড়শ
প্রথম উইকেট জুটিতে পঞ্চশের পর দ্বিতীয় উইকেটেও পঞ্চাশ রানের দেখা পেয়েছে নিউ জিল‍্যান্ড। উইল ইয়াং ও হেনরি নিকোলসের জুটিতে ৫৮ বলে এসেছে পঞ্চাশ রান। সেই সঙ্গে দলীয় রান দেড়শ পার করেছে কিউইরা।২৬ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ১ উইকেটে ১৬০ রান।

ইয়াংয়ের ফিফটি, নিউ জিল্যান্ডের একশ
রাচিন রবীন্দ্রর বিদায়ের পরও চলছে নিউ জিল্যান্ডের ঝড়ো ব্যাটিং। উইকেট হারিয়েও তাদের রানরেট খুব একটা কমেনি। তাতে বড় অবদান রেখেছেন উইল ইয়াং। রানের গতি বাড়িয়ে ৫১ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেছেন এই ওপেনার। তাতে ম্যাচের সপ্তাদশ ওভারেই একশ স্পর্শ করেছে নিউ জিল‍্যান্ড।

১৯ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ১ উইকেটে ১১৫। ৫৪ বলে আট চারে ৫২ রানে খেলছেন ইয়াং। ২৭ বলে হেনরি নিকোলসের রান ১৬।

রাচীনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন হাসান
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দারুণ ব্যাটিং করছিলেন নিউ জিল্যান্দের দুই ওপেনার রাচীন ও লাথাম। দুজন মিলে দলকে এনে দিয়েছিলেন পঞ্চাশ পার করা সংগ্রহ। অবশেষে এই জুটি ভাঙলেন হাসান মাহমুদ। তাকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ক‍্যাচ দিয়ে ফিরলেন রাচিন রবীন্দ্র।

ওভারের প্রথম দুই বলে হাসানকে দুটি বাউন্ডারি মারেন উইল ইয়াং। স্ট্রাইক পেয়ে রাচিন ওড়ান ছক্কায়। এক বল পর এর পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় তিনি ধরা পড়েন ডিপ মিডউইকেটে। দুর্দান্ত এক ক্যাচে তাকে ফেরান রিশাদ হোসেন।ভাঙে ৬৬ বল স্থায়ী ৭৬ রানের জুটি। ৩৩ বলে এক ছক্কা ও সাত চারে ৪৫ রান করেন রাচিন।

১৪ ওভারে নিউ জিল‍্যান্ডের রান ১ উইকেটে ৮৭। ক্রিজে ইয়াংয়ের সঙ্গী হেনরি নিকোলস।

নিউ জিল্যান্ডের দারুণ শুরু
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেছে নিউ জিল্যান্ড। দুই ওপেনার রাচীন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং মিলে ঝড়ো শুরু এনে দিয়েছেন দলকে। দুজন মিলে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে ৯ ওভারেই পার করে ফেলছেন পঞ্চাশ রানের ঘর। রবীন্দ্র ৩১ ও ইয়াং ২০ রানে অপরাজিত আছেন।

প্রথম ৯ ওভারে বাউন্ডারি এসেছে সাতটি, এর পাঁচটি মেরেছে রাচিন। ২৫ বলে তিনি খেলছেন ৩১ রানে। ২৯ বলে ইয়াংয়ের রান ২০।

৯ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৫২ রান।\

বাংলাদেশ ২৯২, সৌম্য ১৬৯

লিটন দাসের ১৭৬ রানের রেকর্ডে চোখ রাঙানি দিচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। যা ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। সৌম্য পারেননি লিটনকে টপকে যেতে। ৭ রান আগে থেমেছেন ১৬৯ রানে।

তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ভর করে নেলসনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৯১ রান করেছে। যা নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান এবং সব মিলিয়ে দ্বিতীয়। ২০১৩ সালে ফতুল্লায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৯ রান করে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছিল। 

ঝলমলে সৌম্য, দুর্দান্ত সৌম্য

২০১৫, ২০১৮ এবং ২০১৩। প্রথম সেঞ্চুরি থেকে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে তিন বছরের ব্যবধান। দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় পাঁচ বছর। সহজাত স্ট্রোকমেকার হিসেবে যার পরিচিত তার ক্যারিয়ারের এমন চিত্র বড্ড বেমানান। নিজের সামর্থ্যের প্রতি সুবিচার না করলে যা হয়। সৌম্য সরকার তেমন কিছুই করেছেন। 

কোথাও রান না করে জাতীয় দলে ফিরে দিশা খুঁজে না পাওয়া সৌম্য আজ ঝলমলে হয়ে উঠলেন। নেলসনে চার ছক্কার ফুল ফুটিয়ে পেলেন সেঞ্চুরির সুবাতাস। ওয়ানডেতে যা তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। শুধু তাই নয়, সেঞ্চুরির পর হাল না ছেড়ে করেছেন ১৬৯ রান। লিটনের ১৭৫ রানের ইনিংসে চোখ রাঙানি দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত থেমে যান ১৬৯ রানে। ১৫১ বলে ২২ চার ও ২ ছক্কায় সৌম্য ইনিংসটি সাজিয়েছেন। ১১১.৯২ স্ট্রাইক রেটে গোছানো ইনিংসটি দিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলেন সৌম্য। এবার কতদূর টেনে নিতে পারেন ‘রোলার কোস্টার’ ক্যারিয়ার সেটাই দেখার। 

টেন্ডুলকারকে ছাপিয়ে সৌম্য

এশিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নিজের করে নিলেন সৌম্য সরকার। নেলসনে বুধবার সৌম্য ১৬৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। যা ওয়ানডেতে যে কোনো এশিয়ান ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ ছিল শচীন টেন্ডুলকারের। ২০০৯ সালে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ১৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন শচীন। 

দেড়শ ছাড়িয়ে সৌম্য, বড় পুঁজির পথে বাংলাদেশ

১১৬ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছানো সৌম্য পরের ৫০ রান তুলতে খেলেছেন ২৮ বল। বাউন্ডারির ফোয়ারা ছুটিয়ে দেড়শ ছাড়িয়েছে তার রান। তৃতীয় বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডেতে দেড়শ বা তার বেশি রানের কীর্তি গড়লেন বাঁহাতি ওপেনার। এর আগে তামিম ইকবাল ও লিটস দাস ওয়ানডেতে দেড়শ রান ছাড়িয়েছিলেন। 

সৌম্যকে সঙ্গ দিয়ে আউট মিরাজ

সৌম্যর সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অভিষিক্ত আধিত্যর বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন মিরাজ। ২৬ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। সৌম্যর সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৬১ রান যোগ করেন করেন মিরাজ।

অন্যদিকে সেঞ্চুরির পর সৌম্য সরকার ছুটছেন। বাউন্ডারিতে দ্রুত রান তুলছেন। স্ট্রাইক রেট একশর ওপরে রেখে দলের রান বড় করছেন। এরই মধ্যে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ১৪১ রানে আছেন অপরাজিত। ২০১৫ সালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১২৮ রানের অপরাজিত ছিলেন। 

পাঁচ বছর পর সৌম্যর সেঞ্চুরি

২০১৮ সালের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে সেঞ্চুরি পেলেন সৌম্য সরকার। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আজ নেলসনে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ১১৬ বলে ১৩ চারে তিন অঙ্কের মাইলফলকে পৌঁছান সৌম্য। প্রবল সমালোচনা এবং আজকের ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় সৌম্যর সেঞ্চুরি অনন্য এক ইনিংস। 

২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ সৌম্য সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর ২৬ ইনিংস খেললেও কোনো সেঞ্চুরি ছিল না তার ব্যাটে। অফফর্ম, দল থেকে বাদ পড়া, আবার ফেরা…কত কিছু হয়েছে তার জীবনে। কিন্তু রান পাচ্ছিলেন না এ ব্যাটসম্যান। শেষ দুই ইনিংসেই রানের খাতা খুলতে পারেননি। আজ সেখান থেকে শুরু করেই পেলেন সেঞ্চুরি।    

নিজের ফেরার এই ইনিংসটি কতটা লম্বা করতে পারেন সেটাই দেখার। 

প্রসঙ্গত, ষোলো ম্যাচ পর বাংলাদেশের কোনো ওপেনার ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পেলেন। সবশেষ মিরাজ লাহোরে সেঞ্চুরি করেছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। 

নার্ভাস নাইন্টিজে নড়বড়ে সৌম্য

রান পেতে ভুগছেন সৌম্য। নার্ভাস নাইন্টিজে ঢুকে খোলসে আটকে গেছেন। রান না আসায় বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে শট খেলতে গিয়ে জীবন পেলেন। পেসার উইল ও’রউকের ফুলার লেন্থ বল মিড অন দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু টাইমিং গড়বড় করেন। ক্যাচ ওঠে পয়েন্টে। সেখানে উইল ইয়ং বল হাতে জমিয়েও ফেলে দেন। ৯২ রানে দ্বিতীয় জীবন পেলেন সৌম্য। এর আগে ফিফটির পরপরই তার ক্যাচ ছাড়েন রাচীন রবিন্দ্র। 

বাজে শটে মুশফিক আউট

প্রথম স্পেলে দুই উইকেট পাওয়া পেসার ডাফি দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দ্বিতীয় ওভারে পেলেন সাফল্য। বিপদজ্জনক হয়ে ওঠা সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট ভাঙেন তিনি। দুজন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১০৮ বলে ৯১ রান যোগ করেছিলেন। 

তার লেন্থ বল খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিক। ৫৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করে মুশফিক ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। বাংলাদেশ ১৭১ রানে হারাল পঞ্চম উইকেট।   

সৌম্য-মুশফিক জুটির পঞ্চাশ

দলের হাল ধরেছেন সৌম্য ও মুশফিক। পঞ্চম উইকেট জুটিতে এরই মধ্যে তারা তুলে নিয়েছেন পঞ্চাশ রান। ৬৪ বলে জুটির পঞ্চাশ রান পেয়েছেন তারা। যেখানে সৌম্যর অবদান ৩১, মুশফিকের ২০। ৮০ রানে তাওহীদ হৃদয় রান আউট হলে ক্রিজে আসেন মুশফিক। আগে থেকেই ছিলেন সৌম্য। 

বাংলাদেশের ‘একশ’

১১.৫ ওভারে দলীয় পঞ্চাশ রান পাওয়া বাংলাদেশ একশ তুলেছে ২২.৩ ওভারে। 

সাড়ে চার বছর পর সৌম্যর ফিফটি

লম্বা সময় পর ওয়ানডেতে ফিফটির দেখা পেলেন সৌম্য সরকার। তাকে দলে রাখা নিয়ে প্রবল সমালোচনা হচ্ছিল। শেষ দুই ওয়ানডেতে রানের খাতা খুলতে না পারায় আরেকটি সুযোগ হবে কিনা তা নিয়েও চলছিল আলোচনা। টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রেখেছিলেন। সৌম্য সেই আস্থার প্রতিদান দিলেন দারুণ এক ফিফটিতে। 

নেলসনে বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যেখানে আসা যাওয়ার মিছিলে সেখানে সৌম্য দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে তুলে নিলেন ফিফটি। ২০১৯ সালের পর এটি তার প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। এর মাঝে ৭টি ওয়ানডে ইনিংস খেলেছেন তিনি। ৫৮ বলে ৯ চারে পঞ্চাশ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন সৌম্য। ফিফটি রানের ইনিংসটি সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার। 

এর মধ্যে একবার ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছেন। একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন। কভারে তার ক্যাচ ছাড়েন রাচীন রাবীন্দ্র। ওই ওভারে তার এলবিডব্লিউর আবদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  

থেমে গেল সৌম্য-তাওহীদের লড়াই

শান্ত ও লিটনের উইকেট দ্রুত সময়ে হারানোর পর ব্যাকফুটে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে সৌম্য ও তাওহীদের ৩৬ রানের জুটি আশা দেখাচ্ছিল। কিন্তু রান আউটে ভাঙল তাদের জুটি।  থেমে গেল তাদের লড়াই। 

পেসার ক্লার্কসনের বল ড্রাইভ করেছিলেন সৌম্য। বোলারের পা ছুঁয়ে বল সরাসরি আঘাত করে স্টাম্পে। তখন উইকেটের বাইরে ছিলেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা তাওহীদ। নিজের ভুলেই রান আউট হয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। ১৬ বলে ১২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনি। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। 

বাংলাদেশের ‘৫০’

১১.৫ ওভারে দলীয় পঞ্চাশ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। পেসার ডাফির বলে স্কয়ার লেগে বল পাঠিয়ে তাওহীদ এক রান নিলে পঞ্চাশে পৌঁছায় সফরকারীদের রান। 

পাওয়ার প্লে’ নিউ জিল্যান্ডের

৩ উইকেট তুলে প্রথম পাওয়ার প্লে’ নিজেদের করে নিল নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশ প্রথম দশ ওভারে রান তুলেছে ৪৪। প্রত্যাশিত রান পেলেও একাধিক উইকেট হারানোয় ব্যাকফুটে সফরকারীরা। 

উইকেট উপহার দিয়ে এলেন শান্ত-লিটন

শুরুতে এনামুলের উইকেট হারানোর পরও সৌম্য ও নাজমুল হোসেন শান্ত আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করছিলেন। বাউন্ডারিতে রান পাচ্ছিলেন। কিন্তু হুট করেই পথ হারাল বাংলাদেশ। একটি নয়, বাংলাদেশ উইকেট হারাল দুটি। অধিনায়ক শান্ত ও চারে নামা লিটন দাস উইকেট উপহার দিয়ে এলেন স্বাগতিক দলকে। আলগা শটে দুজনই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। 

পেসার ডাফির বল হালকা বেশি বাউন্স করায় তালগোল পাকানো শট খেলেন শান্ত। লেন্থ বলে ফ্লিক খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু বল খানিকটা বেশি লাফ দেওয়ায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পুরোপুরি শট খেলতে পারেননি। বল তার ব্যাটের ছোঁয়া পেয়ে কভারে নিকোলস হাতে জমা পড়ে। ৯ বলে ৬ রানে শান্ত আউট হন। 

পেসার উইল ও’রউকে দারুণ পুল শটে বাউন্ডারির খাতা খোলা লিটন পরের বলে কভারে ক্যাচ দেন। ড্রাইভ করার বলে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে আউট ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১১ বলে ৬ রানে থেমে যায় লিটনের ইনিংস। 

দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। 

এনামুলের বিদায়, আশা দেখাচ্ছেন সৌম্য

ইনিংস বড় করতে পারলেন না এনামুল হক বিজয়। নিউ জিল্যান্ডের পেসারদের দারুণ সুইং বোলিংয়ে শুরুতে আত্মসমর্পণ করলেন আলগা শটে। পেসার মিলনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে এনামুল ক্যাচ দেন লাথামের হাতে। ১২ বলে ২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন প্রথম ওয়ানডেতে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করা এনামুল। 

আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার আশা দেখাচ্ছেন আজ। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত ২৩ বলে তুলেছেন ২৬ রান। পেসার উইল ও’রউকে উইকেটে স্বাগত জানিয়েছেন ৩ বাউন্ডারিতে। দৃষ্টিনন্দন তিন চারে সৌম্যকে দেখা গেছে পুরো রূপে।  

রানের খাতা খুললেন সৌম্য

টানা দুই শূন্যর পর রানের খাতা খুললেন সৌম্য সরকার। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে, অ্যাডাম মিলনের প্যাডের ওপরের বল ফ্লিক করে চার মেরেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সর্বশেষ ৩ ইনিংসে সৌম্যর ব্যাটে প্রথম রান। ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হন সৌম্য। এর আগে ঢাকায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তার খেলা শেষ ওয়ানডেতেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। একটু পেছনে গেলে দেখা মিলবে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চের পর ওয়ানডেতে প্রথম রান করেছেন সৌম্য। এরপর লম্বা সময় দলের বাইরে ছিলেন। ফিরে এসে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। পরের দুটি ওয়ানডেতেই ডাক।  

দুই লেগ স্পিনারের অভিষেক

বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ড দলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পরিবর্তন এসেছে। দুই দলে অভিষেক হয়েছে দুই তরুণ লেগ স্পিনারের। বাংলাদেশের রিশাদ হোসেনের, নিউ জিল্যান্ডের আধিত্য অশোকের। আফিফের পরিবর্তে রিশাদ সুযোগ পেয়েছেন। ইশ শোধীকে বিশ্রাম দিয়ে নেওয়া হয়েছে আধিত্যকে। 

নিউ জিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝকঝকে ৮৭ রান ও বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের মন জয় করে নিয়েছিলেন রিশাদ। এর আগে মাত্র ৩টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন রিশাদ। ৩ ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন কেবল ৫টি। ২১ বছর বয়সী আধিত্য এদিক থেকে একটু এগিয়ে। ২১ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ২৬ উইকেট পেয়েছেন। দুজনই এর আগে জাতীয় দলের হয়ে একটি করে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। 

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, রিশাদের অভিষেক

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথাম টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। টস হেরেও অবশ্য অখুশি নন শান্ত। নেলসনে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় ম্যাচটি শুরু হবে। 

পরিবর্তন

বাংলাদেশের একাদশে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। আফিফ হোসেনের পরিবর্তে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশের ১৪৮তম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হলো রিশাদের। প্রস্তুতি ম্যাচে ৩ উইকেট ও ৮৭ রানের ইনিংস খেলে টিম ম্যানেজমেন্টের মন জয় করেছিলেন রিশাদ। নিউ জিল্যান্ড দলে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। লেগ স্পিনার ইশ শোধীর পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ লেগ স্পিনার আধিত্য অশোক। 

বাংলাদেশ একাদশ

নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকার, হাসান মাহমুদ, রিশাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম। 

নিউ জিল্যান্ড একাদশ

উইল ইয়ং, রাচীন রাবিন্দ্র, হেনরি নিকোলস, টম লাথাম (অধিানয়ক), টম ব্লান্ডেল, মার্ক চ্যাম্পম্যান, জস ক্লার্কসন, অ্যাডাম মিলনে, আধিত্য অশোক, জ্যাকব ডাফি, উইল ও’রউক।

সৌম্যর শেষ সুযোগ?

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় নমুনাই হয়ে আছে সৌম্য সরকার। কোথাও পারফর্ম না করেই নিউ জিল্যান্ড সফরে সুযোগ পেয়ে যাওয়া সৌম্য যেন দলের অসহায়ত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন আরও। সীমিত ওভারে দুই সংস্করণ মিলিয়ে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪ ইনিংসে ৩ বারই আউট হয়েছেন শূন্য রানে।  বিকল্প না থাকাতেই যে তাঁকে নিয়ে যেতে হয়। তার সমস্যা কোথায় অবশ্য জানা নেই খোদ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেরও। সৌম্য প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘গত পাঁচ ম্যাচ? আমি জানি না। আমি তাকে এবার কেবল এক ম্যাচ দেখলাম। আমি জানি না, তার কী সমস্যা। সে তো ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করছিল।’

সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের

ডানেডিনে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় ৪৪ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে। সিরিজে টিকে থাকতে আজ জয়ের বিকল্প নেই। সেই কাজটা করতে পারবে তো নাজমুল হোসেন শান্তরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে পরাজয় নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা ১৭তম। তবে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের একটি জয় অবশ্য আছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেই জয় এসেছিল নেলসনে। আজ সেখানেই দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। 
 

ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়