শূন্য থেকে শতক, রেকর্ড সেঞ্চুরিতে সৌম্যর প্রত্যাবর্তন
ব্যাট হাতে ব্যর্থতার গল্প যার নিত্যদিনের সঙ্গী। বারবার নিজেই নিজের প্রত্যাবর্তনকে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ। যার কথা বলতে গিয়ে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, সমস্যা কোথায় জানেন না তিনি। চারদিকে সমালোচনা ঝড়, কাঁটাছেড়া। তবে দমে যাননি সৌম্য সরকার। সেসব এক পাশে রেখে একটু দেরিতে হলেও প্রত্যাবর্তনের গল্প এঁকেছেন ধ্রুপদী এক সেঞ্চুরিতে।
টানা দুই শূন্যর পর শুধু তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারই স্পর্শ করেননি সৌম্য। চার-ছয়ের ফুলঝুরিতে নেলসনে থেমেছেন অনেক রেকর্ডের মালা গলায় জড়িয়ে। ফিফটি, সেঞ্চুরি থেকে দেড়শ। এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে আসা-যাওয়ার মিছিল হলেও অন্য প্রান্তে সৌম্য ছুটছিলেন দুরন্ত গতিতে। তামিম ইকবালকে টপকে গেছেন, অল্পের জন্য লিটন দাসের রেকর্ড ভেঙে ক্যারিয়ার সেরা ব্যক্তিগত ইনিংসে নাম লেখাতে পারেননি।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সৌম্যর সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ ২৯১ রানে অলআউট হয়। সৌম্য সর্বোচ্চ ১৬৯ রান করেন। ১৫১ বলে ২২টি চার ও ২টি ছয়ে ইনিংসটি সাজানো ছিল। সৌম্য ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান আসে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে।
অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আশোকের বলে অফে ঠেলে দিয়ে ১১৬ বলে সৌম্য পেয়েছিলেন সেঞ্চুরির দেখা। পর ৬৯ আসে মাত্র ৩৫ বলে! সেঞ্চুরির পর যেন কিউই বোলারদের জন্য ভয়ংকর অবতারে হাজির হন এই ব্যাটার। ফিফটির পরপরই আর নব্বইয়ের ঘরে দফায় দফায় জীবন পেয়েছিলেন সৌম্য। সেটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়ে লম্বা এক ইনিংসে এই বাঁহাতি ব্যাটার কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে।
প্রায় ৫ বছর পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সৌম্য। এর মাঝে আসা-যাওয়ার মধ্যেই থেকেছেন, নিজের জাত চেনাতে পারেননি। এক সময় পড়ে যান আড়ালে, হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার পর প্রত্যাবর্তনের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু না করেও সৌম্যর ভাগ্য খুলে।
নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে এশিয়ার ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস এখন সৌম্যর। এতদিন ১৬৩ রানে এটি দখলে ছিল রেকর্ডের বরপুত্র শচীন টেন্ডুলকারের। বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১২৮ রান। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে কিউইদের দেশে সেঞ্চুরির দিন সৌম্য ছড়িয়ে যান সতীর্থদেরও। চলতে থাকুক সৌম্যর এই যাত্রা।
ঢাকা/রিয়াদ/বিজয়