ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

রিশাদের ভাগ্যেও কী লিখন-বিপ্লবের পরিণতি লেখা

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৮:৫৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
রিশাদের ভাগ্যেও কী লিখন-বিপ্লবের পরিণতি লেখা

প্রতি বছরই নতুন নতুন স্পিনার উঠে আসে, তাদের মাঝে খুব কম সংখ্যকই লেগ স্পিনার। জাতীয় দলের ইতিহাস বলছে, লেগ স্পিনে খুব একটা উৎসাহী নন টিম ম্যানেজম্যান্ট। সেটা বর্তমানের ম্যানেজম্যান্ট হোক কিংবা অতীতের। 

জাতীয় দল যখন লেগ স্পিনারের প্রতি উৎসাহী হবে না, তখন নতুন-নতুন লেগ স্পিনার উঠে আসার কল্পনাও বাস্তবসম্মত নয়। এর মাঝেও একজন কিংবা দুজন থাকেন, তারা কখনো আলোতে আসেন আবার হারিয়ে যান অবহেলায়, অযত্নে। 

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান সিরিজে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে নিয়ে চলছে আলোচনা। কিন্তু এই আলোচনার দৈর্ঘ্য কতটুকু হবে সেটাই দেখার বিষয়। রিশাদের ঘূর্ণি প্রশংসা পাচ্ছে প্রতিপক্ষ শিবির হতে শুরু করে সতীর্থ ও ম্যানেজম্যান্টের। 

আরো পড়ুন:

বিশেষ করে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের রানের চাকা থামিয়ে পাল্টা আক্রমণে চেপে ধরেন রিশাদ। তিন ওভারে রান দেন মাত্র ১০টি। রিশাদের এমন বোলিংয়ের কথা বলতে গিয়ে নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন জানান, লেগ স্পিনাররা কখনো রান দেবে, কখনো জেতাবে। 

‘গত ম্যাচে কিন্তু নিউ জিল্যান্ড উড়ন্ত সূচনা করেছিল। সেখানে রিশাদ আবার ম্যাচটা ফিরিয়ে এনেছে। লেগ স্পিনারের সৌন্দর্য্য এটাই। কোনো কোনো দিন অনেক রান দেবে। আবার কোনো দিন ম্যাচ জিতিয়ে দেবে’-শনিবার সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন বাশার।
 
কিউইদের বিপক্ষে দুই টি-টোয়েন্টিতে ৬ ওভার বোলিং করে ৩৪ রান দিয়েছেন রিশাদ। উইকেট নিয়েছেন ১টি। সব মিলিয়ে ওভার প্রতি ৬.২৫ রান দিয়ে রিশাদ উইকেট নিয়েছেন ৩টি। 

বাশার বলছেন লেগ স্পিনারদের উপর বিশ্বাস রাখার কথা, তাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধরার কথা। এর আগে জুবায়ের হোসেন লিখন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবরা এসে হারিয়ে গেছেন, রিশাদের ভাগ্যে কি এমন কিছুই লেখা আছে? 

লিখন সব সংস্করণ মিলিয়ে খেলেছেন ১০ ম্যাচ। উইকেটে নিয়েছেন ২২টি। সবশেষ তাকে জাতীয় দলে দেখা যায় ২০১৫ সালে। আর বিপ্লব ১০ টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ১২ উইকেট। সবশেষ খেলেন ২০২১ সালে। লিখন আগেই চলে গেছেন পর্দার আড়ালে। তার মতো পরিণতি ঘটে বিপ্লবেরও। 

লিখন-বিপ্লবকে নিয়ে টিম ম্যানেজম্যান্ট ধৈর্য ধরতে না পারলেও রিশাদকে নিয়ে কি পারবে? সেই প্রসঙ্গে না গেলেও বাশার বলছেন, ধৈর্য ধরার কথাই, ‘পরের (তৃতীয় টি-টোয়েন্টি) ম্যাচে যদি রিশাদ ভালো নাও করে, তাও কিন্তু আমি হতাশ হবো না। আমার মনে হয়, সবাই যদি রিশাদের প্রতি এই ধৈর্য্যটা দেখাতে পারি, তাহলে কিন্তু রিশাদ ভালো করতে পারবে।’

‘লেগ স্পিনারদের ক্ষেত্রে এই ধৈর্য্যটা আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখাতে পারি না। রিশাদও খুব যে খেলার সুযোগ পায়, তা কিন্তু নয়। তবে আপনারাও দেখেছেন, সুযোগ পেলে সে যে কিছু করে দেখাতে পারে। আমাদের বাঁহাতি স্পিনার, অফ স্পিনার যারা আছে, তারা খুব নির্ভরযোগ্য। তবে লেগ স্পিনাররা অনেক সময় খেলাটা বদলে দেয়। তো ধৈর্য্য ধরাটা খুব জরুরি’-আরও যোগ করেন বাশার। 

চলমান বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ওয়ানডেতে এক ম্যাচে লেগ স্পিনার খেলাতে হবে, এমন নিয়ম জুড়ে দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। ক্রিকেট বোর্ড যে লেগ স্পিনার খুঁজছে এই সিদ্ধান্তেই প্রতীয়মান হয়। তবে সমস্যা হলো, খুঁজে পাওয়ার পরের প্রক্রিয়া তথা ধৈর্য না ধরা।

বাশার বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই একজন লেগ স্পিনারের খোঁজ করছি। অন্যান্য টুর্নামেন্টে আমরা একাদশে অতখানি ভূমিকা রাখতে পারি না। তবে বিসিবির টুর্নামেন্টে আমাদের কিছুটা ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকে। আমি বিশ্বাস করি, শুধু অনুশীলন করে লেগ স্পিনার তৈরি করা খুব মুশকিল। লেগ স্পিনার তৈরি করতে হলে ম্যাচ খেলাতে হবে।’

লেগ স্পিনাররা যখন ভালো করেন তাদের নিয়ে প্রশংসার ফুলঝুরি ছোটে চতুর্দিকে। আলোয় এসে আবার হারিয়ে যেতেও দেরি হয় না। রিশাদের ভাগ্যে কী আছে সেটা বলে দেবে সময়।

ঢাকা/রিয়াদ/বিজয়

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়