জামাল-হামজার অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের দিন
সাদা পোশাকে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল দর্শকরা। অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদেরও হতাশ করেননি ওয়ার্নার। ৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন এই ওপেনার। তার আগে অবশ্য দুই পাকিস্তানি আমের জামাল ও মির হামজার অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের স্বাক্ষী হয়েছিল সিডনির দর্শকরা।
লেজের সারির দুই ব্যাটসম্যানের কল্যাণে সিডনি টেস্টে প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রানে ইনিংস শেষ করেছে শান মাসুদের দল। জবাব দিতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার অপরাজিত আছেন ৬ রানে। অন্যপ্রান্তে রানের খাতাই খুলতে পারেননি উসমান খাজা।
ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ। তবে তার সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করেন দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও সায়েম আইয়ুব। স্কোর কার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ফিরে যান দুই ওপেনার। পাকিস্তানের পঞ্চম ওপেনার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন সায়েম।
এরপর শান মাসুদ ও বাবর আজম জুটি বাঁধলে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। তবে এই দুজনের আউটের পর ১০০ রান তোলার আগেই পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। ৩০তম ওভারে দলকে ৯৬ রানে রেখে বিদায় নেন অধিনায়ক মাসুদ। এরপর আগা সালমানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
রিজওয়ান ও আগা মিলে ৯৪ রানের জুটি গড়ে প্রথম প্রতিরোধ গড়েন। দারুণ খেলতে থাকা রিজওয়ান সেঞ্চুরির দিকেই আগাচ্ছিলেন। তবে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার থেকে ১২ রান দূরে থাকতে আউট হন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ১৯০ রানের মাথায় রিজওয়ান আউট হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং।
দেখতে না দেখতেই ৬ উইকেটে ১৯০ থেকে ৯ উইকেটে ২২৭ হয়ে যায় পাকিস্তান। পরের গল্পটা আমের জামালের, যেখানে তার যোগ্য সঙ্গী মির হামজা। অস্ট্রেলীয়দের হতাশ করে আর ওয়ার্নার ভক্তদের অপেক্ষা বাড়িয়ে কী ব্যাটিংটাই না করলেন দুজন। যা অনেকদিন চোখে লেগে থাকার মতো।
জামাল নেমেছিলেন নয় নম্বরে। তার কাছ থেকে বেশি কিছু আশাও করেনি পাকিস্তান। কিন্তু জামাল ব্যাট করেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের মতোই। মাত্রই তৃতীয় টেস্ট খেলা এই পেসার বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তুলে নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ফিফটি। ৯৭ বলে ৮২ রান করা জামাল মেরেছেন ৪টি ছক্কাও।
অন্য পাশে হামজা দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন জামালকে। প্রথম ২১ বলে কোনো রান না নেওয়া হামজা চার মেরেই খুলেছেন রানের খাতা। জামালকে নিয়ে শেষ জুটিতে ৮৬ রান যোগ করেন তিনি। হামজা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৩ বলে ৭ রান করে। টেস্টে পাকিস্তানের হয়ে শেষ উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি আছে মাত্র ছয়টি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫ উইকেট পেয়েছেন প্যাট কামিন্স। এ নিয়ে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। এর মধ্যে তার ফাইফারেই মেলবোর্নে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
ঢাকা/বিজয়