অভিষেকেই ফাইফার ‘দেহরক্ষী’ শামারের, লিড অস্ট্রেলিয়ার
ক্রিকেটে আসার আগে শামার জোসেফের পরিচয় ছিল নাইটগার্ড ও সিকিউরিটি গার্ড। যাকে সহজ ভাষায় দেহরক্ষী বলা হয়। সেই তিনিই কিনা ইতিহাস গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার ‘কসাইখানা’ খ্যাত অ্যাডিলেডের সবুজ ঘাসে। টেস্ট অভিষেকেই ফাইফার নিয়ে পথচলা স্মরণীয় করে রাখলেন শামার। শামারের এমন দিনে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস থেমেছে ২৯৩ রানে, লিড ৯৫ রানের।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে ক্যারিবীয়রা। ৯৫ রানে পিছিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নেমে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৭ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়েছে। ক্রিজে আছেন ২৬ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন ম্যাকেঞ্জি ও ৭ রানে ব্যাট করছেন ক্রেভস।
শামার বল হাতে নেন অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের নবম ওভারে। আর প্রথম বলেই গড়ে ফেলেন ইতিহাস। ১৩৬.৭ কিলোমিটার গতিতে স্টিভ স্মিথকে বন্দি করান জাস্টিন গ্রিভসের হাতে। তাতে ইতিহাসের ২৩তম বোলার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন শামার।
অভিষেকের প্রথম বলে উইকেট নিয়ে দিনশেষে সামার বলেছিলেন, ‘স্টিভ স্মিথের উইকেট, আমার অনেক প্রিয় একজন ক্রিকেটার, (প্রথম বলেই) তার উইকেট...আমার সারা জীবনের জন্য স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমি আসলে এই ছবিটা নিজের ঘরে বাঁধাই করে রাখতে চাই।’ পরের গল্পটাই হয়তো বাঁধাই করে রাখতে চাইবেন এই তরুণ।
প্রথম দিনে স্মিথ-লাবুশেনের পর দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ক্যামেরন গ্রিনকে ফেরান শামার। এরপর মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়নকে। তাতেই দশম ক্যারিবীয় ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে নিলেন পাঁচ উইকেট। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৮৮তম অভিষিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন শামার।
প্রথম দিন ২ উইকেটে ৫৯ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় ওভারেই গ্রিনকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ক্রিজে আসেন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়াকে লিড এনে দেওয়ার কাজটি করেছেন এই বাঁহাতিই। তার ১৩৪ বলে ১১৯ রান ও উসমান খাজার ৪৫ রানের ভর করে লিড নেয় অজিরা।
এর আগে প্রথম ইনিংসে প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজলেউডের তোপে ১৮৮ রানেই গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। দলের পক্ষে একমাত্র ফিফটি এসেছে কার্ক ম্যাকেঞ্জির ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন শামার।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন ক্যারিবীয় দলনেতা ব্রাথওয়েট। ব্যাটিং করতে নেমে অজি পেসারদের গতির কোনো জবাব ছিলো না ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। প্রথম সেশনে মাত্র ৬৭ রান তুলতেই নেই তিন উইকেট।
দ্বিতীয় সেশনেও সুবিধা করতে পারেনি উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। এই সেশনে ১১০ রান তোলে উইন্ডিজ। বিনিময়ে খোয়াতে হয় পাঁচ উইকেট। দলের নয় ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন ২০ রানের কোটা পার হওয়ার আগে। এর মধ্যে চারজনের রানের সংখ্যা আবার মোবাইলের ডিজিটের ঘরে আটকে ছিলো!
আর দিনের শেষ সেশনের শুরুতেই বাকি উইকেটটি হারালে ১৮৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯৪ বলে ৭ চারের মারে ৫০ রান করেন ম্যাকেঞ্জি। শামার ৩৬ রান করেন ৪১ বল খেলে। তার ইনিংসে ছিলো ৩ চার ও ১ ছয়ের মার।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে হ্যাজেলউড ও কামিন্স ৪টি করে এবং মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়ন ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৬২.১ ওভারে ১৮৮ (ম্যাকেঞ্জি ৫০, শামার জোসেফ ৩৬)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৮১.১ ওভারে ২৮৩ (হেড ১১৯, খাজা ৪৫)
ঢাকা/বিজয়