ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

পায়ে ঠেলে সেমিফাইনালের সুযোগ হাতছাড়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২১:৪৯, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
পায়ে ঠেলে সেমিফাইনালের সুযোগ হাতছাড়া

লক্ষ্য ছিল একেবারেই নাগালে। কঠিন সমীকরণ সহজ হয়ে যুব বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছিল। পাকিস্তানকে অল্প রানে আটকে বোলাররা জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন প্রথম ইনিংসেই। বিশ্বকাপে বারবার ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া বাংলাদেশ আরেকবার ডুবল নিজেদের দুর্বল জায়গাতেই। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশ।  

বোলারদের গড়ে দেওয়া জয়ের সহজ মঞ্চে হতশ্রী ব্যাটিংয়ে পায়ে ঠেলে সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ হাতছাড়া করলেন ব্যাটসম্যানরা। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল পাকিস্তানের যুবাদের ৪০.৪ ওভারে অলআউট করে ১৫৫ রানে। ১৫৬ রানের লক্ষ্যটা ৩৮.১ ওভারের মধ্যে ছুঁতে পারলেই পাকিস্তানকে বিদায় করে সেমিফাইনালে উঠে যেত বাংলাদেশ। ৩৮.১ ওভারে জয় তো দূরের কথা, ১৫০ রানে অলআউট হয়ে ৫ রানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। 

২০২০ সালে এই দক্ষিণ আফ্রিকাতে যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। চার বছর পর আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ আয়োজন হওয়ায় বড় আশা দেখেছিল যুবারা। সঙ্গে কিছুদিন আগে এশিয়া কাপ জেতায় স্বপ্ন আরো বড় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, সেমিফাইনালে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশের মিশন শেষ হলো সুপার সিক্সে। 

আরো পড়ুন:

ভারত ও পাকিস্তান এই গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। অন্য গ্রুপ থেকে শেষ চারে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

সেমিফাইনালে চোখ রেখে বাংলাদেশ জবাব দিতে নেমেছিল, তা ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল। আক্রমণাত্মক ওপেনার জিসান আলাম শুরুতে ৪ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপ কমিয়ে নেন। আরেক ওপেনার শিবলি রয়ে-সয়ে খেলছিলেন। কিন্তু, নতুন বলে বাংলাদেশকে ঠিকই কঠিন চ্যালেঞ্জ দেন পাকিস্তানের পেসাররা। বিশেষ করে, পেসার উবাইদ শাহ। প্রথম স্পেলে পরপর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান ডানহাতি পেসার। পরের স্পেলে ফিরে নেন আহরার আমিন ও শেখ পারভেজের উইকেট। 

মাঝে আলি রেজা তুলে নেন আরিফুল ইসলাম ও চৌধুরী রিজওয়ানের উইকেট। ৮৩ রানে নেই বাংলাদেশের ৬ উইকেট। সেমিফাইনালের সম্ভাবনা তখন ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। কিন্তু, দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে শিহাব জেমস ও রাব্বী কিছুটা আশা দেখান। ৪০ রানের জুটিতে মনে হচ্ছিল লক্ষ্যটা ছুঁয়ে ফেলবেন তারা। 

কিন্তু, আবারও পাকিস্তানের ত্রাতা হয়ে আসেন উবাইদ। নিজের শেষ ওভারে শিহাব জেমসকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। আগের ওভারে তার হাতে জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে না পেরে শিহাব আউট হন ২৬ রানে। স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হতে বাংলাদেশের শেষ ভরসা অধিনায়ক রাব্বী ১৩ রানে আউট হন। 

শেষ উইকেটে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন রোহনাত ও মারুফ। ২৩ রানের জুটিতে শেষদিকে লড়াই করেছিলেন তারা। পাকিস্তানের দীর্ঘদেহী পেসার জিসানের বাউন্সার উইকেটে টেনে মারুফ বোল্ড হলে ৫ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ।

এর আগে বেনোনিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বী টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। উইকেটে তাজা ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও বাংলাদেশের দুই পেসার ইকবাল হোসেন ইমন ও মারুফ মৃধা উইকেট এনে দিতে পারেননি। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটা খারাপ ছিল না। শামিল হুসেন ও শাহজাইব খানের উদ্বোধনী জুটি ৮.৩ ওভারেই তুলে নেয় ৩৭ রান। নবম ওভারে পেসার রোহনাত এ জুটি ভেঙে প্রথম সাফল্যের স্বাদ দেন। এক ওভার পর তার দ্বিতীয় শিকার আজান আওয়াইস। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনে নামা আজান। পাকিস্তানি অধিনায়ক সাদ বেগকে পয়েন্ট থেকে দারুণ এক সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করেন আরিফুল। 

তখন পাকিস্তানের রান ৩ উইকেটে ৬৬। সেখান থেকে ২৩ রান যোগ করতে আরো ৩ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার শাহজাইব অফস্পিনার শেখ পারভেজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। রোহনাত নিজের তৃতীয় উইকেট পান আহমেদ হাসানকে ফিরিয়ে। পারভেজ এর পর ফিরিয়ে দেন হারুন আরশাদকে। সেখান থেকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের জুটিটা আসে। আরাফাত মিনহাস ও আলী আসফান্দ ৪৩ রান করেন। 

৩৬তম ওভারে পারভেজ এ জুটি ভাঙলে বাকিটা পথ পাড়ি দিতে পারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ৫৬ বল বাকি রেখেই। সর্বোচ্চ ৩৪ রান আসে সাতে নামা আরাফাতের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন পারভেজ ও রোহানাত। ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক উবাইদ। 

সেমিফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ভারত খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। 

ঢাকা/ইয়াসিন/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়