ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

মিরাজ-কায়েসের এমকেএস এখন বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
মিরাজ-কায়েসের এমকেএস এখন বাংলাদেশের

সাকিব আল হাসানের জন্য বিশেষ একটি ব্যাট রেখে দিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। অনুষ্ঠান শেষে ডিনারের খোঁজে থাকা সাকিবকে সেই ব্যাট তুলে দেন এমকেএসের প্রতিষ্ঠাতা ইমরুল। ব্যাট পেয়েই সাকিব শুরু করেন শ্যাডো। শেষের মতো অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল ঝলক। আকবর আলীসহ যুব বিশ্বকাপজয়ী একঝাঁক তরুণ ব্যাট নিয়ে করেন র‌্যাম্প শো।

তামিম ইকবাল আক্ষেপ করে বলছিলেন টাকা দিয়েও ভালোমানের ব্যাট না পাওয়ার কথা। শোনালেন প্রথম জীবনে ভাইয়ের মাধ্যমে সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে পাওয়া ব্যাট দিয়ে খেলার গল্প। দেশসেরা ওপেনার তামিমের মতো সাকিব আক্ষেপের গল্পে না গিয়ে বিভোর ছিলেন দেশি ব্র্যান্ডের ব্যাট নিয়ে গর্বের কথায়। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের স্বপ্ন বিদেশিদের হাতেও থাকবে মেইড ইন বাংলাদেশ ব্যাট।

তামিম-সাকিব ছাড়া মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের সঙ্গে আকবর আলী, শাহাদাত হোসেন দিপুসহ  সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ-ইমরুল কায়েসদের এমকেএস ব্যাটের স্বপ্ন যাত্রায়। গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে দেশি ক্রিকেটারদের হাত ধরে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত এমকেএস ব্যাটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন এমকেএসের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন।

‘ব্যাট ডক্টর’ খ্যাত হুসেইন মোহাম্মদ আফতাবের সঙ্গে মিলিট হয়ে এমকেএসের পদাচরণা শুরু হয়। ভারতীয় কোম্পানি থেকে ভালো ব্যাট না পাওয়ার জেদ ইমরুলকে ব্যাট কারখানার মালিক বানিয়ে দেয়। ইমরুলের এমন উদ্যোগ মিরাজের কানে যেতেই তাকে ফোন দিয়ে জানান, তিনিও থাকবেন। মিরাজ-কায়েস-শাহিন এই তিনজনের নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে ব্যাটের নামও (এমকেএস) পেয়ে যান তারা।

প্রতিষ্ঠাতা ইমরুলের স্বপ্ন শুধু দেশে আবদ্ধ নয়, ‘দুই-আড়াই বছরের পরিকল্পা আমরা বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছি। চেষ্টা করব যে এমকেএস ব্যাট ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে দিতে। সব ক্রিকেটারের ঘরে ঘরে এই ব্যাট থাকবে। এক সময় আমরা দেশের বাইরেও ব্যাটের জোগান দেব। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দেশের ভেতরে অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯, হাই পারফরম্যান্স, মেয়েদের দল, লিগে যারা খেলে এবং জাতীয় দল, সবার পাশে থাকার চেষ্টা করব আমরা এবং সেরা মানের ব্যাট ওদের দেওয়ার চেষ্টা করব।’

আক্ষেপ ঘুচিয়ে গর্বে বুক ফুলে উঠছে তামিমের, ‘আমি সত্যিই খুব গর্বিত যে অবশেষে বাংলাদেশের একটি কোম্পানির ব্যাট আসছে। ব্যাট এমন একটি জিনিস, আপনার কাছে যত টাকাই থাকুক, অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রিকেটার, তারা ভালো মানের ব্যাট পায় না। আমার মনে আছে, একটা সময় আমরা প্রতিপক্ষের ড্রেসিং রুমে গিয়ে বড় তারকাদের কাছে কাতর হয়ে ব্যাট চাইতাম। অনেক সময় ওরা মুখের ওপর না করে দিত।’

‘এমন নয় যে ওদের ব্যাট দেখে আমাদের লোভ হতো। আমরা চাইতাম কারণ ওই মানের ব্যাট পেতাম না। আমাদের আগের যুগেও হয়েছে, আমাদের সময়েও হয়েছে। এখনও অনেকে দিল্লিতে গিয়ে সেখান থেকে ড্রাইভ করে মিরাটে গিয়ে নিজের পছন্দমতো ব্যাট আনতে যায়। কিন্তু খুব ভালো ব্যবহার পায় না। সবদিক বিবেচনায় আমি খুবই খুশি ও গর্বিত যে আমাদের একটি কোম্পানি হচ্ছে।’

সাকিব মনে করেন বিদেশি ক্রিকেটাররা মাঠ মাতাবেন এমকেএসের ব্যাট দিয়ে, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ যে দেশে এরকম একটা ব্যাট প্রস্তুতকারী কোম্পানি হচ্ছে। আমাদের জন্য খুবই গর্বের। মিরাজ ও ইমরুলকে অনেক শুভ কামনা জানাচ্ছি। আশা করি এই ব্র্যান্ড শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও অনেক নাম করবে ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।’

ইংল্যান্ড থেকে আনা বিশেষ উইলো দিয়ে তৈরি হবে এমকেএস। শচীন টেন্ডুলকার-বিরাট কোহলিদের ব্যাট কাস্টমাইজড করা শাহীন বলেন, ‘অনেক বিদেশি ক্রিকেটারের ব্যাট নিয়ে কাজ করেছি আমি। সাচিন টেন্ডুলকার, ভিরাট কোহলিদের ব্যাট কাস্টমাইজ করার সময় মনে হতো, আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের যদি এই মানের ব্যাট দিতে পারতাম! আশা করি এমকেএস ব্যাট দিয়ে এই স্বপ্ন আমরা পূরণ করতে পারব।’

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গী হয়েছে এমকেএস। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজন দেশি ক্রিকেটার খেলছেন এমকেএস দিয়ে। ৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায় মিলবে এমকেএস ব্যাট। কেনা যাবে ঘরে বসেও।

রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়