ঢাকা     শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

এখনই খুশি নন সাইফউদ্দিন, অনুপ্রেরণায় মাহমুদউল্লাহ

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
এখনই খুশি নন সাইফউদ্দিন, অনুপ্রেরণায় মাহমুদউল্লাহ

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে দারুণ শুরুর পরও ১৯ ওভার শেষে ফরচুন বরিশালের রান ১৬৩! সেদিন দুর্বল প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ঢাকা হলেও উইকেট বিবেচনায় পর্যাপ্ত ছিল না। ক্রিজে তখন নতুন ব্যাটার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শরিফুল ইসলামকে শেষ পাঁচ বলে জোড়া ছয়-চারে নেন ২২ রান! এ দিন সাইফউদ্দিনের ছয় বলে ২৩ রানের ইনিংস বরিশালকে এনে দেয় লড়াকু পুঁজি। শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচে বরিশাল জেতে ২৭ রানের ব্যবধানে।

সাইফউদ্দিনের ২৩ রানের এই ক্যামিও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটি ম্যাচের ফলেই স্পষ্ট। কোমরের ইনজুরির কারণে লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকার পর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মাঠে ফেরেন। দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে সাইফউদ্দিনের দক্ষতা নজর কেড়েছে। প্রথম ম্যাচে নেমেই অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে। তিন ম্যাচ খেলে দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে অপরাজিত ছিলেন, আরেক ম্যাচে ব্যাটিং করেননি। বল হাতে নিয়েছেন ৭ উইকেট।

এমন প্রত্যাবর্তনের পরও সাইফউদ্দিন খুশি নন, নিজেকে প্রমাণ করার জন্য আরও সময় নিতে চান এই অলরাউন্ডার, ‘আসলে অনেক কিছু প্রমাণ করার বাকি আছে। একটা দুইটা ম্যাচ দেখে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নাই। আরও যদি সুযোগ পাই আরও বড় দলের সঙ্গে যদি করতে পারি তখন হয়ত বুঝবো কতটা উন্নতি হয়েছে।’

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন সাইফউদ্দিন। নিজের ব্যাটিংয়ে উন্নতির পেছনে পরিশ্রমের কথাই তুলে ধরেছেন, ‘সত্যি বলতে বিগত কয়েকমাস ধরে ব্যাটিং নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে কাজ করেছি। মাস্কোতে গিয়ে সালাহউদ্দিন স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি, মিরপুরে যখন ছিলাম কোচ বাবুল স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি, মেশিনে ব্যাটিং করেছি। হয়তবা ওইটার একটা কারণ হতে পারে। আমি চেষ্টা করেছি আমার সেরাটা দেয়ার। যেহেতু বোলিং করা নিষেধ ছিল তাই ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছি।’

চোটের কারণে গত বিপিএলে খেলতে পারেননি। এই চোট যেন নিত্যসঙ্গী। বিপিএলের আগে সবশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছেন ২০২৩ সালের মে’তে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। আর ২০২২ সালের অক্টোবরে খেলেছিলেন শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। মাঝে গিয়েছিলেন কাতারে। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসার পর চলছিল পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। বিপিএল দিয়ে ফেরার প্রত্যাশায় ছিলেন কিন্তু শুধু ব্যাটিংয়ের ছাড়পত্র পেয়েছিলেন বিসিবি মেডিকেল বিভাগ থেকে।

শুধু ব্যাটার হিসেবে নামেননি, মাঠে। ফিরেছেন ফুল ফিট হয়ে, ‘আমি আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করতেছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যেমন নিজের সেরাটা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চায় আমিও ওই চিন্তা ভাবনা নিয়েই মাঠে নেমেছি। যদিও আমি আমার সেরাটা দিতে পেরেছি কিনা জানি না। তবে চেষ্টা করছি আরও ভালো করতে নিজের সেরাটা দিয়ে দলকে সামনে নিয়ে যেতে।’

বিপিএলের শুরু থেকে মাঠে থাকতে পারলে শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলেও দেখা যেতে পারতো এই ক্রিকেটারকে। তবুও আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করছেন না, অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছেন সতীর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াইকে,  ‘কিছুদিন আগে আমি ইনজুরি থেকে উঠে এসেছি তাই হয়ত শ্রীলঙ্কা সিরিজে পরিকল্পনায় রাখে নাই। আমি আশাবাদী যদি আরও ভালো খেলি। যেহেতু শ্রীলঙ্কা সিরিজ মিস হয়েছে, সামনে বিশ্বকাপের আগে যে সিরিজ থাকবে সেখানে হয়ত বিবেচনা করবে। সেই লক্ষ্যে আমি আমার সেরাটা দিয়ে অনুশীলন করার চেষ্টা করব, নির্বাচকদের নজরে আসার চেষ্টা করবো।

‘রিয়াদ ভাইকে তো সবসময় আমরা চোখের সামনে দেখি। আমরা সতীর্থ, উনি কি কাজ করতেছেন বা বাইরের কোনো কিছুতে কান না দিয়ে উনি উনার প্রসেস অনুযায়ী নিজের কাজটা করতেছেন। তো এই জিনিসটা আমরা ফলো করি। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের উচিত বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে এসবে ফোকাস না করে মাঠে সেরা খেলাটা দিয়ে যাওয়া। যে কাজটা আমরা রিয়াদ ভাইকে দেখেছি বিশ্বকাপে নিজের সেরাটা দিয়েছে’ -আরও যোগ করেন সাইফউদ্দিন। 

রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়