আইপিএলের পর বিপিএলে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক!
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
আয়োজকরা একটা সময় দাবি করতো, আইপিএলের পরই বিপিএল। আয়োজন আপ টু মার্ক না হলেও, খেলার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এবং বিতর্কে ঘেরা থাকলেও আয়োজকদের দাবির কারণ ছিল ভিন্ন। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘বিদেশি খেলোয়াড়রা বিপিএল খেলতে মুখিয়ে থাকে।’
তার ওই কথার ভিত্তি থাকার বড় কারণ ছিল, পারিশ্রমিক। শুরুর দুই আসর বাদ দিলে বিপিএলের বাকি আট আসরে বিদেশি তারকার ক্রিকেটাররা উচ্চ মূল্যে বিপিএল খেলতে চলে আসতেন। পুরো মৌসুম না হলেও কয়েকটি ম্যাচের জন্য হলেও তাদের পাওয়া যেত ভালোভাবেই। সে কারণে বিপিএলে বাড়তি নজর ছিল।
শেষ কয়েক আসরে বিগ বাজেটের দল গড়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এদিক থেকে বেশ এগিয়ে। তাদের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও পারিশ্রমিকের বিষয়টি সামনে এনে দাবি করলেন, ‘আমি যতটকু বুঝি, আইপিএলের পরই আমরা মনে হয় সবচেয়ে ভালো পারিশ্রমিক দেই ক্রিকেটারদের। এখানে সবারই খেলার ইচ্ছা আছে।’
সালাউদ্দিনের এমন কথার ভিত্তিও আছে। গত কয়েক আসরে বিদেশি নামি-দামি ক্রিকেটারদের সঙ্গে ম্যাচ অনুযায়ী চুক্তি করছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। রংপুর রাইডার্স যেবার চ্যাম্পিয়ন হলো ২০১৯ সালে, সেবার ক্রিস গেইলকে ম্যাচ প্রতি ২৫ হাজার ডলার করে দিয়েছিল। একই পারিশ্রমিক ছিল ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। এছাড়া তারা এবি ডি ভিলিয়ার্সকেও উড়িয়ে এনেছিল পাঁচ ম্যাচের জন্য। শোনা যায় ডি ভিলিয়ার্স ২ লাখ ডলার পারিশ্রমিক নিয়েছিল।
এবারও রংপুর চ্যাম্পিয়ন হতে বিগ বাজেটের দল গড়েছে। বাবর আজমকে শুরুর দিকে এনে খেলাতে উচ্চমূল্য দিতে হয়েছে। এখন জিমি নিশাম, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস খেলছেন। চলে আসার কথা নিকোলাস পুরানের। পুরানের পারিশ্রমিকের অঙ্কটা ৩০ হাজারের কমে নয়।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও পিছিয়ে নেই। টি-টোয়েন্টির জগতের মহাতারকা আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিনদের পাশাপাশি মঈন আলী, জনসন চার্লস, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা নিয়মিত খেলছেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। এবার উইল জ্যাকসও এসেছিলেন। সরাসরি চুক্তিতে তারা আসায় তাদের ম্যাচপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ডলারের আশেপাশেই থাকে।
ফরচুন বরিশালের এবারের বিদেশি খেলোয়াড় সংগ্রহে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। ফখর জামান, মোহাম্মদ আমিরসহ একাধিক পাকিস্তানি ক্রিকেটারকে আগেভাগেই দলে নিয়েছিলেন তামিম। এছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো আরও কিছু তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু প্রায় একই সময়ে দুটি টুর্নামেন্ট চলায় খেলোয়াড়রাও সুযোগ বুঝে পারিশ্রমিক বাড়িয়ে নেয়।
এবারই যেমন বিপিএলের সঙ্গে প্রায় একই সময়ে চলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি ও দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টোয়েন্টি। এছাড়াও বিগ ব্যাশের শেষটুকু ও পিএসএলের শুরুর ভাগও পড়ে গেছে এই সময়টাতেই। এজন্য বিপিএলের জন্য আলাদা একটি সময় বের করার কথা বললেন কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিন, ‘এটা তো সবাই বোঝে (আরেকটু গুছিয়ে করা যায়)… যাদের বোঝার, তারা বোঝে না। আমার মনে হয়, তারাও যদি একটু বোঝে, তাহলে এটাও অনেক ভালো একটা টুর্নামেন্ট হতে পারে। একটা ভালো উইন্ডো পেলে বাংলাদেশে সবাই খেলতে আসবে।’
সঙ্গে টুর্নামেন্টকে ছোট করে আনার কথাও বললেন তিনি, ‘এত লম্বা সময় ধরে টুর্নামেন্ট হলে খুব সমস্যা। একটি টুর্নামেন্ট ৪৫ দিন ধরে হচ্ছে। ইচ্ছে করলেই এটাকে ছোট করা যায়। ধরুন একটা দল মোমেন্টাম পেয়েছে, সে পরের ম্যাচটি খেলছে ৯ দিন পরে, কেউ খেলছে ৬ দিন পরে… এতে আসলে একটা দলের নতুন করে শুরু করতে হয়। ইচ্ছা করলেই এটা সম্ভব (ছোট করা), একটু চিন্তাভাবনা করলে। এটা বুঝলে তো বোঝাই যায়, না বুঝলে কেউ বোঝাতে পারবে না।’
ইয়াসিন/আমিনুল