বাংলাদেশে এসে মিলার বললেন, ‘রেড ওয়াইন বয়সের সঙ্গে পরিপক্ক হয়’
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
লম্বা সময় পর ডেভিড মিলারের বাংলাদেশে ফেরা। ২০১৫ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সফরে আসেনি। তাই খেলার সুযোগ হয়নি মিলারেরও। বিপিএলের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার হার্ডহিটার ব্যাটসম্যানকে যুক্ত করেছে ফরচুন বরিশাল। যারা আগামীকাল এলিমিনেটর ম্যাচে নামবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে।
বিপিএলে এবার বিদেশী খেলোয়াড় আসছেন, খেলছেন, চলে যাচ্ছেন। তাই দলের ছন্দ ধরে রাখার ব্যাপারটি এবার নেই। মিলারকে শেষ মুহূর্তে নিয়ে এসে বরিশাল শক্তি বাড়ালেও এই দলটি সম্পর্কে তার খুব একটা জানা নেই। তবে তার দিনে তিনি কতটা ভয়ংকর তা তো সবারই জানা। পরিসংখ্যানও একই কথা বলছে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যারিয়ারও যেন নব যৌবনে ভরপুর হয়ে উঠেছে।
ত্রিশের পর মিলার যেন উড়ছেন দুই পাখা মেলে। তাই তো নিজের অভিজ্ঞতা, পারফরম্যান্স, বয়স এবং খেলার সামর্থ্য সবকিছুকে তিনি তুলনা করলেন রেড ওয়াইনের সঙ্গে। বলা হয়, ‘রেড ওয়াইন যতো পুরানো, স্বাদ ততো ভাল।’ মিলার সেই কথা বোঝাতে গিয়ে বললেন, ‘আমি ঠিক নিশ্চিত নই এখানে কেউ ড্রিংকস করেন কিনা। কিন্তু কথায় আছে, রেড ওয়াইন বয়সের সঙ্গে পরিপক্ক হয়। এজন্য আমি মনে করি, আপনার বয়স যতো বাড়ছে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও ততো বাড়ছে।’
‘পুরোনো ব্যর্থতা থেকে শিখতে পারছেন। অনেক ক্রিকেটারের মতো, আপনি কখনোই খেলাটা পুরোপুরি আয়ত্বে আনতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে ধারাবাহিক শিখতে হবে। যা একেক সময় আপনার কাজে আসবে। এজন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে সঙ্গে শেখার চেষ্টাও করে যেতে হবে।’ – আরও যোগ করেন মিলার।
লম্বা ফ্লাইটে জোহানেসবার্গ থেকে ঢাকায় আজ সকালেই পৌঁছান মিলার। হোটেলে কয়েক ঘণ্টার বিশ্রাম শেষে দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেন। তবে টানা খেলার ওপর থাকায় নেটে বেশি জোর দেননি মিলার। রানিং করেছেন। বল থ্রো করে শরীর ঝালিয়ে নিয়েছেন। কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় এস এ টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা। পার্ল রয়্যালকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিলার। ১০ ম্যাচে রান করেছেন ২৪০।
টানা খেলার ওপর থাকায় অনুশীলনের বাড়তি প্রয়োজন অনুভব করলেন না মিলার, ‘প্রথমবারের মতো নতুন একটি দলে যোগ দেওয়া। এখানের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে মানিয়ে নেওয়া। এছাড়া আপনি তো জানেন আপনার শরীরের চাহিদা কী। আপনার শরীর কি চাইছে। এজন্য বাড়তি কিছুর করার প্রয়োজন অনুভব করিনি আজ।’
‘কয়েকটি থ্রো করেছি। বল নিয়ে নাড়াচড়া, এই তো। কন্ডিশন ও নেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। আজ সকালেই এসে পৌঁছেছি। তাই খুব বেশি জানার সুযোগ হয়নি। আগামীকাল ম্যাচ আছে। যেটা খেলতে মুখিয়ে আছি। আমি মনে করি, অনুশীলনের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনার শরীর কি চাইছে সেটা পূরণ করা। ১৬ বছর হলো ক্রিকেট খেলছি। তাই নিজের খেলাটা সম্পর্কে অবগত।’
মিলার এর আগে বিপিএল খেলেছিলেন একবার। সেটাও ২০১৩ সালে চিটাগং কিংসের জার্সিতে। ৩ ম্যাচে রান করেছিলেন কেবল ৪১। এবার লম্বা সময় পর তার বিপিএলের দুয়ার খুলেছে। সেবার অবশ্য বড় তারকা ছিলেন না। এবার মিলার ধ্রুবতারা। দলের চাহিদা সম্পর্কে অবগত ৩৪ পেরোনো এই ক্রিকেটার। এবার সেই চাহিদা পূরণে বদ্ধপরিকর ‘কিলার’ খ্যাত মিলার।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এর আগে চিটাগং কিংসে একবার খেলেছিলাম। এক সপ্তাহের জন্য এসে ৩ ম্যাচ খেলেছি। আমার মনে আছে ওদের কিটের রং গোলাপি ছিল। ভালো স্মৃতি নিয়ে ফিরেছিলাম। সত্যি বলতে এবারের বিপিএলের ম্যাচগুলো টিভিতে দেখা হয়নি। কিছুদিন পরই বিয়ে করতে যাচ্ছি। বিয়ের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তবে মোবাইলে ক্রিকইনফো থেকে আপডেট পাচ্ছিলাম। দল সম্পর্কে আমি অবগত। কোথায় কিভাবে খেলেছে। তাই নিজের কাজটা করতে আমি বদ্ধপরিকর। দিন শেষে দলের চাওয়া পূরণই আমাদের কাজ।’
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়