নিশাম ঝড়ের পর লিটন-তাওহীদের রেকর্ড জুটিতে বিপিএল ফাইনালে কুমিল্লা
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ফাইনালের আগে যেন আরেক ফাইনাল। বিপিএলের শীর্ষ দুই দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্স তারকায় ঠাসা। তাদের খেলা দেখতে তাই স্টেডিয়ামের গ্যালারিও হাউসফুল। পয়সা উসুল করার মতোই এক ম্যাচ দেখতে পেল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আসা ২৫ হাজার দর্শক।
যেখানে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছড়িয়ে শেষ হাসি হেসেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলের শিরোপাধারীরা আরেকটি বিপিএলের ফাইনালে উঠল। রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথম কোয়ালিফায়ারে জয় পেয়েছে কুমিল্লা।
রংপুর ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পাবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার তারা খেলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল। ১ মার্চ ফাইনালে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ হবে কে, নির্ধারণ হবে সেদিনই।
রংপুর টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে জিমি নিশামের ঝড়ে ৬ উইকেটে ১৮৫ রান সংগ্রহ করে। জবাবে কুমিল্লা তাওহীদ ও লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সহজেই পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে। ১ ওভার বাকি থাকতেই কুমিল্লা স্বপ্নের ফাইনালে। চার শিরোপা জিতে এমনিতেই তারা বিপিএলের সবচেয়ে সফল দল। এবার আরেকটি ফাইনালে উঠে পঞ্চম শিরোপায় চুমু খাওয়ার অপেক্ষায়।
লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লাকে তেমন বেগ পেতে হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলে সুনীল নারিনকে হারানোর পরও তারা ছিল একেবারেই স্থির। ফজল হক ফারুকির বাউন্সারে পুল করতে গেলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নারিন। দ্বিতীয় উইকেটে লিটন ও তাওহীদ ৮৯ বলে ১৪৩ রানের জুটি গড়েন, যা এবারের বিপিএলে রেকর্ড রানের জুটি। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় কুমিল্লা।
শুরুতে দুজনই থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন। এর পর উইকেটের চারপাশে চার-ছক্কার ফোয়ারা ছুটিয়ে প্রতিআক্রমণে গিয়ে দ্রুত রান তোলেন। তাতে খুব সহজে কুমিল্লা লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তাওহীদ ৩১ বলে ও লিটন ৩৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে। মাইলফলক স্পর্শ করার পরও তাদের ব্যাট চলতে থাকে।
মনে হচ্ছিল, দুজনের একজন অন্তত সেঞ্চুরি পেয়ে যাবেন। কিন্তু, কেউই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি, পাননি সেঞ্চুরি। বাঁহাতি পেসার রনির বল ওড়াতে গিয়ে তাওহীদ লংঅনে সাকিবের হাতে ক্যাচ দেন ৬৪ রানে। ৪৩ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় তাওহীদ সাজান নিজের ইনিংস। লিটন ৮৩ রান করেন ৫৭ বলে। ৯ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাকান এই ওপেনার। শেষদিকে জয়ের কাজ সারেন মঈন আলী ও রাসেল। ফ্রি হিটে ছক্কা মেরে মঈন জয় নিশ্চিত করে অপরাজিত থাকেন ১২ রানে। ২ বলে ২ রান করেন রাসেল।
এর আগে রংপুরের ইনিংস একাই টেনেছেন জিমি নিশাম। ইনিংসের শেষ বলে একটি বাউন্ডারি হলে তার সেঞ্চুরি হয়ে যেত। কিন্তু, মুশফিক হাসানের বল টাইমিং মেলাতে পারেননি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দর্শকদের আনন্দ দিয়ে ৪৯ বলে ৯৭ রান করেন। ৮ চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা হাঁকান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন অধিনায়ক সোহান। শুরুতে মন্থর ব্যাটিং করলেও পরে ৪ চার ও ১ ছক্কা মেরে পুষিয়ে দেন।
প্রথমবার খেলতে নামা নিকোলাস পুরান ১৪ ও মাহেদী হাসান ২২ রান করেন। টপ অর্ডারে সাকিবের ইনিংস থেমে যায় ৫ রানে। রনি তালুকদার ১৩ এবং শামীম পাটোয়ারী শূন্য রানে ফেরেন ড্রেসিং রুমে।
কুমিল্লার বোলিংয়ে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছিলেন মুশফিক। ৪ ওভারে ৭২ রানে ১ উইকেট নেন। রাসেল ৩৭ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। সুনীল নারিন ছিলেন তাদের সেরা। ৪ ওভারে ১১ রানে ১ উইকেট নেন তিনি।
ইয়াসিন/রফিক