‘বুড়োদের’ দল ফাইনালে, মুশফিক বললেন, ‘সবটাই অভিজ্ঞতার দাম’
একই দলে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যাদের মধ্যে দুজন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে নিয়েছেন অবসর। বিপিএলে তিনজন যখন একসঙ্গে থাকেন তখন দুটি বিষয়ে কথা হয়। এক, হট ফেভারিট দল। দুই, বুড়োদের দল।
প্রথম কথায় কারোর আপত্তি নেই। মাঠের ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করে তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের দল এখন বিপিএল ফাইনালে। ওই দ্বিতীয় কথাতেই তাই সব আপত্তি। একগাদা বেশি বয়সী ক্রিকেটার নিয়ে দল গড়ার কারণে যারা বরিশালের সমালোচনা করেছিলেন তাদের এবার এক হাত নিলেন মুশফিকুর রহিম। যার দ্যুতিময় ৪৭ রানের ইনিংসে বরিশাল পেয়েছে ফাইনালের টিকিট।
ফাইনালে ওঠার পর মুশফিকই সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন। যেন সেই অপেক্ষাতেই ছিলেন। মুশফিকের কাছে অভিজ্ঞতার মূল্য নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেছেন, ‘কেন ভাই, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তো বললেন যে, বরিশাল সবচেয়ে বুড়াদের দল। অভিজ্ঞদের দিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলা হয় না। তো আজকে আমরা এখানে!’
‘আমার মনে হয়, এগুলো যখন বারবার করে বলা হয় (বেশি বয়সীরা টি-টোয়য়েন্টিতে অচল) এটা খুবই ভুল। কারণ সিনিয়র বলুন বা জুনিয়র, আমরা সবাই বাংলাদেশি। এটা সবার আগে মনে রাখতে হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশের জন্য ক্রিকেট খেলি, অন্য কোনো দেশের জন্য খেলি না।’ – যোগ করেন তিনি।
এবারের টুর্নামেন্টে তাদের পারফরম্যান্সও বেশ উজ্জ্বল। বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৪৫৩ রান করে বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৩৪.৮৪ গড়ে ১৪ ইনিংসে এই রান করেছেন তামিম। সমান ম্যাচে মুশফিকুর রহিম রান করেছেন ৩৬৭। ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মুশফিক দলের চাহিদা পূরণ করছেন। ৩৩.৩৬ গড় ও ১২৩.৫৬ স্ট্রাইক রেটে মুশফিক বিপিএল রাঙিয়েছেন।
মাহমুদউল্লাহ ১৪ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন। ৪টিতে ছিলেন নট আউট। ২৩০ রান করেছেন ২৮.৭৫ গড়ে। যেখানে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৬.০৯। ত্রয়ীর পারফরম্যান্সই তাদের হয়ে কথা বলছে। এজন্য মুশফিকের পাল্টা জবাব সমালোচকদেরও মুখ বন্ধ করতে বাধ্য করছে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের মতে, শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নয়, সব সংস্করণেই অভিজ্ঞতার মূল্য রয়েছে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ক্রিকেটের পথচলা এভাবেই মসৃণ করবে অভিজ্ঞরা।
‘এই ধারণাটা খুবই ভুল। অভিজ্ঞতার দাম সব ফরম্যাটে আছে। এটাই হচ্ছে দুনিয়ার নিয়ম। নতুনরা আসবে, পুরোনোরা চলে যাবে এবং তাদের সংমিশ্রণে এই জিনিসটা তৈরি হয়ে যাবে। আমরা যারা আছি, এই লেগাসিটা যেন রেখে যেতে পারি এবং তারা (নতুনরা) যেন এখান থেকে বড় হয়।’
‘কয়েকদিন পরে (তাওহিদ) হৃদয়, (তানজিদ) তামিমরাও সিনিয়র হবে। তারাও আস্তে আস্তে চলে যাবে। কিন্তু তারাও সেই লেগাসিটা রেখে যায়। এটা একটা মসৃণ সেট, যেটা আমার কাছে সবসময়ই মনে হয় একটা বাস্তবতা। এটা একটা নিয়তি, সবসময় এভাবেই হবে।’ – বলেছেন মুশফিক।
ঢাকা/ইয়াসিন