১০০ ওভারের ম্যাচ ১৮ ওভারেই শেষ, মোহামেডানের ইতিহাস
আড়মোড়া ভাবটা তখনও কাটেনি। বিকেএসপি তখনও চাঙ্গা হয়ে উঠেনি। অথচ ব্যাগ-পত্র নিয়ে ক্রিকেটাররা ছেড়ে যাচ্ছেন ড্রেসিংরুম!
সময় তখন ১০টা বেজে ৫৩ মিনিট। বিকেএসপির-৩ নম্বর মাঠে মোহামেডানের অঙ্কন জয়সূচক রান নিয়ে দলের বিশাল জয় নিশ্চিত করলেন। ১০০ ওভারের ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমির। কিন্তু ম্যাচটা শেষ ১৮.২ ওভারেই। পেসার আবু হায়দার রনির বিধ্বংসী বোলিংয়ে স্রেফ এলোমেলো গাজী টায়ার্স।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ৪০ রানে অলআউট তারা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যায় গাজী টায়ার্স। রনি মাত্র ২০ রানে ৭ উইকেট নেন যা ঢাকা লিগে দ্বিতীয় ব্যক্তিগত সেরা।ওই রান তাড়া করতে নেমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৩৮ বলে ম্যাচ জিতে নেয় ৯ উইকেটে। ২৬২ বল হাতে ঢাকা লিগে সবচেয়ে বড় জয়ের ইতিহাস লিখে নেয় মতিঝিল পাড়ার দলটি।
নাসুম আহমেদ ও আবু হায়দার রনি বিকেএসপির দুই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেন। একজনের স্পিন আক্রমণ, আরেকজনের পেস। দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এলোমেলো গাজী টায়ার্স। দলের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। তিনজন পারেননি রানের খাতা খুলতে। ঢাকা লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর সর্বনিম্ন ৩৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড আছে ক্রিকেট কোচিং স্কুলের। আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে তারা এই রান করেছিলেন।
শনিবার গাজী গুটিয়ে গেল ৪০ রানে। তাদের হয়ে ইফতেখার সাজ্জাদ ১৬ রান না করলে আরো অল্প রানে গুটিয়ে যেত। রনি নিজের প্রথম ওভারে দুই উইকেট নেন। এরপর তৃতীয় ওভারে ফিরে আরো দুই উইকেট জমা করেন। পরের তিন উইকেট নিতে বেশি সময় নেননি। সব মিলিয়ে তার বোলিং ফিগারটা ছিল এরকম, ৬-১-২০-৭। নাসুমও ৬ ওভার হাত ঘুরিয়েছেন। ১ মেডেনসহ ২০ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইমরুল কায়েস ও রনি তালুদকার ৩৫ রানের জুটি গড়েন। সবকটি উইকেট হাতে রেখে জয়ের সুযোগ ছিল তাদের। কিন্তু রনি ১টি করে চার ও ছক্কায় ১২ রান করার পর আকাশের বলে আউট হন। ইমরুল ১৯ ও অঙ্কন ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ৬.২ ওভারেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের।
২৬২ বল হাতে রেখে জয় পায় মোহামেডান। যা ঢাকা লিগে ইতিহাসে বলের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ মোহামেডানকে ৮০ রানে অলআউট করে ২৫০ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতেছিল। বিধ্বংসী বোলিংয়ে পেসার রনির হাতে উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ঢাকা লিগে সর্বনিম্ন দলীয় রান:
৩৫ - ক্রিকেট কোচিং স্কুল বনাম আবাহনী লিমিটেড
৪০ - গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি বনাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব
৪৬ - ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব বনাম খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি
৫০ - বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনাম প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব
৬৪ - মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব বনাম কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়