‘সবার আগে উনার চাইতে হবে’ তামিমের ফেরা প্রসঙ্গে শান্ত
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে বসে রুদ্ধদ্বার বৈঠক দুজনের। দুজনের আলোচনার গভীরতা দেখে বোঝা যাচ্ছিল অতি জরুরি ইস্যুতেই এক টেবিলে বসা। সেই আলোচনাটা যে জাতীয় দল কেন্দ্রিক তা ধরতে বেশি সময় লাগেনি। নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম ইকবাল সোমবার মিরপুরের ড্রেসিংরুমে লম্বা সময় ধরে আলোচনায় বসেন।
তাদের আলোচনা নিয়ে শান্ত সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তামিমের জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে হয়েছে তা শান্তর কথায় বোঝা গেছে, ‘তামিম ভাই থাকলে তো অবশ্যই দলের অনেক সুবিধা হয়। জুনিয়র প্লেয়াররা অনেক শিখতে পারে।’
আগের রাতে শান্ত তেমন কিছু বলতে আগ্রহ না দেখালেও আজ দূতিয়ালি কাজে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে সোজাসাপ্টা অনেক কিছুই বলেছেন। যার সারাংশ দাঁড়ায়, তামিম যদি জাতীয় দলে ফিরতে চান আগ্রহটা তার তরফ থেকে আসতে হবে। এরপরই শুরু হবে প্রক্রিয়া। গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে চলে যান তামিম। একদিন পরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অবসর ভেঙে ফিরেও আসেন। এরপর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলেন।
এরপর তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়। মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। আলোচনা ড্রেসিংরুমের ইস্যু। মাঠের বাইরের নানা বিষয়। তাতে তামিম অনেকটাই জাতীয় দল থেকে দূরে চলে যেতে থাকেন। তবে দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান চাহিদার শীর্ষে ছিলেন সব সময়। শান্তও একই কথা বলেছেন। তবে তামিম নিজে কি চাইছেন সেটাকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তিনি।
শান্তর ভাষ্য, ‘আমি তো চাইব, উনি যদি ফিট থাকেন, টি-টোয়েন্টি যদিও রিটায়ার করেছেন, যদি উনি ফিট থাকেন, যে কোনো ফরম্যাটে এলেই আমরা খুশি হবো। আমার মনে হয়, আমি না শুধু, দেশের প্রত্যেকটা মানুষ, ক্রিকেটারই খুশি হবে। এটা তো ইচ্ছা। এটা চাওয়া। তবে সবার আগে উনার চাইতে হবে। তারপর বাকি প্রক্রিয়া। তবে অধিনায়ক হিসেবে, আমার যেটা ইচ্ছা বা চাহিদা, সে বিষয়গুলো নিয়ে টুকটাক একটু আলাপ-আলোচনা করেছি।’
শান্ত নিজের ভাবনা দুজনের আলোচনার সময়ে পরিস্কার করেছেন বলেই দাবি করলেন, ‘(তামিমের সঙ্গে) সুন্দরভাবে বসে আড্ডা দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে কথা হয়েছে। কী অবস্থায় উনি আছেন। আমরা বা আমি অধিনায়ক হিসেবে কীভাবে চিন্তা করছি, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। এই মুহূর্তে আপনাদের পরিস্কারভাবে বলা মুশকিল। কারণ, সময়ের ব্যাপার। উনিও একটু সময় চেয়েছেন। একটু চিন্তা-ভাবনা করবেন হয়তো। ডিপিএলও চলছে। টুর্নামেন্ট শেষ হোক। আমারও একটু চিন্তা-ভাবনা করা লাগবে। এমনিতে নরমালি একটু ক্রিকেট নিয়ে... কী অবস্থা, কী আছে এসব কথাই হয়েছে।’
বিশ্বকাপের ঠিক আগে তামিমের ফেরা নিয়ে যখন কথা উঠছে তখন বেশ কিছু প্রশ্নও উঠছে। তামিম কি টি-টোয়েন্টিতে অবসর ভেঙে ফিরবেন? বাংলাদেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার পারফরম্যান্স বিবেচনা আনলে তামিমের না ফেরার কারণ নেই। যেখানে তামিম ৪৯২ রান করেছেন, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন, নিজের দল বরিশালকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন।
তবে টিম ম্যানেজমেন্টর তাকে টি-টোয়েন্টিতে ফেরানোর ইচ্ছা নেই তা শান্তর কথায় পরিস্কার হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে এই ধরনের (তামিম-মুশফিকের টি-টোয়েন্টি অবসর ভাঙানো) চিন্তা-ভাবনা করছি না। বিশ্বকাপের খুব বেশি দিন সময় নেই। দলটা মোটামুটি খুব ভালো থিতুও আছে। এই মুহূর্তে এসব কিছু ভাবছি না। তবে অবশ্যই দলের প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তে যে কাউকে ডাকার জন্য প্রস্তুত।’
ইয়াসিন/আমিনুল