‘চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার আবাহনীই’
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ঠিক মনে করতে পারলেন না নিজের কততম ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছেন। তবে ১২ বছর আবাহনী লিমিটেডে কাটিয়ে মোসাদ্দেক এতোটুকু বুঝে গেছেন, এই ক্লাবটার প্রতি তার মায়া বেড়ে গেছে অনেকগুণ। তাইতো লক্ষ্যে পৌঁছতে অজস্র ঘামবিন্দু ঝরাতে কোনো কার্পণ্য নেই তার। বরং ইতিহাস সমৃদ্ধ ক্লাবটি বারবার তার ওপর যে আত্মবিশ্বাস রাখে তাতেই বুক গর্বে ভরে যায় মোসাদ্দেকের।
‘এটা অনেকটা গর্বের বিষয়। এতো বড় একটি ক্লাব। দল গঠনের আগেই আমার কথা বিবেচনা করে। আমাকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজায়। কাকে নেওয়া যায়, কাকে কোন সময় আনা যায় এসব নিয়ে আলোচনা করে। আমার কাজটা আসলে সুজন স্যারই সহজ করে দিয়েছেন। আমাদের বোঝাপড়াটা ভালো বলেই দল পরিচালনা করতে যেমন সুবিধা হয় ঠিক তেমনি সাফল্যও আসে।’
বিকেএসপির-৪ নম্বর মাঠে মঙ্গলবার নিজের আরেকটি অপরাজিত ৫৩ রানের ঝকঝকে ইনিংসে মোসাদ্দেক আবাহনীকে দিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। রাউন্ড রবিন লিগের ১১ ম্যাচের পর সুপার লিগে টানা ৩ জয়। সবমিলিয়ে ১৪ জয়ে আবাহনীর শোকেসে লিগের ২৩তম শিরোপা।
আবাহনীর এই অর্জন কতটা বড় তা বোঝা যায় আরেকটি পরিসংখ্যান দিলে। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট ও গৌরবের আসর ঢাকা লিগ ১০ বারও জিততে পারেনি আর কোনো ক্লাব। আবাহনী হ্যাটট্রিক শিরোপাই জিতেছে তিন দফায়।
আবাহনীর অধিনায়ক নিজেদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দিলেন দলের সবাইকে, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ক্লাব ক্রিকেটে আপনি যদি পারফরম্যান্স না করেন তাহলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না। ক্রিকেটে তো আরও বেশি। আমার কাছে মনে হয় যেখানে যতটুকু সম্ভাবনা ছিল ওখানে আমি পারফরম্যান্স করেছি এবং ভালো করেছি। আবাহনী সেই বিশ্বাসটা আমার ওপর করেছে। শুধু ক্রেডিট আমার দিলে হবে না। দলের বাকিরাও সবাই অবদান রেখেছে।’
এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ না হেরেই আবাহনী শিরোপা জিতেছে। জাতীয় দলের ১৫ ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়ে আবাহনী শিরোপা ধরে রাখার মিশনে মাঠে নেমেছিল। নিজেদের পরিকল্পনায় সফল হওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত মোসাদ্দেক, ‘আমরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বলেছিলাম যেভাবে আমরা দল গড়েছি তাতে চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার আমরাই। পারফরম্যান্সও তা-ই বলে। আমরা কোনো ম্যাচ হারিনি। সবগুলো ম্যাচে জিতেছি দাপট দেখিয়ে। কখনো অস্বস্তিতে পড়িনি।’
শেষ ম্যাচে তাদেরকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। জাতীয় দলের সিরিজ থাকায় শান্ত, তাওহীদ, তাসকিন, শরিফুল, লিটনরা ম্যাচ খেলতে পারেননি। বিশেষ বিবেচনায় আফিফ, তানজিম, তানভীর চট্টগ্রামে জাতীয় দলের ক্যাম্প ছেড়ে খেলতে আসেন আবাহনীতে। এছাড়া নিয়মিত একাদশের অনেককেই পায়নি আবাহনী। তাদের ছাড়াও সাকিব, সোহানদের দলকে হারানো বাড়তি আনন্দ মোসাদ্দেকের, ‘গতকালের ম্যাচটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ, আমাদের নিয়মিত ৮-৯ ক্রিকেটাররা আমরা পাইনি। শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব শক্তিশালী দল ছিল। সাকিব ভাই আবার যোগ দিয়েছিল। সব মিলিয়েই আমি বলবো চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ ছিল। সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে ঠিকমতো। শেষ পর্যন্ত আমরা জেতায় বেশ খুশি।’
ইয়াসিন/আমিনুল