ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

শেষ ওভারের রোমাঞ্চে বাংলাদেশের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২১, ১০ মে ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৬, ১০ মে ২০২৪
শেষ ওভারের রোমাঞ্চে বাংলাদেশের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

১৯তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি লাইনে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ দক্ষতায় নিশ্চিত ছয় থেকে মাত্র ২ রান পায় জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে ৫ রানে। শান্তর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের পর শেষ ওভারের রোমাঞ্চের নায়ক সাকিব আল হাসান।

শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৪ রান। বাংলাদেশের ২ উইকেট। শান্ত বল তুলে দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। হতাশ করেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিবের ঘূর্ণিজাদুতে ইনিংসের শেষ ওভারে বাংলাদেশ পায় রোমাঞ্চকর এক জয়।

ছুটির দিনে হোম অব ক্রিকেট ছিল দর্শকে ঠাসা। পরতে পরতে উত্তেজনা ছড়ানো এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ের পেন্ডুলাম দুই দলের দিকেই দুলেছে। শেষ ওভারের প্রথম বলে তানজীদ হাসান তামিম ক্যাচ মিস না করলে অবশ্য গল্পটা ভিন্ন হতো। তৃতীয় বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে সাকিবকে হাঁকানো মুজারাবানির ছয় মনে ভয় ধরিয়ে দেয়। সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ বলে ৭।  

আরো পড়ুন:

অভিজ্ঞ সাকিব সময় নেননি ম্যাচে ফেরাতে। চতুর্থ বল সাকিব করেছেন অফের বেশ বাইরে, ওয়াইড হলেও মুজারাবানি এগিয়ে গিয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার! পরের বলে এনগারাভাকে বোল্ড করেন!  ঘূর্ণি জাদুতে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে শ্বাসরুদ্ধকর জয় এনে দেন ১০ মাস পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১০ মে, ২০২৪) টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ১৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। তাড়া করতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ১৩৮ রান নিয়ে থামে জিম্বাবুয়ে। ৫ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক শিবির।

রান তাড়া করতে নেমে জিম্বাবুয়ে শুরুতে ধুঁকতে থাকে। পাওয়ার প্লেতে ৩৮ রান তুলতে হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। এর মধ্যে জিম্বাবুয়ে ব্যাটারদের ছোট ছোট ইনিংস বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও রানের চাক ছিল সচল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয়ের বন্দরে দলকে পৌঁছে দিতে পারেননি ব্যাটাররা। 

মাত্র ৮ বলে ১৯ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন জনাথন ক্যাম্পবেল। এ ছাড়া রায়ান বার্ল ১৯, সিকান্দার রাজা ১৭, মারুমানি ১৪ ও ফারাজ আকরাম ৮ রান করেন। রানের খাতা খুলতে পারেননি ব্রায়ান বেনেট।

বাংলাদেশ বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংও দারুণ করেছে। বাউন্ডারি লাইনে ছক্কা বাঁচানো ছাড়া দারুণ ক্যাচ ধরেছেন সৌম্য সরকার-তানজিদরা। তানজিদ যদিও শেষে একটি মিস করেন।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়ে সাকিব। সবচেয়ে কৃপণ ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আইপিএল যেখানে শেষ করেছেন দেশের জার্সিতে সেখান থেকে শুরু করে ম্যাচসেরা হয়েছেন দ্য ফিজ।

এর আগে বাংলাদেশ দারুণ শুরু করেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। ১১ ওভারে ১০০ রানের পরের ৪৩ রান করতে অলআউট হয় লাল-সবুজের দল! সিরিজের প্রথমবার পাওয়ার প্লে’তে পঞ্চাশ পার হয়। কোনো উইকেট না হারিয়ে আসে ৫৭!

ওপেনার তানজিদের বিদায়ে পর ছন্দপতনের শুরু। বিশেষ করে ১২১ রানের মাথায় তাওহীদ হৃদয়ের (১২) বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ এলোমেলো হয়ে যায়। এরপর ৯ রানের মধ্যে বাংলাদেশ নাজমুল হোসেন শান্ত (২), সাকিব আল হাসান (১) ও জাকের আলী অনিকের (৭) উইকেট হারায়।

অনিকের আউটের পর স্বীকৃত কোনো ব্যাটার ছিল না। রিশাদ হোসেনও আজ পারেননি। ২ রানে ফেরেন তিনি। তাসকিন আহমেদ হন রান আউট।

অথচ তানজিদ-সৌম্য জুটি শুরু থেকে খেলছেন দুর্দান্ত। পাওয়ার প্লে’তে দুজনে কোনো উইকেট না হারিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করে যান। চলতি সিরিজে এর আগে সর্বোচ্চ আসে ৪২ রান। দুজনের জুটি থেকে আসে ১০১ রান। টি-টোয়েন্টিতে অষ্টমবারের মতো যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশ শতরানের জুটি পার হয়। কিন্তু সেই ধারা ধরে রাখতে পারেননি পরের ব্যাটাররা।

তানজিদ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচে এসে দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পান। মাত্র ৩৪ বলে ৭টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ফিফটি করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩৭ বলে সর্বোচ্চ ৫২ রান করে আউট হন।

তার আউটের ৭ রানের মধ্যে সৌম্যও ফেরেন সাজঘরে ফেরেন। ৩৪ বলে ৪১ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের ৭ ব্যাটার দুই অঙ্কের মুখ দেখেননি। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন লুক জংওয়ে। ২টি করে উইকেট নেন রিচার্ড এনগ্রাভা ও ব্রায়ান বেনেট। 

রিয়াদ/আমিনুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়