যেখানে মিলে গেছে সাকিব-রোহিতের পথ
প্রশ্নটা উঠেছিল, ২০২২ সালে অ্যাডিলেডে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পরই। সাকিব আল হাসান কি আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেন? ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মজা করেই একজন বলেছিলেন, ‘সাকিবের সেকেন্ড হোম! মিস করবে কিভাবে?’ স্রেফ মজার জন্য বলা হলেও যদি ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে ধরা হয় তাহলে তিনি দশে দশ।
বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায়। বয়স বেড়েছে। বেড়েছে পরিচয়। তারচেয়েও বেশি বেড়েছে ব্যস্ততা, দায়িত্ব। সবকিছু মিলিয়ে সাকিবকে নিয়ে এই ফরম্যাটে উপসংহার টানার মতোই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু চাইলেই তো সাকিবকে নিয়ে উপসংহার টানা যায় না তা আরো একবার প্রমাণিত।
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা। নানা পথ পেরিয়ে, নানা রোমাঞ্চ, উত্তেজনা, রেণু ছড়িয়ে নবম আসরের পর্দা ওঠার অপেক্ষা।
বিশ্বকাপের জন্য মঙ্গলবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। নানা ব্যস্ততাতেও ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া সাকিব নিজের নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার অপেক্ষায়। বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব অনন্য এক মাইলফলকে নিজেকে জড়িয়ে নিলেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলা একমাত্র ক্রিকেটার বাংলাদেশের এই সুপারস্টার।
ক্রিকেট বিশ্বের খুব কম খেলোয়াড়ের এমন অর্জন আছে। ভারতের রোহিত শর্মা ও সাকিব এখন পর্যন্ত বিশ্বমঞ্চে বৈশ্বিক আসরে টিকে আছেন।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটে আবির্ভাব সাকিবের। তিনি ও মুশফিক ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন। মুশফিক ২০২২ এশিয়া কাপের পরপরই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছেড়েছেন। ফলে দীর্ঘতম খেলোয়াড় বিবেচনায় সাকিবই এখন টিকে আছেন। গতবার সাকিব ছিলেন দলনেতা। এবার তাকে খেলতে হবে শান্তর নেতৃত্বে।
বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের দলগত সাফল্য না থাকলেও সাকিবের ব্যক্তিগত অর্জনের ঝুলি টইটুম্বুর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩৬ ম্যাচে ২৩.৯৩ গড়ে ৭৪২ রান করেছেন। বোলিংয়ে ১৮.৬৩ গড়ে ৪৭ উইকেট পেয়েছেন। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সাকিব ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিশ্বকাপে ৫০০ এর বেশি রান ও কমপক্ষে ৩০ উইকেট পাওয়া দুজন ক্রিকেটারের মধ্যে একজন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। খেলা চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে হিসেব করলে তিনিই এই রেকর্ডে রাজত্ব করছেন। অবসরে যাওয়া পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি ৫৪৬ রান করেছেন। উইকেট পেয়েছেন ৩৯টি।
বিশ্বকাপে বোলিংয়ে সবার উপরে সাকিব। বাঁহাতি স্পিনারের ৪৭ উইকেটের পর ৩৯ উইকেট নিয়ে দুইয়ে আছেন শহীদ আফ্রিদি। এছাড়া ম্যাচ সংখ্যায় রোহিতের পরই সাকিবের অবস্থান। সাকিব ম্যাচ খেলেছেন ৩৬টি। দুইবার ফাইনাল খেলা রোহিত খেলেছেন ৩৯ ম্যাচ।
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়