ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

সুপার ওভারে নামিবিয়ার হাসি

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৫, ৩ জুন ২০২৪   আপডেট: ১০:৩৮, ৩ জুন ২০২৪
সুপার ওভারে নামিবিয়ার হাসি

এক যুগ পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আরেকটি সুপার ওভারের দেখা মিললো। সোমবার বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে ওমান ও নামিবিয়ার লড়াই নির্ধারিত সময়ে অমীমাংসিত থাকে। ওমানের করা ১০৯ রানের জবাবে নামিবিয়ার ইনিংস থেমে যায় একই রানে। তাতে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। শেষবার ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাল্লাকেল্লেতে সুপার ওভারের ম্যাচ খেলেছিল নিউ জিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এবার নবম আসরের তৃতীয় ম্যাচে সুপার ওভারের দেখা মিললো। যেখানে শেষ হাসিটা হেসেছে নামিবিয়া। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নামিবিয়া বিলাল খানের ওভার থেকে স্কোরবোর্ডে ২১ রান তোলে। জবাবে ডেভিড ভিসের ওভার থেকে ওমান ১০ রানের বেশি করতে পারেনি।

ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ভিসে নামিবিয়ার জয়ের নায়ক। ব্যাটিংয়ে প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকানোর পর তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে একটি ডাবল ও সিঙ্গেল রান নেন। সুপার ওভারে ৪ বলে তার রান ১৩। শেষ দুই বল খেলার সুযোগ পান ইরাসমাস। দুটি বলই বাউন্ডারিতে পাঠান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বোলিং ভিসে পান নাসিম খুশির উইকেট। শেষ বলে ছক্কা হজম করলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
 
অবশ্য তার কারণেই ম্যাচটা এসেছে সুপার ওভারে। মূল ম্যাচে শেষ বলে জয়ের জন্য ২ রান লাগতো নামিবিয়ার। পেসার মেহরানের শর্ট বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি ভিসে। লেগ বাই থেকে কোনোমতে ১ রান নিয়ে ম্যাচটা সুপার ওভারে নেয় নামিবিয়া। শেষ পর্যন্ত ভিসে স্নায়ু স্থির রেখে নিশ্চিত করেছেন দলের ২ পয়েন্ট।

তবে লো স্কোরিং ম্যাচে এমন নাটকীয়তা হবে কেউ কি ধারণা করতে পেরেছিল। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ওমান ১০৯ রানে থেমে যায়। নামিবিয়াও তাই। ম্যাচের রোমাঞ্চ ছড়ায় শেষ ওভারে। ব্যাটিংয়ে লড়াই করতে না পারলেও ওমান বোলিংয়ে হাল ছাড়েননি। ম্যাচ নিয়ে যায় ইনিংসের শেষ ওভারে। নামিবিয়ার জয়ের জন্য ৫ রান লাগতো। উইকেটে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান ফ্রাইলিঙ্ক পেসার মেহরানের করা ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হন। নিচু হওয়া বল প্যাডে আঘাত করে স্টাম্পে যায়।

দ্বিতীয় বলটি ছিল ডট। তৃতীয় বলে নতুন ব্যাটসম্যান জেন গ্রীন এলবিডব্লিউ। চতুর্থ বলে পরের ব্যাটসম্যান ক্রুগার নেন ১ রান। পঞ্চম বলে ভিসে স্ট্রাইকে ফিরে ২ রান নেন। স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন ভিসে। লং অন ও লং অফের মাঝামাঝি দিয়ে চার হলেও হতে পারত। কিন্তু বল স্টাম্পে আঘাত করায় দৌড়ে ২ রান নেওয়ার সুযোগ পান ভিসে। তাতে শেষ বলে জয়ের জন্য ২ রান দরকার হয় নামিবিয়ার।

ওমান ক্লোজ ইন ফিল্ডিং সাজিয়ে চাপ দেয় ভিসেকে। উইকেটরক্ষক নাসিম খুশি শর্ট কিপিংয়ে ফেরেন। মেহরানের শর্ট বলে ভিসে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। কিপারও বল গ্লাভসবন্দী করতে পারেননি। কিন্তু রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। বল তার নাগালেই ছিল। কিন্তু সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙতে পারেননি। লেগ বাইয়ে ১ রান নিয়ে নামিবিয়া ম্যাচ নিয়ে যায় সুপার ওভারে। পরের গল্পটা জানা হয়ে গেছে নিশ্চয়ই।

ম্যাচটা সুপার ওভারে না গেলে নামিবিয়ার জয়ের নায়ক হতেন রুবেন ট্রাম্পেলম্যান। বল হাতে প্রথম ইনিংসেই দেখান নিজের কারিশমা। নতুন বলে ইনিংসের প্রথম দুই বলে তার পকেটে দুই উইকেট। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে আসা ট্র্যাম্পেলম্যান এর চেয়ে ভালো শুরু কি প্রত্যাশা করতে পারতেন? দ্বিতীয় ওভারে ফিরে আবারও সাফল্য দ্রুতগতির বোলারের। তাতে ওমানের স্কোরবোর্ডের চিত্রটা ছিল এরকম ১০/৩। ১৯তম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে এসে আরো একটি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ অভিষেক রাঙান ট্যাম্পেলম্যান। যেখানে জ্বলজল করছে ২১ রানে ৪ উইকেট।

ট্যাম্পেলম্যানের সঙ্গে অভিজ্ঞ ডেভিড ভিসেও পারফরম্যান্সে দলকে এগিয়ে নেন। ৩.৪ ওভারে ২৮ রানে ভিসের শিকার ৩ উইকেট। সঙ্গে ইরাসমাস পেয়েছেন ২ উইকেট। নামিবিয়ার বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ওমানের হয়ে ব্যাটিংয়ে লড়াই করেছেন কেবল খালিদ খলিল ও জিসান মাকসদু। সর্বোচ্চ ৩৪ রান করা খালিদ ৩৯ বলে ১টি করে চার ছক্কায় ইনিংসটি সাজান। জিসান ২২ রান করতে ৪টি চার পেয়েছেন। এছাড়া তেমন কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেনি।

১১০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নামিবিয়া প্রথম ওভারে উইকেট হারায়। কোনো রান যোগ না করে ভন লিনগেন ফেরেন ড্রেসিংরুমে। সেখান থেকে নিকোলাস ডিভান ও ফ্রাইলিঙ্ক জুটি বাঁধেন। কিন্তু ৪২ রানে থেমে যায় তাদের লড়াই। নিকোলাস ২৪ রানে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। সেখান থেকে ফ্রাইলিঙ্কের একার লড়াইয়ে নামিবিয়া ম্যাচ নিয়ে যায় শেষ ওভারে। কিন্তু ৪৫ রান করা ফ্রাইলিঙ্ক শেষ ওভারের প্রথম বলে ফিরলে ম্যাচে নাটকীয়তা ছড়ায়। উত্তেজনা, উন্মাদনা বিরাজ করে ম্যাচ সুপার ওভারে যায়। সেখানে ভিসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নামিবিয়া হেসেছে সুখীর হাসি। উড়িয়েছে বিজয়ের পতাকা।

ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়