ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

প্রশ্নবিদ্ধ উইকেট, আউটফিল্ডে তালগোল পাকানো পারফরম্যান্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ৩ জুন ২০২৪   আপডেট: ০১:১৫, ৪ জুন ২০২৪
প্রশ্নবিদ্ধ উইকেট, আউটফিল্ডে তালগোল পাকানো পারফরম্যান্স

ধীর গতির উইকেট। অসমান বাউন্স। বল কখনো লাফিয়ে উঠে। কখনো নিচু হয়ে যায়। সুইংয়েও হেরফের। এ-তো গেল ২২ গজের চিত্র। আউটফিল্ড কেমন? উত্তর, একেবারেই মন্থর। বল গড়িয়ে যায় সীমানার দিকে। কিন্তু দড়ি ছুঁতে পারে না। স্কোরিং শটে মেলে না আত্মবিশ্বাস। রয়েশয়েই এগোতে হয়। থেকে যায় বিপর্যয়ের শঙ্কা। 

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে আবেদন, যে আকাঙ্খা নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম পূরণ করতে পারল না। দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটা হলো ম্যাড়ম্যাড়ে। লো স্কোরিং ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হলেও প্রবল সমালোচনা হচ্ছে আউটফিল্ড ও উইকেট নিয়ে। 

টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শ্রীলঙ্কা মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয়। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় রানে অলআউটের পর এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার পাওয়ার খুব একটা কিছু ছিল না। কিন্তু বোলাররা সহজে হার মানলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেট তুলে নিয়ে তাদের সহজে জিততে দেননি। ২২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করলো প্রোটিয়ারা। 

পূর্ণ ২ পয়েন্ট পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার যাত্রা শুরু হলেও ম্যাচটা খেলে তারা আনন্দ পায়নি তা টের পাওয়া গেছে জয়ের পর। কোনো উচ্ছ্বাস নেই। মুখে নেই হাসি। বরং বিপর্যয়ে পড়তে হয়নি সেই স্বস্তিই যেন পেয়েছে বিজয়ীরা। 

টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে’ ও ডেথ ওভার ম্যাচের প্রাণ। লো স্কোরিং ম্যাচে ডেথ ওভার বলতে কিছু ছিল না। কিন্তু পাওয়ার প্লে’ যেন এক দীর্ঘশ্বাস। পাওয়ার প্লে’তে দুই দলই রান তুলতে ভুগেছে। শ্রীলঙ্কা ১ উইকেট হারিয়ে ২৪ রান তোলে। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে করে ২৭ রান। পাওয়ার প্লে’তে দুই দলের সম্মিলিত রান ৫১ যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন! 

শ্রীলঙ্কার ইনিংসে বাউন্ডারি এসেছে কালেভাদ্রে। ১৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারানোর আগে লঙ্কানরা মাত্র ৩টি করে চার ও ছক্কা মেরেছে। ১৩ ওভার পর্যন্ত ছিল না কোনো ছক্কা। পরের ৯ বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও দাসুন শানাকা ৩ ছক্কা হাঁকান। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোয়াডে পাওয়ার হিটারে ভরা। অথচ তাদেরও বড় শট খেলতে পা কেঁপেছে। শ্রীলঙ্কার মতো তাদের ইনিংসেও ৩টি করে চার ও ছক্কা। ডেভিড মিলার লঙ্কান স্পিনার হাসারাঙ্গাকে এগিয়ে এসে লং অফ দিয়ে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। 

ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেওয়া অ্যানরিখ নরকিয়ে ছিলেন দুর্দান্ত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা ইকোনোমিকাল বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার। যেখানে তার বোলিং ইকোনমি ছিল ১.৭৫। এছাড়া কেশভ মহারাজ টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে রাখেন অবদান। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমে প্রথম বলে উইকেট পান ওটনিল বার্টম্যান। তার হাত ধরেই প্রথম ধাক্কা হজম করে লঙ্কানরা। এরপর তাদের ব্যাটিং ইনিংসের গল্পটা ছিল ব্যর্থতায় মোড়ানো। সাবেক চ্যাম্পিয়নদের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন কুশল মেন্ডিস। এছাড়া দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন ম্যাথুজ (১৬) ও কামিন্দু মেন্ডিস (১১)। বাকিরা সিঙ্গেল ডিজিটেই আউট। 

চার ছক্কার পরিবর্তে সিঙ্গেল-ডাবলসে রান তাড়া করা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ২০ রান করেন কুইন্টন ডি কক। ২৭ বলে ২০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া মার্করাম ১২, স্টাবস ১৩ ও ক্লাসেন ১৯ রান করেন। মিলারের ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। 

ব্যাট-বলের উত্তাপহীন এক ম্যাচ দিয়ে নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হলো। সামনে কি হয় সেটাই দেখার।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়