বদলি নেমে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক লাউতারো মার্টিনেজ
৭৩ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজকে তুলে লাউতারো মার্টিনেজকে মাঠে নামান আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কোলানি। আর্জেন্টিনা তখন প্রথম গোলের অপেক্ষায়। ভালো ফুটবল খেলেও ফরোয়ার্ডদের ভুলে গোল পাচ্ছিল না বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
১৫ মিনিটের ব্যবধানে লাউতারো মার্টিনেজ সেই অপেক্ষা দূর করেন। ৮৮ মিনিটে চিলির প্রাচীর ভেঙে আর্জেন্টিনাকে উল্লাসে ভাসান ২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। এই গোলে চিলিকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছে শিরোপাধারীরা। এর আগে প্রথম ম্যাচে কানাডাকে ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। প্রথম ম্যাচেও দলের হয়ে গোল করেছিলেন মার্টিনেজ।
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা তখন ২ মিনিট বাকি। মেসির নেওয়া কর্ণার কিক থেকে ডি বক্সের ভেতরে ফাঁকায় বল পান মার্টিনেজ। এর আগে জটলা থেকে বল ক্লিয়ার। মার্টিনেজ ওই সময়ে ছিলেন একেবারেই আনমার্ক। গোলমুখে তার একেবারে ক্লিয়ার শট। সময় নিয়ে ডান পায়ে শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ইন্টার মিলানের এই ফরোয়ার্ড।
পুরো স্টেডিয়াম তখন উল্লাসে ফেটে পড়ে। কিন্তু রেফারি নিশ্চিত হতে পারছিলেন না গোল হয়েছে কিনা। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সহায়তায় যখন গোলকে স্বীকৃতি দেন তখন আনন্দ দ্বিগুন হয় আর্জেন্টিনা সমর্থকদের।
‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে দুই জয়ে ৬ পয়েন্টে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আলবিসেলেস্তেরা। দুইয়ে থাকা কানাডার পয়েন্ট ৩। তিন ও চারে থাকা চিলি, পেরু দুই দলেরই ১ পয়েন্ট।
ম্যাচের প্রথমার্ধে কোনো দল গোল করতে পারেননি। আর্জেন্টিনা একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করলেও চিলি পারেনি গোলমুখে সুযোগ তৈরি করতে। আর্জেন্টিনা গোলমুখে ৬ শট নিয়েও গোল পায়নি। চিলি ছিল স্রেফ দর্শক হয়ে।
তবে তাদের খেলার ধরণ ছিল অনেকটাই রক্ষণাত্মক। আর্জেন্টিনার ভুলের অপেক্ষায় ছিল চিলি। আর মেসিকে আটকাতেই ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়েছে তাদের। তাতে প্রথমার্ধ কোনো মতে কাটিয়ে দেয় ফিফা র্যাংকিংয়ে ৪০তম স্থানে থাকা দলটি।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে মেসির দূরপাল্লার শট গোলপোস্টের এক আঙুল পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জুলিয়ান আলভারেজের শট চিলির গোল রক্ষক ক্লাউডিও ব্রাভো ফিরিয়ে দিয়ে গোলপোস্ট সুরক্ষিত রাখেন।
চিলি ম্যাচের ছন্দ পায় দ্বিতীয়ার্ধে। গোলমুখে একাধিক সুযোগ তৈরি করেন। কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রহরী এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ছিলেন উপস্থিত। ৭-৮ মিনিটের ব্যবধানে চিলি তিনটি সুযোগ তৈরি করে। শট নেন রদ্রিগো এচেভেরিয়া। কিন্তু মার্টিনেজ দেয়াল ভাঙতে পারেনি।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরাও গোলের একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু তাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছিল। দলের অধিনায়ক মেসিও সুযোগ নষ্টের মিছিলে যোগ দেন। তবে মার্টিনেজ মাঠে নেমে হিসেব পাল্টে দেন। গোল করে দলকে দেন বিজয়ের স্বাদ। যোগ করা সময়ে ডি মারিয়ার পাস থেকে আরেকটি গোল করার সুযোগ হয়েছিল তার। কিন্তু ফিনিশিংয়ে ঘাটতি চোখে পড়ে। গোলমুখে ২২ শটের মধ্যে ৯টি ছিল অন টার্গেটে। ৬২ শতাংশ বল দখল করেও আর্জেন্টিনা একটি গোলের বেশি দিতে পারেননি।
দুই ম্যাচেই আর্জেন্টিনা প্রথমার্ধে গোল পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ছন্দ পেতেও নেয় সময়। দুই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেলেও পারফরম্যান্সে বড় ঘাটতি আছে স্পষ্ট। শিরোপা ধরে রাখতে হলে স্কোলানিকে সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন