মেসি-আলভারেজের নৈপুণ্যে ফাইনালে আর্জেন্টিনা
আরেকটি ফাইনাল, আরেকটি মহামঞ্চ, আরেকবার আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার এবারের আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে নেমে আবারও ফাইনালের মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে লিওনেল স্কালোনির দল। প্রথম সেমি-ফাইনালে তারা ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে কানাডাকে।
আর্জেন্টিনার হয়ে গোল দুটি করেন জুলিয়ান আলভারেজ ও অধিনায়ক লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধে দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন আলভারেজ। দ্বিতীয়ার্ধে এবারের আসরে নিজের প্রথম ও দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি।
এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ও ৩০তম বারের মতো কোপা আমেরিকার ফাইনালের মঞ্চে পৌছালো ‘আলবিসেলেস্তে’রা। এবার ফাইনালে ওঠার মধ্য দিয়ে গেল এক দশকে ষষ্ঠবারের মতো বড় আসরের ফাইনালে পা রাখলো আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে ৩ বার অংশ নিয়ে দুইবার ও কোপায় ৫ বার অংশ নিয়ে চারবার ফাইনালে উঠলো মেসিরা।
আজ বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা ও কানাডা। ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে নিজেদের আধিপত্য জানান দেয় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা রক্ষণে জোর দেওয়ায় কানাডাও বল দখলের লড়াইয়ে প্রায় সমতায় চলে আসে।
পুরো ম্যাচে ৫১ শতাংশ বল দখলে রাখে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বিপরীতে ৪৯ শতাংশ বল পায়ে রাখে কানাডা, যেটা প্রথমার্ধে ছিল ৪১ শতাংশ। আর্জেন্টিনা ১১টি শট নিয়ে ৩টি লক্ষ্যে রেখে দুই গোল আদায় করে নেয়। কানাডাও ৯টি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রেখেছিল, তবে কোনো গোল পায়নি তারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা বল দখলে রাখলেও প্রথম আক্রমণ করে কানাডা। তবে জ্যাকিব শাফেলবার্গের বল লক্ষ্যে থাকেনি। সপ্তম মিনিটে আবারও মিস করেন শাফেলবার্গ। বিপরীতে দ্বাদশ মিনিটে আক্রমণ শাণিয়ে মিস করেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসিও।
সপ্তাদশ মিনিটে দারুণ একটি পাস দিয়েছিলেন ডি পল। আলভারেজ বল পেয়েছিলেন ৩৫ গজ দূরে। সেখান থেকে তার ডানপায়ের শট মিস করে লক্ষ্যের সীমানা। ঠিক এর পাঁচ মিনিট পরেই শাপমোচন করেন বড় মঞ্চের তারকা আলভারেজ।
ম্যাচের ২২তম মিনিট মাঝমাঠে বল দখলে নিয়ে ডি পলের চোখ খুঁজে নিলো আলভারেজকে। ফাঁকায় দাঁড়ানো আলভারেজও বুঝে নিলেন ডি পলের ইঙ্গিত। থ্রু বলটা উড়িয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের সেনানি ডি পল। এক পায়ে সেটা নামিয়ে দুইজনকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেন আলভারেজ।
ম্যাচের প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আরও কয়েকটি আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা ও কানাডা। তবে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। তাতে এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আসরের হট ফেভারিটরা।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে আর্জেন্টিনা মনোযোগী হয় রক্ষণ সামলে আক্রমণে। এই সুযোগে বল দখলের দিকে নজর দেয় কানাডা। তবে আর্জেন্টিনার কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হয় প্রথমবার কোপার সেমি-ফাইনালে ওঠা উত্তর আমেরিকার দেশটি। তাতেই ৫১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন মেসি।
৫১তম মিনিটে কানাডার ডি-বক্সে জটলার মধ্যে এনজো ফার্নান্দেজ বল বাড়ান মেসির দিকে। বামপায়ের আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন ইন্টার মায়ামি তারকা। সেই সঙ্গে ইঙ্গিত দিলেন ফাইনালের আগে ফর্মে ফেরার।
ম্যাচের বাকি সময়ে বেশ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে কানাডা। তারা বল দখলের জন্য আর্জেন্টাইনদের শরীরী ভাষায় আক্রমণ করে। ফলাফল দেখা যায় ম্যাচের কার্ডের দিকে তাকালে। প্রথমার্ধে মাত্র একটি হলুদ কার্ড পাওয়া কানাডা দ্বিতীয়ার্ধে পেয়েছে তিন হলুদ কার্ড। শেষে আর কোনো গোল না হওয়ায় দুই গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন মেসিরা।
ঢাকা/বিজয়