প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পেয়ে আপ্লুত রুয়েল
যাওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ায়। এইচপি দলের হয়ে খেলার কথা ছিল পাকিস্তান শাহীনস এবং অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশের কয়েকটি দলের বিপক্ষে। কিন্তু রুয়েল মিয়ার ভাগ্যটাই দেখুন!
এইচপি দলে সুযোগ না পেয়ে মন খারাপ করা রুয়েলের ভাগ্য খুলে গেল বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে। সেখানে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বিপক্ষে দ্যুতি ছড়িয়ে তার ঠিকানা এখন বাংলাদেশ ‘এ’ দলে। বাঁহাতি পেসার পাকিস্তানে উড়াল দেওয়ার অপেক্ষায়।
রূঢ় সত্য হলেও সত্য, অস্ট্রেলিয়ায় না গিয়ে ভালোই হলো রুয়েলের! স্বীকার করে নিতে সেকেন্ড সময় নিলেন না এই তরুণ পেসার, ‘সত্যিই তাই। অস্ট্রেলিয়ায় যেতে না পেরে খুব মন খারাপ হয়েছিল। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কি হবে। এখন তো মনে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় না গিয়ে আমার ভাগ্যটাই খুলে গেল। ‘এ’ দল তো জাতীয় দলের পরের দলই। এটা তো বিশাল পাওয়া আমার জন্য। প্রত্যাশার চাইতেও বেশি।’
অস্ট্রেলিয়ায় সুযোগ না পেয়ে মন খারাপ হলেও আশা ছাড়েননি রুয়েল। তার কণ্ঠেই শুনুন বাকিটা, ‘এইচপিতে যখন ছিলাম না তখন খারাপ লাগা স্বাভাবিক। কারণ, আমি অনেক দিন পর ঘরোয়া লিগে ভালো করে এইচপিতে সুযোগ পেয়েছিলাম। ক্যাম্পেও আমি ভালো করেছিলাম। বাংলা টাইগার্সে যখন সুযোগ আসলো তখন আমার মনোযোগ আরও বেড়ে গেল। আমি খেলায় আরও আগ্রহ বাড়িয়ে দিলাম। আমাকে কামব্যাক করতে হবে। মানসিকভাবে শক্ত ছিলাম। এজন্য আমার অনুশীলন, দুই দিনের ম্যাচের পারফরম্যান্সও ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ।’
‘এ’ দল নিয়ে রুয়েলের উচ্ছ্বাস টের পাওয়া গেল ফোনের অপরপ্রান্তে, ‘এ’ দল আমার জন্য বিরাট কিছু। এটা জাতীয় দলের পরের দলটাই। তার মানে আমি সঠিক পথেই আছি। এখান থেকে কোনো ভুল না করলে আমি সামনে এগিয়ে যেতে পারবো আশা করছি। সেই বিশ্বাস আমার আছে। ভালো সুযোগ-সুবিধা এখানে পাবো, নিজেকে তৈরি করার আরও সুযোগ হবে। নির্বাচক, কোচরাও থাকবেন। সব মিলিয়ে আমি খুশি।’
বাঁহাতি পেসারের বোলিংয়ে মূল শক্তি দুই দিকের সুইং। বল ভেতরে নেওয়া ও বাইরে বের করে নেওয়ার ক্ষমতা দারুণ। দুদিকে সুইং করানোর কারণে সাফল্যের হারটা বেশি। দুদিনের ম্যাচে মুশফিকুর রহিমকে এক স্পেলে কঠিন সময় দিয়েছেন। বল ভেতরে ঢুকিয়েছেন। বের করে নাস্তানাবুদ করেছেন। এজন্য মুশফিকের বাহবাও পেয়েছেন।
নিজের বোলিং নিয়ে রুয়েল বলেছেন, ‘আমার পেস বোলিংয়ে সুইং ন্যাচারাল। উইকেটের দুদিকে আমি সুইং করাতে পারি। সেটা নতুন বলেও পারি আবার বল পুরনো হলেও সেই ধার থাকে। নিজের বোলিংয়ে এদিকটাতেই আমি বেশি নজর দেই।’
‘মুশফিক ভাই তখন ক্রিজে মাত্রই এসেছিলেন। ছোট একটি স্পেল করেছিলাম। বল দুদিকে সুইং করে একটু কঠিন সময় দিয়েছিলাম। একটু এদিক-সেদিক হলে হয়তো উইকেটও পেয়ে যেতাম। উনি বলেছেন বোলিং ভালো হয়েছে। মুমিনুল ভাইও বলেছেন বোলিং ভালো হয়েছে।’
দুই দিনের ম্যাচে ৩ উইকেট পেয়েছেন রুয়েল। দুই ইনিংসে এনামুল হক বিজয়কে নতুন বলে ফিরিয়েছেন। আরেকটি পেয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মামুনের উইকেট। লাল বলের ক্রিকেটে রুয়েলের মনোযোগ বেশি। সেদিকে ফোকাস রেখে ক্যারিয়ার আগাতে চান প্রতিশ্রুতিশীল পেসার, ‘আমি লাল বলের ক্রিকেট পছন্দ করি। আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট রেকর্ডও ভালো। সব ফরম্যাটেই আমার মনোযোগ আছে। তবে টেস্ট ক্রিকেট আমি পছন্দ করি। এটায় মর্যাদা বেশি। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।’
ইয়াসিন/আমিনুল