সাকিবের জন্য কী অপেক্ষা করছে?
কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সফর শেষ। এলিমিনেটর ম্যাচে ওয়াকওভার পেয়ে টরেন্টো ন্যাশনাল এগিয়ে যায়। সাকিবের দল বাংলা টাইগার্স মিসিসাউগা বাদ পড়েছে। ১২ আগস্ট পর্যন্ত কানাডায় খেলার অনাপত্তিপত্র পেয়েছিলেন সাকিব। যা শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। নানা জটিলতার কারণে সাকিবের ভবিষ্যৎ পড়েছে অনিশ্চয়তায়।
সদ্য ভেঙে যাওয়া সংসদের সাংসদ ছিলেন সাকিব। ক্রিকেটার ও সাংসদ, দুটি দায়িত্ব সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা এখন আড়ালে। ক্রিকেটার সাকিবের ভবিষ্যৎ কী সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের।
কিছুদিন পরই বাংলাদেশ দল যাবে পাকিস্তানে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই টেস্ট খেলতে। বাংলাদেশ সফরের দল এখনও ঘোষণা করেনি বিসিবি। সাকিব দুই টেস্টে খেলার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন বিসিবিকে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তিনি খেলবেন কিনা কিংবা তাকে নেওয়া হবে কিনা সেটা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তাকে দলে রাখা না রাখার প্রশ্ন উঠছে কেবল তার রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে। সেই কারণে তার জায়গাটা এখন নড়বড়ে।
১২ আগস্টের পর বিসিবির সঙ্গে সাকিবের আলোচনা হওয়ার কথা। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কানাডা থেকে দুবাই হয়ে পাকিস্তানে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা সাকিবের। সরকারের পালাবদলে এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি বিসিবির। ফলে সাকিবের জন্য কী অপেক্ষা করছে তা এখন রয়েছে অনিশ্চয়তায়।
একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে সাকিবের ফিটনেস নিয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, মেজর ক্রিকেট লিগ ও কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের পারফরম্যান্স ছিল গড়পড়তা। সঙ্গে ওজন বাড়িয়েছেন এ সময়ে। পাঁচদিন খেলার মতো শারীরিক এবং মানসিক ফিটনেস সাকিবের রয়েছে কিনা সেটা নিয়ে ক্রিকেট কর্তারাও দ্বিধান্বিত।
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নিয়মিত ফিটনেস ট্রেনিং এবং টেস্ট দিয়ে থাকেন। জাতীয় দলে খেলার বাইরে এসব কর্মকাণ্ডে সাকিব বলতে গেলে থাকেনই না। শেষ ছয় মাসে ক্রিকেটাররা দুটি ফিটনেস টেস্ট দিয়েছেন। শুধু জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাই নন, আশেপাশের ক্রিকেটাররাও ছিলেন। কিন্তু একটিতেও ছিলেন না সাকিব। নিজের ক্রিকেটের বাইরের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকাতেই তার এই অনুপস্থিতি।
এখন প্রবল চাপে থাকায় তার ফিটনেস এবং মাঠের বাইরের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এক মহল। তবে ক্রিকেট বোর্ড তাকে আগের মতোই মূল্যায়ন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেজন্য আপদকালীন সময়ে তার পাশেই থাকবে। সূত্র বলছে, পাকিস্তান সফরে সাকিবকে রেখে দল সাজানো হচ্ছে।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাকিব কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তান উড়াল দেবেন। পাকিস্তান সফরের পরও তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। জাতীয় দলের পরবর্তী সূচি ভারত সফর। যেখানে তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। আপাতত দেশের বাইরে দুটি সফরে সাকিবকে পাওয়া যাচ্ছে তা মোটামুটি নিশ্চিত।
পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে চায় দুই পক্ষ। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা সুপারস্টারকে কঠিন সময়ে আরো চাপে না ফেলে পাশে থাকার কৌশল বিসিবির। তাতে লাভটা সাকিবেরও, বাংলাদেশেরও। তাকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দুয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে।
বোর্ডের ভাবনাটা কেমন তা কিন্তু ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস আগেই পরিস্কার করেছেন, ‘সাকিব এখন একজন ক্রিকেটার। রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী সাকিব আর সংসদ সদস্য নন। উনি এখন ক্রিকেটার।’
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়