মুখ খুললেন মাশরাফি
‘ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, আমি একেবারে ব্যর্থ হয়েছি’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের নবম দিনে এসে নীরবতা ভাঙলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি আওয়ামী লিগ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন চলতি বছর।
মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) নট আউট নোমান নামে একটি ক্রীড়া বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেলে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন মাশরাফি। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিজের চুপ থাকাসহ, নড়াইলে তার বাড়ি পোড়ানো নিয়েও কথা বলেন।
সরকার যখন নিরীহ ছাত্রদের গুলি করে মারছিল মাশরাফি চুপ থেকেছেন কেন? এমন প্রশ্নে শুরুতেই নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করেন নড়াইল-২ আসন থেকে সাংসদ হওয়া মাশরাফি।
‘দেখেন এগুলো উত্তর দেওয়াটা আমার কাছে মনে হয় শুধু শুধু হবে। যদি এক কথায় উত্তর দেই, তাহলে বলতে হবে আমি আসলে ব্যর্থ হয়েছি। একেবারে ব্যর্থ হয়েছি।’
‘দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, আমি যদি কথা বলতাম, যৌক্তিক কোটা সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছিল শুরুতে, সবাই যখন চেয়েছিল আমি কথা বলি, তখন যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কার হবে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। আমার কাছে মনে হচ্ছিল, কোটা সংস্কার হবে।’
মাশরাফি চেয়েছিলেন ছাত্রদের পাশে থাকতে, তাদের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু দ্রুত ঘটনার পরিবর্তন হতে থাকায় পারেননি। আবার ভেবেছেন তার কোনো কথায় যদি আরও বেশি ঝামেলা হয়, সেটি সামাল দিতে পারবেন কী না।
‘আমি চেষ্টা করিনি, সেটা না। আমি স্ট্যাটাসের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে চাইনি সত্যি কথা। আমি চেয়েছিলাম ছাত্রদের সাথে কথা বলতে, আমি চেয়েছিলাম তাদের আলোচনার মাধ্যমে কোনো কিছু করা যায়নি। আমি যদি একটা স্ট্যাটাস দিতাম যা কিছু হয়েছে, তার থেকে কম হতো না। আমার স্ট্যাটাসের কারণে বাঁ কোনো একটা ভুল পদক্ষেপের কারণে জিনিসটা আরও বড় হয়ে যায় সেটা সামাল দেওয়ার সামর্থ্য আমার আছে কী না।’
‘কিন্তু তার পরে যে ঘটনাগুলো ঘটতে থাকলো, তখন আসলে এমন একটা পরিস্থিতি হলো যে, যখন সবাই চাচ্ছিল আমি একটা স্ট্যাটাস দেই, পাশে থাকি। তখন পরিবেশটা এমন একটা পর্যায়ে গিয়েছিল, আমি যদি একটা স্ট্যাটাস দেই, আমি যদি যেকোনো কিছু লিখি সেটাকে কেন্দ্র করে যদি আরও বড় কোনো কিছু হয়ে যায়। আসলে এই জিনিসটা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে কী না। সবকিছু মিলিয়ে ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটেছে, আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি’ -আরও যোগ করেন মাশরাফি।
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বিকেলে নড়াইলে মাশরাফির ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তার বাবা-মা বের হন এক কাপড়ে। মাশরাফি নিজের পরিবার নিয়ে এখন ঢাকাতে নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন।
রিয়াদ/আমিনুল