সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত বিসিবির প্রধান নির্বাহী
শুরুতেই তিনি বলে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিসিবি পরিদর্শন প্রসঙ্গ ছাড়া যাতে কোনো প্রশ্ন না হয়! কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সীমায় সাংবাদিকরা থাকেননি। একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেন বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনকে।
সুজন যেন অসহায় হয়ে পড়েন। কোনো প্রশ্নেরই সদুত্তর দিতে পারেননি। প্রায় সব প্রসঙ্গেই বল ঠেলে দিয়েছেন বোর্ড কিংবা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কোর্টে। তার জবাবদিহিতার জায়গা থেকেও এড়িয়ে গেছেন দায়।
সোমবর (১৯ আগস্ট) বিকেলে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারের সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন নিজাম উদ্দিন।
তামিম ইকবালের প্রসঙ্গ আসে বেশ কয়েকবার। ক্রীড়া উপদেষ্টাকে বিসিবির সব অবকাঠামো ঘুরে-ফিরে দেখিয়েছেন তামিম। কোন দায়িত্ব নিয়ে তামিম এ কাজ করেন এমন প্রশ্নে বিসিবি প্রধান নির্বাহীর উত্তর, ‘এই বিষয়টা আসলে আমি অবগত না কি পর্যায় থেকে…উনি আসছে, উনার সঙ্গে কথা হয়েছে। সব সময় পাশে উনি (তামিম) ছিলেন। এর বাইরে কিছু বলতে পারব না।’
নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগ, বিসিবির অন্তর্বর্তী কমিটির প্রসঙ্গ এলে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এসব বিষয় পাবলিক্যালি আমার বলার সুযোগ নেই। আগেই বলেছি আজকের প্রেস কনফারেন্সটা আজকের পরিদর্শনের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকুক।’
পাপনের সঙ্গে যোগাযোগ আছে কী না এই প্রশ্নের উত্তরও নিজাম উদ্দিন দিয়েছেন না বোধক, ‘এটা পুরোপুরি ভেতরকার বিষয়। আমাদের যদি কোন বিষয় থাকে তাহলে বোর্ড…যেহেতু জানেন যে এখন আমাদের একজন মাননীয় উপদেষ্টা আছেন। এ বিষয়গুলো বা এই রকম ইস্যুগুলোতে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যে দিকনির্দেশনা আসবে আমরা সেভাবে এগোবো। এখন কিছু বলার মতো অবস্থা আমার নেই।’
অন্তর্বর্তী কমিটি নিয়ে নিজামউদ্দিন বলেন, ‘আমি যতদুর জানি যে আমাদের লিগ্যাল ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যারা আছেন তারা এ ব্যাপারটা দেখছেন। তারা যেভাবে ঠিক করবেন সে অনুযায়ী হবে।’
বিসিবির আভ্যন্তরীণ অডিট বিষয়ে একটি প্রশ্ন ওঠে। প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত জানতে চাইলেও জানাতে পারেনি, ‘আমাদের যেটা ইন্টার্নাল অডিট হয় এবং এক্সটার্নাল অডিট হয় যেটা। ইন্টার্নাল অডিট হয় নির্দিষ্ট করে কত বছর বলতে পারবো না। অনেকদিন ধরেই করছে ইন্টার্নাল অডিট। এটা (১০/১২ বছর কিনা) ফাইল দেখে বলতে হবে।’
অডিট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার আত্মীয়তা নিয়েও উঠে প্রশ্ন, ‘না, এটা জানা নেই আমার কাছে (এই প্রতিষ্ঠানের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে কিনা)।’
অডিট প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে তার এখতিয়ার নেই বলে জানান প্রধান নির্বাহী, ‘এই ধরনের সিদ্ধান্ত বা পলিসিগত ব্যাপারগুলো কিন্তু সিইও দেখেন না এটা পুরোটা বোর্ড দেখে। না, একদিক দিয়ে বলব আমি চেষ্টা করিনি।’
শেখ হাসিনার পতনের পর বিসিবি অফিসে ঢুকে ফাইল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাহীর উত্তর, ‘এটা আমি মিডিয়াতেই দেখেছি। এটা নিয়ে এখনও কথা বলার সুযোগ হয়নি। আমরা কথা বলব।’
তার ফোন কলের মাধ্যমে দুজন ক্রিকেটারকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এদের মধ্যে একজন বিসিবি প্রধান নির্বাহীর আত্মীয় বলে জানা যায়। এই প্রসঙ্গে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আসলে এই রকম খবর আমি এখানে শুনলাম। এ ধরনের বিষয়ে আমি কখনই যুক্ত হই না। এ ব্যাপারে কেউ যদি বলে থাকে এটা ঠিক না।’
রিয়াদ/আমিনুল