সাকিবকে ক্রিকেটার হিসেবে মূল্যায়ন বাংলাদেশের, সিরিজে স্পেশাল কিছুর প্রত্যাশা

রাজনৈতিক পালাবদলে পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছিল, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধ্রুবতারা সাকিব আল হাসানের দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে! অটোমেটিক চয়েজ হিসেবে বাংলাদেশ দলে একটি জায়গা তার জন্য পাকাপাকি হয়েই ছিল। দল থেকে কখনো বাদ পড়তে হয়নি তাকে। পারফরম্যান্স খারাপের জন্য একাদশের বাইরেও থাকতে হয়নি।
কিন্তু সরকারের পালাবদলে সেই জায়গাটা হয়ে যায় নড়বড়ে। কেননা ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাংসদ ছিলেন সাকিব। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিনি ছিলেন একেবারেই নিশ্চুপ।
ক্রিকেটার, ব্যবসায়ীর বাইরে সাকিবের আরও এক পরিচয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সবকিছুই সমানতালে চলছিল। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে আড়ালে চলে যেতে হয় সাকিবকেও। তবে আশার কথা, বাংলাদেশ দল তার জায়গা কেড়ে নেয়নি। ক্রিকেটার হিসেবে, নিজের মেধা দিয়েই সাকিব জায়গা পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে টানা অনুশীলন করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে তাকে নিয়েই মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সাকিবের থেকে এই টেস্ট সিরিজে স্পেশাল কিছুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ। এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সঙ্গে যোগ করলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা কিংবা সাংসদ থেকে সরে যাওয়ায় তার পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব রাখবে না।
মঙ্গলবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে বলেছেন, ‘আমি তা মনে করি না (রাজনৈতিক পালাবদলে সাকিবের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়ে কি না)। সে (সাকিব আল হাসান) পেশাদার ক্রিকেটার। সত্যি বলতে আমরা তাকে ক্রিকেটার হিসেবেই মূল্যায়ন করি।’
চোখের সমস্যার কারণে মাঠের চিরচেনা সাকিব আড়ালে। সামনে আসছে চরম নড়বড়ে এক সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যিনি বড্ড অচেনা। ব্যাটিংয়ে অনেক কিছু চেষ্টা করেও পুরোনো ছন্দ মেলাতে পারছেন না। তাল-লয়-সুর একেবারেই বেমানান। বোলিংয়েই যা একটু-আধটু পারফর্ম করে সাকিব টিকে আছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লম্বা সময় কাটানো এমন সাকিবকে দেখা গেছে খুব কম সময়ই। তবে তার মেধা, প্রজ্ঞা, সামর্থ্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই কারও। অধিনায়ক তার ওপর রাখছেন পূর্ণ আস্থা, ‘এই খেলাটা সে লম্বা সময় ধরে খেলছে। সে তার ভূমিকা সম্পর্কে অবগত। সে জানে কিভাবে তাকে প্রস্তুত হতে হবে। আমি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো চিন্তা করছি না। আশা করছি সে এই সিরিজে স্পেশাল কিছু করবে।’
শুধু পাকিস্তান সিরিজ নয়, সামনে এ বছর যতগুলো সিরিজ আছে সবগুলোতেই তাকে পাওয়া যাবে। এর আগে বেছে বেছে খেলার কথা বলেছিলেন সাকিব। বয়স বিবেচনায় ওয়ার্কলোড কমানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারকে এ বছর সব খেলায় পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচ পর ভারতের মাটিতে দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুই টেস্ট এবং তিন ওয়ানডের জন্য আতিথেয়তা দেবে। বছর শেষে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে খেলতে। ৩৮ পেরুনো সাকিবকে সবগুলো ম্যাচে খেলবেন যা নিঃসন্দেহে বিরাট খবর।
ইয়াসিন/আমিনুল