বিশ্বাসের জোরে সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা বাংলাদেশের
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে মন জয় করে মাঠে শুধু ফলই নিজেদের পক্ষে আনেনি বাংলাদেশ, ইতিহাস গড়ে এমন এক জয় এনে দিয়েছে যার প্রতীক্ষায় ছিল ২৩ বছর, ২১ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। পরাজয়ের স্তুপ, ব্যর্থতার দেয়াল, অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে যে সূর্যের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ তা হৃদয়ে দোলা দিয়েছে, হাসি ফুটিয়েছে মুখে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশ ভালো নেই! অথচ পাকিস্তানের মাটিতে একটি টেস্ট জয়ে আনন্দের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে মানচিত্রের প্রতি বর্গইঞ্চিতে। প্রথমবার পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তান দুর্গ ভাঙার আনন্দ একটু বেশি তো হবেই। এই আনন্দযাত্রা অব্যাহত রাখতে চায় বাংলাদেশ। জিততে চায় পরের ম্যাচ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আরেকটি লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারায় উদগ্রীব গোটা দল।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম ম্যাচ জয়ের পরপরই সিরিজ জয়ের কথা বললেন বুক ভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে, ‘পরবর্তী ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচ শেষ এবং আমরা খুব উপভোগ করেছি। পরের ম্যাচ কিভাবে জিতব সেটার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি, পরের ম্যাচ আমরা জিততে পারব।’
এজন্য প্রক্রিয়াগুলো ঠিকঠাক অনুসরণ করা বলেছেন অধিনায়ক,‘এটা পুরোটাই প্রক্রিয়ার ব্যাপার। আমরা কিভাবে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাবো এবং সেশন বাই সেশন চিন্তা করছি। শান্ত থাকা এবং প্রতি সেশন নিয়ে চিন্তা করা গুরুত্বপূর্ণ।’
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের লড়াইয়ের শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। সিলেটে হারিয়েছিল নিউ জিল্যান্ডকে। এরপর অবশ্য ব্যাকগিয়ারে চলা। নিউ জিল্যান্ড ঢাকায় ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরায়। এরপর শ্রীলঙ্কা দুই টেস্টে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে। ফলে আবার সাদা পোশাকে নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হয়। সেসব উত্তর একটু দেরিতে হলেও রাওয়ালপিণ্ডিতে দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২৪ বছরে বাংলাদেশ টেস্টে জিতেছে ২০ ম্যাচ। দেশের বাইরে সপ্তম।
দেশের বাইরে জয়ের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে মুখিয়ে টিম বাংলাদেশ, ‘আমরা দেশের বাইরে খুব বেশি ম্যাচ জিততে পারি না। আমার মনে হয় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষের জয়ের পর এবার জিতলাম। যখন এই বছর ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরিকল্পনা করেছিলাম তখন বাইরের ম্যাচ কিভাবে জিততে পারি বা ড্র করতে পারি, ঘরের মাঠে জিততে পারি- এই রকম একটা পরিকল্পনা ছিল। আল্লাহ রহমতে ভালো একটা ফল এসেছে। এই জয়ের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মধ্যে বিশ্বাস আরও বাড়বে। দর্শকদের মধ্যে। আশা তো থাকবে সামনের ম্যাচ সিরিজগুলোতে কিভাবে আরও ভালো খেলতে পারি।’
পাকিস্তানের মাটিতে গ্যালারিতে ভালো সমর্থন পেয়েছেন শান্তরা। বাংলাদেশের পতাকা উড়েছে পতপত করেছে। গ্যালারিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জার্সি গায়ে উল্লাস করেছেন। তাদের থেকে দ্বিতীয় টেস্টেও একই সমর্থন চান শান্ত, ‘আমাদের সমর্থকরা যখন সমর্থন দিতে আসে তখন আমরা অনেক খুশি হই। এই টেস্টের আগে বলেছিলাম যেখানে যাই সব সময় সমর্থকরা আমাদের সমর্থন দিতে আসে। তাদেরকে ধন্যবাদ। আশা করি, তারা পরের ম্যাচেও আমাদের সমর্থন দিতে আসবেন।’
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়