ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

এবার ‘লুকিয়ে’ রাখলেন না মাহমুদউল্লাহ

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ৮ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ২০:১৯, ৮ অক্টোবর ২০২৪
এবার ‘লুকিয়ে’ রাখলেন না মাহমুদউল্লাহ

ইসরু উদানার পায়ের ওপরের লেন্থ বল দারুণ এক ফ্লিক শটে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে উঠতে শেষ দুই বলে এক ছক্কার সমীকরণ মেলাতে মাহমুদউল্লাহর হাওয়ায় ভাসানো ওই শট গোটা বাংলাদেশকে উল্লাসে ভাসিয়েছিল। ফাইনালের টিকিট নিশ্চিতের পর মাহমুদউল্লাহর শূন্যে লাফের পেছনে হিরোর ব্র্যান্ডিংয়ের ছবিটা বাংলাদেশের পোস্টার হয়ে গিয়েছিল। দলকে ফাইনালে তোলায় মাহমুদউল্লাহর সেদিনের ক্যামিও ইনিংস তাকে দিয়েছিল বীরের মর্যাদা।

এর আগে পরে অনেক ঘটনাই ঘটেছে ক্রিকেটে। অনেক উত্থান-পতন হয়েছে ক্যারিয়ারে। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির সেই রাত মাহমুদউল্লাহকে অমরত্বের স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পা রাখা বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১৭৭ টি-টোয়েন্টি খেলেছে। যেখানে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৯ ম্যাচ। লম্বা এই সফর এখন শেষ গন্তব্যে এসে পৌঁছেছে। ভারতের দিল্লি ও হায়দরাবাদে দুটি ম্যাচ খেলেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়ে নিচ্ছেন তিনি। দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ এই ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২১ সালে মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছিলেন। তিন বছর পর টি-টোয়েন্টি ছাড়ছেন। রইল বাকি ওয়ানডে। বিসিবির সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ওয়ানডে থেকেও সরে যাবেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেট থেকে তার অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছিল। ২০২১ সালের জুলাইয়ে ১৬ মাস পর টেস্ট দলে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।

আরো পড়ুন:

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে বলা হয়েছিল তাকে। বাদ দেওয়া হয়েছিল লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে। সেই মাহমুদউল্লাহ ব্যাকআপ হিসেবে দলে ফিরে একাদশে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেন। দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করে ১৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। এরপর ম্যাচ চলাকালীন তৃতীয়দিন ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের জানিয়ে দেন তিনি অবসরে যাচ্ছেন। পঞ্চম দিন সকালে ক্রিকেটাররা তাকে গার্ড অব অনার দেয়।  ড্রেমিংরুম থেকে মাঠে প্রবেশের পথে তামিম, সাকিব, মুমিনুল, লিটনরা দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান। মাহমুদউল্লাহ হাসিমুখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

অবসরের সিদ্ধান্ত জানার পর ড্রেসিংরুমের অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কেউই বিশ্বাস করতে পারছিল না। দলের প্রত্যেক আলোচনা করে পণ করে, যে করেই হোক ম্যাচটা জিততে হবে। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ী টেস্টে জয় উপহার দিতে হবে। যেই বলা সেই কাজ। হারারে টেস্ট জিতে বাংলাদেশ প্রথমবার জিম্বাবুয়ের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতে নেয়। এবার মাহমুদউল্লাহ আড়াল থেকে নয়, বলে কয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিচ্ছেন। দিল্লিতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ভারতকে টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছিল। মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে এসেছিল জয়সূচক রান। যেই জয়ের স্মৃতি এখনও তরতাজা। বিদায় বলে দেওয়া মাহমুদউল্লাহ শেষটা টেস্ট ক্রিকেটের মতো রাঙাতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।

এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, বিশ্বকাপ মঞ্চে অধিনায়কত্ব করেছেন। সময়গুলো তখন ভালো কাটেনি। যার কারণে অধিনায়কত্ব, জায়গা হারাতে হয়েছে। তবে বারবারই তিনি ফিরেছেন আপন চেহারায়, দাপটের সঙ্গে। শেষটা একই রঙে করতে পারলে নিশ্চিতভাবেই আনন্দটা দ্বিগুণ হবে।

ইয়াসিন/আমিনুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়