সাগরিকার পাড়ে হাসান-তাইজুলদের চোখে ‘সরষে ফুল’
ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে || রাইজিংবিডি.কম
‘এখন দলের ভাষ্য হচ্ছে আমরা আগামীকাল সকালে ফিরব এবং দ্রুত উইকেট নিয়ে তাদের অলআউটের চেষ্টা করব’ -প্রথম দিন শেষে এভাবেই বলছিলেন বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ ফিল সিমন্স।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ভালো যায়নি বাংলাদেশের। টনি ডি জর্জি-ট্রিস্টান স্টাবসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চোখে সরষে ফুল দেখেছেন হাসান মাহমুদ-তাইজুল ইসলামরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে ৮১ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান করে সফরকারী দল। ১৪১ রানে টনি ডি জর্জি ও ডেবিড বেডিংহাম ১৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন।
চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিং স্বর্গ বলেই বিবেচিত। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। টস জিতে এইডেন মার্করামও নেন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। প্রথম সেশনে পেসাররা ছিলেন নিস্প্রভ। দলীয় ৬৯ রানে মার্করামকে ফিরিয়ে উইকেটের পতন ঘটান তাইজুল ইসলাম। মার্করামের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান।
এরপর শুরু হয় অপেক্ষা। নতুন ব্যাটার ট্রিস্টানকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ে ছড়ি ঘোরাতে থাকেন টনি। প্রথম সেশন কাটিয়ে দেন কোনো বিপদ ছাড়া। মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় সেশনে এসেও তাদের টলানো যায়নি। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে এসে সেঞ্চুরির দেখা পান টনি। ১৪৬ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতক।
চা বিরতির পর এসে সেঞ্চুরির দেখা পান ট্রিস্টানও। ১৯৪ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান পঞ্চম ম্যাচ খেলতে নামা ট্রিস্টান। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিদূর এগোতে পারেননি। ১০৬ রানে তাইজুলের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। তার আউটে ভাঙে ২০১ রানের জুটি। এশিয়ার মাটিতে দ্বিতীয় উইকেটে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় রেকর্ড জুটি। সর্বোচ্চ ২১২।
ট্রিস্টান ফিরলেও টনিকে ফেরানোর কোনো মত্র খুঁজে পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। বেডিংহামকে সঙ্গে নিয়ে শেষ করে আসেন দিন। শেষ দিকে তাদের মাঝে ছিলে মেরে খেলার প্রবণতা। ৪৪ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন দুজনে। টনির শতকের পেছনে অবশ্য অবদান আছে অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের। সপ্তম ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন, কিন্তু গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি অঙ্কন।
বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। সর্বোচ্চ ৩০ ওভার বোলিং করেছেন তিনি। এ ছাড়া হাসান মাহমুদ-নাহিদ রানা সমান ১৩ ওভার বোলিং করে উইকেটের দেখা পাননি। ২১ ওভার করা মিরাজও ছিলেন উইকেটশূন্য। পার্ট টাইম বোলার মুমিনুল হক করেন ৪ ওভার, তিনিও ফিরেছেন খালি হাতে।
কোচ বলেছেন, ‘একটু তো হতাশাজনকই। তবে এটা ব্যাটিংয়ের জন্য দুর্দান্ত উইকেট। বোলাররা ভালোই করেছে। কিছু সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে, যা কাজে লাগালে ৪-৫ উইকেট পড়ে যেতে পারত। দিনটা কঠিন। মুদ্রার উল্টো পিঠ। অবশ্যই হতাশাজনক।’
বাংলাদেশ আজ নেমেছিল তিন পরিবর্তন নিয়ে। ১০৬তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ক্যাপ পান উইকেটরক্ষক ব্যাটার অঙ্কন। জ্বরের কারণে খেলতে পারেননি লিটন দাস। দলের সঙ্গে না এসে জাতীয় ক্রিকেট লিগ খেলতে যাওয়া জাকির হাসানও আছেন একাদশে।
দলের চাওয়া দ্বিতীয় দিনের সকালে দ্রুত উইকেট নেওয়া, হাসান-নাহিদরা পারবেনতো?
রিয়াদ/আমিনুল