উত্তাপের ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরিতে সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের
আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমন হতে পারে সেটা যেন ভাবাও যায় না। অধিনায়কের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, মাঠের বাইরে চলে যাওয়া, ১০ জন নিয়ে ফিল্ডিং; এসবের দেখা মিললো ওয়েস্ট ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার শেষ টি-টোয়েন্টিতে। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ ও ফাস্ট বোলার আলজারি জোসেফ। তবে এসবের ছাপ পড়লো না ম্যাচে। ব্র্যান্ডন কিং ও কেসি কার্টির জোড়া সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের জয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতে নিলো ক্যারিবীয়রা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বার্বাডোজে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। রান তাড়ায় নেমে ঝড়ের গতিতে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪২ বল বাকি রেখেই ম্যাচ শেষ করে ফেলে তারা। ১১৭ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং। কার্টি অপরাজিত থাকেন ১১৪ বলে ১২৮ রান করে।
কেনসিংটন ওভালে টস জিতে বোলিং নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দেন বোলাররা। তৃতীয় ওভারেই উইল জ্যাকসকে ফেরান ম্যাথু ফোর্ড। এরপর তিনে নামা জর্ডান কক্সকে ফেরান জোসেফ। দ্রুত ইংলিশদের এক উইকেট পতনের আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি ক্যারিবীয়দের। মাঠেই শুরু হয় ঝামেলা।
চতুর্থ ওভার শুরু করা নিয়ে শাই হোপের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন জোসেফ। বোলিং কিংবা ফিল্ডিং পজিশন নিয়েই কথা হচ্ছিলো। কালক্ষেপণ দেখে আম্পায়ার এসে তাড়া দেন দুজনকে। ফিল্ডিং পজিশন মনমতো না হওয়ায় নিজের হতাশা মাঠেই উগড়ে দেন জোসেফ। দেখা মেলে তার অগ্নিমূর্তি। হোপের দিকে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে বলতে আলাদা হয়ে যান তিনি।
পরে বুঝিয়ে তাকে ফেরান কোচ ড্যারেন স্যামি। এরপর জেকব বেথেলকে শূন্য রানে ফেরান রোমারিও শেফার্ড। ৬ রানে বিদায় নেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিয়াম ভিলিংস্টোনও। ২৪ রানেই ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে উদ্ধার করেন ওপেনার ফিল সল্ট ও স্যাম কারান। পঞ্চম উইকেটে কারানের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গরেন সল্ট।
৪০ রানে ফেরেন কারান। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ড্যান মুজলিকে নিয়ে আবারও ৭০ রানের জুটি গড়েন সল্ট। ১০৮ বলে ৭৪ রান করে ফেরেন সল্ট। প্রথম ফিফটিতে মুজলি করেন ৭০ বলে ৫৭। শেষ দিকে জেমি ওভারটন ও জোফরা আর্চারের ঝড়ে লড়াকু পুঁজি পায় ইংল্যান্ড। ২১ বলে ৩২ রান করেন ওভারটন। আর্চার অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৩৮ রান করে।
রান তাড়ায় নেমে ১৭ বলে ১৯ রান করে ফেরেন এভিন লুইস। এরপর ম্যাচের গল্প লিখতে থাকেন কিং ও কার্টি। দুজনে মিলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ৬০ বলে ফিফটি করে কিং সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১১৩ বলে। কার্টি ৬১ বলে ফিফটি করে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ঘরে পা রাখেন ৯৭ বলে।
সেঞ্চুরি পর বিদায় নেন কিং। অধিনায়ক হোপকে নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন কার্টি। কার্টি ম্যাচ শেষ করে এলেও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন কিং। ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা ম্যাথু ফোর্ড।
ওয়ানডে সিরিজের মহারণের পর দুই দল এখন মুখোমুখি হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। শনিবার (৯ নভেম্বর) ব্রিজটাউনে শুরু হবে বিশ ওভারের লড়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৬৩/৮ (সল্ট ৭৪, কারান ৪০, মুজলি ৫৭)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৩ ওভারে ২৬৭/২ (কিং ১০২, কার্টি ১২৮*)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ব্র্যান্ডন কিং।
ম্যান অব দ্য সিরিজ: ম্যাথু ফোর্ড।
ঢাকা/বিজয়