সিরিজে সমতা নাকি আফগানদের কাছে যাবে ‘নাক কাটা’
মাঠের পারফরম্যান্সের মতো মেহেদী হাসান মিরাজের কথাও যেন এলোমেলো। প্রথম ম্যাচের হারের জন্য দুষছেন উইকেটকে, আবার বলছেন অনেক দিন পর খেলতে নেমেছেন ওয়ানডেতে। শুধু তাই নয়, শারজাহতেও লম্বা সময় পর খেলার অজুহাত দিয়েছেন সাকিব আল হাসানের বিকল্প হিসেবে থাকা এই অলরাউন্ডার।
তবে বাংলাদেশের চোখ এখন শুধু সিরিজে সমতা টানার দিকে। শনিবার বিকেল ৪টায় সমতার লক্ষ্যে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। হারলেই সিরিজ চলে যাবে আফগানদের পকেটে, বাঁচামরার এমন ম্যাচে সমতায় চোখ রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই লাল সবুজের দলের সামনে।
আগের দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মিরাজও থাকতে চাইলেন সামনের দিকে, ‘দেখুন, যেহেতু আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনও দুইটা ম্যাচ আছে। সুতরাং আমরা দুইটা ম্যাচ চিন্তা না করে পরবর্তী ম্যাচটা নিয়ে ভাবছি যেটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমরা একটু ব্যাকফুটে আছি।’
ভারত সিরিজ থেকে বাংলাদেশের মাঠের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর দল যেন আটকা পড়েছে ব্যর্থতার চোরাবালিতে। আফগানদের সঙ্গেও সেই একই হাল। সিরিজ হারলে পূর্ণ হবে ব্যর্থতার ষোলোকলা।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে বাংলাদেশ আছে একটি ভালো মোমেন্টামের আশায়। মিরাজের ভাষায়, ‘আমরা প্রস্তুতিটা ওইভাবে নিচ্ছি, আশা করি যেহেতু অনেকদিন পর এই মাঠে খেলছি। ভালো মোমেন্টাম কিভাবে পেতে পারি সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
মাঠের দশা বাজে। সিরিজ শুরু করতে হয় দুই ক্রিকেটার নাসুম আহমেদ ও নাহিদ রানাকে ছাড়া। তারা যোগ দিয়েছেন বৃহস্পতিবার। জ্বরের কারণে স্কোয়াডে রাখা হয়নি অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন কুমার দাসকে। প্রথম ম্যাচে ইনজুরিতে ছিটকে যান আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। সবকিছু মিলিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট যেন পড়েছে গভীর জলে।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিকের জায়গার এক পরিবর্তন নিশ্চিত। তার জায়গায় আসছেন জাকের আলী অনিক। টি-টোয়েন্টি আর টেস্টের পর এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার এখন ওয়ানডে জার্সিতে অভিষেকের অপেক্ষায়। তিন পেসারের পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে একাদশে যদি বাঁহাতি স্পিনার নাসুমকে নেওয়া হয় তবে বাদ পড়তে পারেন রিশাদ হোসেন। প্রথম ম্যাচে ৭১ রানে আফগানদের ৫ উইকেটের পতনের পরও মিরাজ-রিশাদ এনে দিতে পারেননি ব্রেক থ্রু। স্পিনে পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে কিছুটা।
কম্বিনেশন নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘দলের সমন্বয়ের কথা যদি বলেন দেখুন, আমাদের কিন্তু অপশনও খুব বেশি নেই। লিটন দাস অসুস্থ, সে থাকলে দলের সমন্বয়টা আরও ভালো থাকতো হয়তো। যেহেতু ওইরকম সুযোগ নেই, জাকের আলীর জন্য বেস্ট অব লাক। ওর জন্য ভালো একটা সুযোগ। সুযোগ আসছে, ও যদি শতভাগ দিতে পারে অবশ্যই ওর নিজের ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো হবে।’
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও উইকেটের আচরণ একই থাকার সম্ভাবনা। সময় যত বাড়বে স্পিনাররা তত সুবিধা পাবে। অর্থাৎ মন্থর থাকবে উইকেট। প্রথম ম্যাচে যার সুবিধার শতভাগ আদায় করে নিয়েছেন মাত্রই ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নামা আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফার। নিশ্চিতভাবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের জন্য এই ডানহাতি অফ স্পিনার বড় হুমকি। সঙ্গে রশিদ খান জুজু আছেই।
বাংলাদেশ কি পারবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা ফেরাতে নাকি সিরিজ হারের সঙ্গে কাটবে নাক?
ঢাকা/রিয়াদ/বিজয়