‘কঠিন পরীক্ষায়’ কতটা আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ?
টেস্ট ক্রিকেটে সর্বনিম্ন কত রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ? ক্রিকেট ভক্তদের মুখে এই বিব্রতকর রেকর্ডটা ঠোঁটের কোণেই লেগে থাকে। যারা টুকটাক খোঁজ খবর রাখেন তারাও নিশ্চিতভাবে জানেন। উত্তরটা, ৪৩।
হ্যাঁ পাঠক ঠিকই পড়ছেন। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ৪৩ রানে অলআউট হয়েছে। বাংলাদেশকে এই ‘লজ্জা’ দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দল ৪৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। লিটন সেই ম্যাচে কেবল ২৫ রান করেছিলেন। বাকিরা সিঙ্গেল ডিজিটেই সাজঘরে। দলের চার ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতাও। রোচের ৫ উইকেটে স্রেফ এলোমেলো হয়ে যায়।
পরের সফরেও একই চিত্র। নাহ সেবার ৪৩ রানে অলআউট হয়নি। সেবার ১০৩’এর পর ২৪৫ রান করেছিল। ২০২২ সালে সবশেষ অ্যান্টিগায় খেলেছিল বাংলাদেশ। আবার দুই বছর পর বাংলাদেশ দলের পা পড়েছে ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে। এবার বাংলাদেশ কেমন করবে সেটা বিরাট প্রশ্নের। জানিয়ে রাখা ভালো, এই সফরে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম নেই। ব্যাটিং অর্ডার একেবারেই তরুণ নির্ভর। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলতে আছেন কেবল মুমিনুল হক ও লিটন দাশ। বাকিদের অনেকেরই পায়ের নিচের জমিন শক্ত হয়নি। এই স্কোয়াডের হারানোর কিছু নেই। তবে প্রাপ্তির আছে অনেক কিছু।
টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রান নেই লম্বা সময়। এবারের চ্যালেঞ্জটা ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক বেশি। সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেও বড় আত্মবিশ্বাস নিতে পারেনি বাংলাদেশ। লিটন ৩১, জাকের সর্বোচ্চ ৪৮ এবং মাহিদুল ৪১ রান করে রিটায়ার্ট হার্ট হন। ব্যাটিংয়ে যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ ছিল সেটা ঠিকঠাক করায় বাকিদের সুযোগ দিয়েছেন তারা।
জাকের ১১০ বল খেলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন। উইকেটে সবচেয়ে বেশি সময় তিনিই কাটিয়েছেন। এরপর মাহিদুল ইসলাম। ৮৭ বলে ৪১ রান করেন সমান ৪ চার ও ১ ছক্কায়। চার ও ১ ছক্কায় স্বাগতিক বোলারদের চাপে রাখেন। কিন্তু ৩১ রানে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। দুই ওপেনার ছিলেন নিষ্প্রভ। ১৯ বলে ৮ রান করে জয় লুইসের বলে জনসনের হাতে ক্যাচ দেন। জাকির ৩৪ বলে ১৫ রানে ম্যাকঅ্যালিস্টার বলে গ্রেভসের তালুবন্দি হন। মুমিনুল হক দাবি মেটাতে পারেননি। শান্তর পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া শাহাদাত হোসেন দিপুও বড় ইনিংসের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ইনিংস ৩০ বলে ২৫ রানে থেমে যায়। যা করার জাকের, লিটনও মাহিদুল করেছেন।
এবারের লড়াইটা মূল মঞ্চে। অ্যান্টিগা বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরীক্ষার মঞ্চ। দ্রুতগতির উইকেট। বাউন্সি ট্র্যাক। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভয়ের যা অন্যতম কারণ। কিছুদিন আগে ঘরের মাঠেই দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা বাংলাদেশকে নাকানিচুবানি খাইয়েছে। এবার অ্যান্টিগায় বাংলাদেশকে নিয়ে ‘বাজি ধরার’ লোক কম। তবুও আশাতেই বুক বাঁধতে হয়। বিরুদ্ধ কন্ডিশনে দলের কেউ না কেউ তো লড়বেন, সেই আশা।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল