জেতা ম্যাচ টাই করে সুপার ওভারে হারলো রংপুর

সুপার ওভারে জয়ের পর হ্যাম্পশায়ারের উচ্ছ্বাস।
টি-টোয়েন্টির এই যুগেও এমন হয়! হিসেবেনিকেশের দিকে তাকালে রংপুর রাইডার্সের পুরো ব্যাপারটা অবিশ্বাস্যই মনে হবে। ২৫ বলে প্রয়োজন ১৭ রান, হাতে ৬ উইকেট। এই অবস্থা থেকেও ম্যাচ জিততে পারলো না রংপুর। টাই করে ম্যাচ নিয়ে যায় সুপার ওভারে। সেখানে এক বল বাকি থাকতেই হেরে যায় তারা।
বাংলাদেশের প্রথম দল হিসেবে বৈশ্বিক কোনো টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে গিয়েছে রংপুর। গ্লোবাল সুপার লিগে হ্যাম্পশায়ার হকসের বিপক্ষে হেরে শুরুটা ভালো না নুরুল হাসান সোহানের দলের।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে শেষ হওয়া ম্যাচে হ্যাম্পশায়ার প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে তোলে ১৩২ রান। শান মাসুদ করেন ৪১ বলে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন। রংপুরের পক্ষে ইংলিশ পেসার জ্যাক চ্যাপেল নেন ২৩ রানে ৫ উইকেট।
রান তাড়ায় নেমে রংপুরের কেউ বড় স্কোর করতে পারেনি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন সৌম্য সরকার। বিশের কোটায় রান করেন আরও তিনজন- স্টিভেন টেলর (২০), সোহান (২৪) ও খুশদিল শাহ (২৫)। জয়ের পথেই ছিল রংপুর। কিন্তু হ্যাম্পশায়ারের বোলিংয়ের সামনে আর পেরে ওঠেনি।
শেষ ওভারে রংপুরের প্রয়োজন পড়ে ৭ রানের। বোলিংয়ে জেমস ফুলার। প্রথম ৫ বলে ৪ রান নিতে পারে রংপুর। শেষ বলে ৩ রানের সমীকরণে ২ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে বাংলাদেশের দলটি। শেষ ৪ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি রংপুর। এখানেই মূলত হেরে যায় তারা।
সুপার ওভারে রংপুরের হয়ে ব্যাট হাতে নামেন খুশদিল ও টেলর। পুরো ওভারে কেবল একটি বাউন্ডারি মারতে পারেন দুজন। ক্রিস উডের তৃতীয় বলে ছক্কা মারেন খুশদিল। এরপর সিঙ্গেল, ডাবলস নিয়ে ১২ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর।
রংপুরের হয়ে সুপার ওভারে বোলিংয়ে আসেন জ্যাক চ্যাপেল। তার প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান জেমস ফুলার। পরের বলেই আউট। মাঝে তৃতীয় ও চতুর্থ বলে কোনো বাউন্ডারি আসেনি। তবে পঞ্চম বলে আরেকটি ছক্কায় হ্যাম্পশায়ারকে জিতিয়ে দেন লিয়াম ডসন।
গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে রংপুরের মাপা বোলিংয়ের সামনে রান তুলতে হিমশিম খায় হ্যাম্পশায়ার। প্রথম তিন ওভারে ১৯ রান তোলে তারা। চতুর্থ ওভারেই টানা দুই উইকেট হারায়। ফিরে যান টম প্রেস্ট ও জো ওয়েদারলি।
তৃতীয় উইকেটে অ্যালি ওর ও শান মাসুদ গড়েন ৪৯ রানের জুটি। ওরকে ২৮ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রিশাদ। এরপর মাসুদ ছাড়া আর কেউ সুবিধা করতে পারেননি। ৪১ বলে ৫৬ করে আউট হন মাসুদ।
রান তাড়ায় রংপুরকে আগ্রাসী শুরু এনে দেন সৌম্য সরকার ও স্টিভেন টেইলর। ৪.২ ওভারেই ৪৫ রান তোলার পর টেইলর আউট হন ১২ বলে ২০ রান করে। এরপরই দুই উইকেট হারায় রংপুর। সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন সৌম্য (২০ বলে ২৭), একইভাবে এলবিডব্লিউ আফিফ হোসেন।
দুই উইকেট পতনের পর নুরুল হাসান সোহান ও খুশদিল এগিয়ে নেন দলকে। সোহান আউট হন ২৩ বলে ২৪ করে। এরপর খুশদিল চেষ্টা করেন ওয়েইন ম্যাডসেনকে নিয়ে আগানোর। ১৬ ওভারের পরই এলোমেলো ব্যাটিং করেন তারা।
এর মধ্যেই রান আউট হয়ে যান খুশদিল (২০ বলে ২৫)। পরের ওভারে ফিরে যান ম্যাডসেন (২৬ বলে ১৫)। এরপর শেখ মেহেদি ও হারমিত সিং কিছু করতে পারেননি। তাও সুপার ওভারে জয় তুলে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু পারলো না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
হ্যাম্পশায়ার হকস: ২০ ওভারে ১৩২ (ওর ২৮, শান মাসুদ ৫৬)
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৩২/৮ (সৌম্য ২৭, খুশদিল ২৫)
ফল: সুপার ওভারে হ্যাম্পশায়ার হকস জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শান মাসুদ।
ঢাকা/বিজয়