বাবাকে নিজের খেলা দেখাতে না পারার আক্ষেপ জাকেরের
বিরুদ্ধ স্রোতে সাঁতার কাটার কাজটা শুধু কঠিন-ই নয়, দুরূহ। জাকের আলী গতকাল কিংসটনে সেই কাজটাই করেছেন। বাংলাদেশ ১০১ রানের দারুণ জয় তুলে নিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ১৫ বছর পর জয়। যে জয়ে বিরাট অবদান জাকেরর। ৯১ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে লিড ২৮৭ রানে নিয়ে যান তরুণ ব্যাটসম্যান।
ক্যারিয়ারের প্রথম তিন টেস্টে ফিফটি পাওয়া জাকের একপ্রান্ত আগলে ক্যারিবীয়ান পেসারদের কড়া শাসন করে যান। ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় খেলেছেন দুর্দান্ত সাহসী ইনিংস। দেখিয়েছেন বুদ্ধিমত্তা, শক্তিমত্তা ও পরিপক্বতা। সেঞ্চুরি পেলে ষোলোকলা পূর্ণ হতো। কিন্তু ভাগ্যবিধাতা চাননি বলেই হয়তো হয়নি।
২২ গজে যে মানসিকতায় জাকের দলকে টেনেছেন তা চির অম্লান হয়ে থাকবে। তার দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছে। দলকে জিতিয়ে জাকেরও খুশি। কিন্তু বাবাকে এই অর্জন, এই জয় দেখাতে না পারার হাহাকার, আক্ষেপ কাজ করছে তার।
১৫ বছর আগে বাংলাদেশ যখন প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জেতে তখন তার বয়স ছিল ১১। লম্বা সময়ের ব্যবধানে জাকের এখন সেই দলেরই অংশ। জয়ের অন্যতম নায়ক। এমন স্মৃতিময় দিনে বাবাকে পাশে না পেয়ে স্মৃতিকাতর জাকের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখলেন সেসব।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জাকের লেখেন, “তখন আমার বয়স ১১। ২০০৯ সালের সেই সিরিজের একটা ম্যাচও আমি মিস করি নাই। সারারাত জেগে বাংলাদেশের খেলা দেখতাম। আব্বা ভোর রাতে উঠে দেখেন আমি খেলা দেখছি। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন, কিন্তু কোনো বকা দিলেন না। ১৫ বছর পর একই সিরিজে আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলছি। আব্বা বেঁচে থাকলে হয়তো রাত জেগে খেলা দেখতো।”
ঘরোয়া ক্রিকেটে দ্যুতি ছড়িয়ে জাকেরের অভিষেক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে। তিন টেস্টে তার ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি ফিফটি। যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রথম। ৩৯.৩৩ গড়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালো হয়েছে তরুণ ব্যাটসম্যানের। সামনের কন্টকাকীর্ণ পথ কিভাবে পাড়ি দেন সেটাই দেখার। সফল হলে পরপারে থেকেও নিশ্চয়ই জাকেরের বাবা ছেলের অর্জনে খুশি হবেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/বিজয়