সরাসরি: মাহেদীর স্পিনে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ
স্কোর: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৯/৬ (১১ ওভার), বাংলাদেশ ১৪৭/৬ (২০ ওভার)
৪-০-১৩-৪। স্পিনার মাহেদী হাসানের বোলিং ফিগার এটি। যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। শুধু আন্তর্জাতিক মঞ্চ নয়, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তার সেরা বোলিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ৪ উইকেট পেলেন তিনি। এর আগে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন ১৯ রানে। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ২২ রানে তার শিকার আছে ৪ উইকেট। এবার সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেলেন।
মাহেদীর স্পিনে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ
নিজের প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে মাহেদী উড়ছিলেন। তৃতীয় ওভারে অফস্পিনার পেলেন জোড়া সাফল্যের স্বাদ। প্রথমে তার আর্ম ডেলিভারীতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। এরপর রস্টন চেজ রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লিটনের হাতেই ক্যাচ দেন। রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশ ফেরায় চেজকে।
৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে মাহেদীর শিকার ৪ উইকেট। ৩৮ রান তুলতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের অর্ধেক ব্যাটসম্যান সাজঘরে। ম্যাচটা কি বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জিততে পারবে?
চার্লসকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরালেন মাহেদী
তানজিম হাসান সাকিবের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকান জনসন চার্লস। আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান চোখ রাঙানি দিচ্ছিলেন বোলারদের। বাংলাদেশের ভয়ের কারণ হয়ে উঠছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবে তাকে বেশিদূর যেতে দেননি মাহেদী। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে চার্লসকে থামান অফস্পিনার। তার উইকেট সোজাসুজি বল জায়গা নিয়ে খেলতে গিয়ে মিড অফে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দেন ১২ বলে ২০ রান করা চার্লস।
এক ওভারে তানজিমের ২৫ রান
চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে বেহিসেবী রান দিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ২৫ রান দিয়েছেন ডানহাতি পেসার। ওয়াইড ও বাই চারে বোলিং শুরুর পর জনসন চার্লসের ব্যাটে দুই ছক্কা ও এক চার হজম করেন তানজিম। ওভারে ছিল আরো একটি ওয়াইড। সঙ্গে বাড়তি ৩ রান। চাপে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ওভার দিয়ে নিশ্চিতভাবেই ছন্দ ফিরল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে বাংলাদেশের জোড়া ধাক্কা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ডের চিত্রটা এমন, ২/২। বাংলাদেশের দেওয়া ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২ রান তুলতে ২ উইকেট হারিয়েছে তারা। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে তাসকিন আহমেদ বোলিংয়ে এসে আউট করেন ব্রেন্ডন কিংকে। পরের ওভারে স্পিনার মাহেদী হাসান তুলে নেন নিকোলাস পুরানের উইকেট। এগিয়ে এসে অফস্পিনারকে উড়াতে চেয়ে স্টাম্পড হন পুরান।
স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়াইয়ের জন্য শুরুতে প্রয়োজন ছিল উইকেট। তাসকিন ও মাহেদী প্রথম ৩ ওভারে সেই কাজটা করেছেন। স্বাগতিকদের চাপে রাখতে পারলে এই ম্যাচে ভালো কিছুর প্রত্যাশাও করতে পারে বাংলাদেশ।
শেষের লড়াইয়ে বাংলাদেশের মাঝারি মানের পুঁজি
১৩০ এর ঘর পেরোবে কিনা সেটা নিয়েই ছিল সংশয়। কিন্তু মাহেদী হাসান ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ পেয়েছে মাঝারি মানের পুঁজি। ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে বাংলাদেশের রান ১৪৭। দুজনের শেষের লড়াইয়ে কিছুটা মান রক্ষা হয় বাংলাদেশের। ২৯ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন শামীম ও মাহেদী।
শামীম ছিলেন আক্রমণাত্মক। ক্রিজে নেমে ৭ বলে ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে ১৩ বলে ২৭ রান করেন ১ চার ও ৩ ছক্কায়। মাহেদী অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে। ২ চার ও ১ ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। ইনিংস শেষ হওয়ার এক বল আগে শামীম মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে আউট হন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওবেদ ম্যাকয় ও আকিল হোসেন। ১টি করে উইকেট নেন শেফার্ড ও চেজ।
টাইমলাইন
পাওয়ার প্লে’: ওভার ১-৬ (৩২ রান, ৩ উইকেট)
বাংলাদেশ: ৫০ রান, ৮.২ ওভার
বাংলাদেশ: ১০০ রান, ১৫.৫ ওভার
ফিরলেন সৌম্যও
দল এমনিতেই ছিল বিপদে। সৌম্য সরকার আউট হয়ে বিপদ আরো বাড়ালেন। রান পেতে ধুকতে থাকা বাংলাদেশ হারাল পঞ্চম উইকেট। ১৫তম ওভারের শেষ বলে সৌম্য বোল্ড হয়ে ফিরলেন সাজঘরে। বাঁহাতি পেসার ওবেদ ম্যাকয়ের স্লোয়ার বুঝতে পারেননি সৌম্য। আগে ব্যাট চালিয়ে বল মিস করেন। বল আঘাত করে স্টাম্পে। ৩২ বলে ৪৩ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। ২ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। সৌম্য ফেরার সময় বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৯৬।
দুর্দান্ত ক্যাচে জাকের আউট
সীমানায় রোভম্যান পাওয়েলের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন জাকের আলী। পেসার রোমারিও শেফার্ডকে উড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন জাকের। বল তার নাগালের বাইরে ছিল। কিন্তু সীমানায় লাফিয়ে বল একহাতে ভেতরে এনে পরে শরীরের ভারসাম্য স্থির করে বল তালুবন্দি করেন রোভম্যান। তার দারুণ ক্যাচে ভাঙে সৌম্য ও জাকেরের করা ৫৭ রানের জুটি। ২৭ বলে ২৭ রান করে জাকের ফেরেন সাজঘরে। ১টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে।
জাকের-সৌম্য জুটির পঞ্চাশ
রোমারিও শেফার্ডের বল উইকেট থেকে সরে গিয়ে মিড উইকেট দিয়ে উড়ালেন জাকের আলী। তার ট্রেডমার্ক শট। বিশাল ছক্কা। তার এই শটে সৌম্য সরকারের সঙ্গে জুটির রান পঞ্চাশ পেরিয়েছে। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন সৌম্য ও জাকের। তাদের জুটিতেই কিছুটা লড়াই করতে পারে বাংলাদেশ।
১০ ওভারে পিছিয়ে বাংলাদেশ
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুর ১০ ওভারে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ৫৬। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক। কিন্তু স্বাগতিক বোলাররা বেশ চাপে রেখেছে ব্যাটসম্যানদের। বাউন্ডারি পেতে ধুকছেন ব্যাটসম্যানরা। সঙ্গে উইকেটও হারিয়েছে ৩ উইকেট। সৌম্য ও জাকের ইনিংস মেরামতের কাজ করছেন। দেখার বিষয়, কতদূর যেতে পারেন তারা।
অষ্টম ওভারে প্রথম ছক্কা, দুই বল পর আরেকটি
রস্টন চেজকে এগিয়ে এসে মাথার ওপর দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠালেন জাকের আলী। ৭. ৪ ওভারে বাংলাদেশ পেল প্রথম ছক্কার দেখা। দ্বিতীয় ছক্কার জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। পরের ওভারের প্রথম বলে রোমারিও শেফার্ডকে ডিপ কভার দিয়ে দৃষ্টি নন্দন ছক্কা হাঁকান সৌম্য সরকার।
আফিফকে হারিয়ে পাওয়ার প্লে’ শেষ করলো বাংলাদেশ
শুরুর ৬ ওভারে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। হারিয়েছে ৩ উইকেট। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন আফিফ হোসেন। অফস্পিনার রস্টন চেজের বল রিভার্স সুইপ করে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ১১ বলে ৮ রান করে ফেরেন আফিফ।
ওই ওভারের শেষ বলে সৌম্যর উইকেটও হারাতে পারত বাংলাদেশ। আম্পায়ার তাকে কট বিহাইন্ডের আউট দিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে সৌম্য টিকে যান। পাওয়ার প্লে’তে ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের রান কেবল ৩২।
জোড়া উইকেটে আকিলের বাজিমাত
শুরুর ২ ওভার দেখে মনে হচ্ছিল উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের রান ছুটবে। কিন্তু তৃতীয় ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে পাঠান স্পিনার আকিল হোসেন। প্রথমে তানজিদ হাসানকে বোল্ড করেন তিনি। পরে লিটনকে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরের পথ দেখান। জোড়া উইকেটের সঙ্গে মেডেন ওভারে বাজিমাত করে বাঁহাতি স্পিনার।
উইকেট থেকে সরে পুল শট খেলতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন তানজিদ। নতুন ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন আলগা শটে ফিরতি ক্যাচ দেন। কুইকার ডেলিভারী লিটন বুঝতেই পারেননি। সহজ ক্যাচ নিয়ে দলকে আনন্দে ভাসান আকিল। টি-টোয়েন্টি এটি লিটনের ষষ্ঠ ডাক। দ্বিতীয় গোল্ডেন ডাক। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ২৩তম ডাক।
ভালো শুরু বাংলাদেশের
দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন। প্রথম দুই ওভারে দুই ব্যাটসম্যান একটি করে বাউন্ডারি পেয়েছেন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ।
স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ম্যাচটি শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, শামীম হোসেন, তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, মাহেদী হাসান, আফিফ হোসেন, জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তানজিদ হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ব্রেন্ডন কিং, আন্দ্রে ফ্লেচার, জনসন চার্লস, নিকোলাস পুরান, রোভম্যান পাওয়েল, রোমারিও শেফার্ড, রস্টন চেজ, আকিল হোসেন, গুডাকেশ মোতি, আলজারি জোসেফ ও ওবেদ ম্যাকয়।
১০ বছর পর কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
চলতি বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচটি সেন্ট ভিনসেন্টে খেলে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে ম্যাচটি হেরে বিদায় নেয়। ছয় মাস পর বাংলাদেশ একই ভেন্যুতে ফিরলেও স্বাগতিকরা এখানে খেলতে নামছে পাক্কা ১০ বছর পর। সবশেষ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল তারা। যে ম্যাচটি জিতেছিল ১০ উইকেটে।
পরিসংখ্যানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে
বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচে ৯টিতেই জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ৫ জয় বাংলাদেশের। দুই দলের মধ্যে ৭টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ৪টি জিতেছে ক্যারিবীয়ানরা। বাংলাদেশের সিরিজ জয় ২টি, ড্র হয়েছে একটি। পরিসংখ্যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষেই কথা বলছে। এবারের ফল কেমন হতে পারে?
এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ…
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজ ড্র করলেও বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ওয়ানডে সিরিজে। ১৫ বছর পর ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে কোনো টেস্ট জিতলেও অবিস্মরণীয় সাফল্যের পর ওয়ানডে সিরিজে পাত্তাই পায়নি। ১০ বছর পর উইন্ডিজের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এবার বাংলাদেশের সামনে টি-টোয়েন্টির পরীক্ষা। রঙিন পোশাকে শেষটা বাংলাদেশ কেমন করে সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন