ঢাকা     সোমবার   ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২২ ১৪৩১

বিপিএলে রান উৎসব, ঢাকায় ম্যাচ প্রতি ৩৩১ রান, দেশিদের রাজত্ব  

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ৪ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৮:৪৭, ৪ জানুয়ারি ২০২৫
বিপিএলে রান উৎসব, ঢাকায় ম্যাচ প্রতি ৩৩১ রান, দেশিদের রাজত্ব  

ঢাকায় প্রথম পর্ব শেষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলা এবার মাঠে গড়াবে চায়ের দেশ সিলেটে। মাঠের বাইরে বেপরোয়া দর্শকদের তুঘলকি কাণ্ড ছাপিয়ে আলোচনায় বাইশ গজে রানউৎসব। বিপিএলের শুরুর দিকে আগে দেখা যেতো রানের হাহাকার, এবার আর তেমনটি দেখা যায়নি।

ঢাকায় একদিনের বিরতিতে চার দিনে ম্যাচ হয়েছে ৮টি। যেখানে সবমিলিয়ে ২৬৪৮ রান হয়ে । ম্যাচ প্রতি রানের গড় ৩৩১। ইনিংস প্রতি ১৬৫.৫ রান। এর আগের দুই বিপিএল থেকে রানের হিসেবে এবারের বিপিএল বেশ এগিয়ে।

২০২৪ আসরে ঢাকায় পথম ৮ ম্যাচে রান হয়েছে ২৩৭৮টি। ম্যাচ প্রতি গড় তিনশর নিচে, ২৯৭.২৫!।  ইনিংস প্রতি গড় রান দেড়শর নিচে, ১৪৮.৭। এর আগের বিপিএল তথা ২০২৩ সালের আসরেও প্রায় কাছাকাছিই ছিল। ম্যাচ প্রতি রান এসেছে ৩০৪ করে। আর এবার ৩৩০ রানের বেশি। এ ছাড়াও এবার ৮ ম্যাচে সেঞ্চুরি দেখা গেছে দুটি।

আরো পড়ুন:

সবচেয়ে বেশি চোখে লেগেছে দেশি ব্যাটারদের ব্যাটে রানের ফোয়ারা। স্ট্রাইকরেটও ছিল চমকজাগানিয়া। সর্বোচ্চ ২২৯ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফ। বাংলাদেশিদের মধ্যে  মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ২০৬.৮১, শামীম হোসেন ১৯৫.১২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯৪ ও নুরুল হাসান সোহান ১৮৮ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন।

সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে তিনজনই বাংলাদেশি। দুর্বার রাজশাহীর এনামুল হক বিজয় সর্বোচ্চ ১৪৬, চিটাগং কিংসের পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান  খান ১৪১, ঢাকা ক্যাপিটালসের শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা ১৪১, দুর্বার রাজশাহীর ইয়াসির আলী ১৩২ ও রংপুর রাইডার্সের সাইফ হাসান ১০৬ রান করেছেন। উসমান ছাড়া প্রত্যেকে তিন ম্যাচ করে খেলেছেন। স্ট্রাইকরেট হিসেব করলে সাইফ  (১২৩.২৫) ছাড়া বাকিদের ১৬০-এর বেশি করে।

এমন সাফল্য কি করে এলো? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের এক নির্দেশেই যেন বদলে গেলো দৃশ্য। প্রতিবার বিপিএলে উইকেট নিয়ে থাকে নানা আলোচনা সমালোচনা। এবার ফারুক আহমেদ টি-টোয়েন্টি বান্ধব স্পোর্টিং উইকেটের নির্দেশনা দিয়েছেন শুরুতে। তাতে ধরা দেয় সাফল্য।

ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আসলে অনেক সময় হয় কী, নির্দেশনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক জায়গা থেকে তিন-চার রকম নির্দেশনা গেলে কিউরেটরের জন্যও কাজটা কঠিন। আমি চিন্তা করেছি, এবার দেখতে চাই ভালো ব্যাটিং উইকেট। আবার বাউন্সও আছে উইকেটে। এই ধরনের উইকেটে খেলা প্রয়োজন। এতে করে বোলাররাও শিখবে, কীভাবে ভালো ব্যাটিং উইকেটে বল করা যায়। ব্যাটসম্যানরা তো শিখবেই।”

“অনেক সময় নিচু বাউন্সের উইকেটে শর্ট অব লেংথ বল করে পার পাওয়া যায়। কিন্তু ট্রু বাউন্সের উইকেটে সেটা হয় না। দুজনের (ব্যাটসম্যান-বোলার) জন্যই এটা ভালো। তাই নির্দেশনা ছিল ভালো ব্যাটিং উইকেটের। আবার বোলাররাও কিন্তু মুভমেন্ট পেয়েছে, চারটি ম্যাচে যা দেখেছি। বোলাররাও উইকেট কাজে লাগাতে পারলে খারাপ না। তবে বাউন্স সমান রাখতে বলেছি”-আরও যোগ করেন ফারুক আহমেদ।

স্পোর্টিং উইকেটে শুধু যে ব্যাটারদের ব্যাটই হেসেছে তা নয়। বোলাররাও ছিলেন দুর্দান্ত। সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া প্রথম পাঁচ ব্যাটারদের মধ্যে একজন মাত্র বিদেশি।

দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ সর্বোচ্চ ১২ উইকেট নেন মাত্র ৩ ম্যাচেই। এক ম্যাচে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন ৭ উইকেট। রংপুর রাইডার্সের খুশদিল শাহ ৭ উইকেট নিয়ে আছেন দ্বিতীয় অবস্থানে। রংপুর রাইডার্সের নাহিদ রানা ও খুলনা টাইগার্সের আবু হায়দার রনি  যৌথভাবে নেন ৬টি করে উইকেট। আর চিটাগং কিংসের আলিস আল ইসলাম নেন ২ ম্যাচে ৫ উইকেট।

সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করা সেরা তিনজনের মধ্যে তিনজনই বাংলাদেশের স্পিনার। খুলনা টাইগার্সের মেহেদী হাসান মিরাজ ওভার প্রতি  সর্বনিম্ন ৪ রান করে দিয়েছেন মাত্র।  আর চিটাগংয়ের আলিস আল ইসলাম দেন ৪.২৫ রান করে। আর আলিসের সতীর্থ আরাফাত সানি ৫.৭৫ করে রান দিয়েছেন ওভার প্রতি।

রাজধানীতে ব্যাটে-বলে দেখা গেছে দেশিদের রাজত্ব। সিলেট পর্বে বিজয়-অঙ্কনরা সেটি ধরে রাখতে পারেন কী না এটি এখন দেখার বিষয়। দেশিরা যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন তাহলে আখেরে যে লাভ হবে বাংলাদেশের! 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়