অপ্রতিরোধ্য রংপুরের জয় ছাপিয়ে আলোচনায় ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নো বল!
স্কোরবোর্ডে তেমন পুঁজি নেই। ঢাকা ক্যাপিটালসের বোলারদের আগ্রাসী হওয়ার কথা। নিয়ন্ত্রিত লাইন ও লেন্থ মেনে চাপে রাখার কথা রংপুর রাইডার্সের ব্যাটসম্যানদের।
কিন্তু প্রথম ওভারে ঢাকার আফগানি স্পিনার আমির হামজা যা করলেন তাতে প্রশ্ন উঠছে। হচ্ছে কড়া সমালোচনা। ওভারের চতুর্থ বল করতে গিয়ে নো বল করেন বাঁহাতি স্পিনার। স্পিনারদের নো বল করা এমনিতেই কঠিন। সেখানে বাঁহাতি স্পিনার ডান পা ফেললেন পপিং ক্রিজের অনেকটা দূরে।
অনফিল্ড আম্পায়ার তানভীর যখন নো বল ডাক দিলেন তখন আমির অনেকটা অবাক হলেন। কিন্তু টিভির পর্দায় রিপ্লে দেখে প্রত্যেকের চোখ ছানাবড়া। স্পিনারের পক্ষে এমন নো বল করাও সম্ভব?
রংপুর রাইডার্সের পঞ্চম জয় এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের চতুর্থ পরাজয়কে ছাপিয়ে এখন আলোচনায় আমির হামজার বিস্ময়কর প্রশ্নবিদ্ধ নো বল।
সিলেটে গতকাল রান উৎসব হয়েছিল। আজ দ্বিতীয় দিনে এমন কিছুর প্রত্যাশাতে ছিল দর্শকরা। কিন্তু ঢাকা ক্যাপিটালসের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচটা হলো ম্যাড়ম্যাড়ে। রংপুরের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকার ইনিংস। মাত্র ১৬.৩ ওভার ব্যাটিং করতে পারে তারা। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় রংপুর ৭ উইকেট হাতে রেখে ১৩.২ ওভারে জয় নিশ্চিত করে।
অপ্রতিরোধ্য রংপুরের এটি টানা পঞ্চম জয়। ঢাকাকে ঢাকাতেও ৪০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। সিলেটেও দেখাল দাপট।
অথচ টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মন্দ ছিল না। একটু মন্থর, অসমান বাউন্সের উইকেটে দেখেশুনে খেলছিলেন জেসন রয়, তানজিদ হাসানরা। স্কোরবোর্ডের চিত্র এক সময়ে ছিল এমন, ৫৪/২। পরের ৫৭ রান তুলতে ৮ ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটি ঢাকার দখলেই। আগের দিন একই মাঠে রান উৎসব হয়েছে। চার-ছক্কার ছড়াছড়ি হয়েছে। অথচ একদিন পরই বাউন্ডারি এসেছে কালেভাদ্রে। ভিন্ন উইকেটে খেলা হলেও ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক ছিল।
কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন দলের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছিলেন। একাদশে এনেছিলেন ৬ পরিবর্তন। ব্যাটিং অর্ডারে করেছেন শাফল। কিন্তু লিটন, তানিজদরা রান পাননি। প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সাব্বির, মোসাদ্দেকরা পারেননি নিজেদের মেলে ধরতে। ভরসা হয়ে আসা জেসন রয়ও ছিলেন নিষ্প্রভ। এছাড়া আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান থিসারা পেরেরা, একাদশে ফেরা হাবিবুর রহমান সোহান কেউই পারেননি দলের স্কোরকে আগাতে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিরাট বিপর্যয়ে পড়ে অতি অল্পতেই আটকে গেছে তাদের রান।
তানজিদ হাসান সর্বোচ্চ ২০ রান করেন। জেসন রয় করেন ১৮ রান। হাবিবুর রহমান সোহান ১৪, আলাউদ্দিন বাবু ১৬ ও মোসাদ্দেক ১২ রান করেন। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করতে পারেনি।
রংপুরের বোলিং ছিল আঁটসাঁট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলেছেন বোলাররা। আগের দিন উইকটশূন্য থাকা নাহিদ রানা এদিন ২১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন। ২টি করে উইকেট নেন আকিফ জাভেদ ও খুশদিল শাহ। দ্যুতিময় বোলিংয়ের দিনে অতিরিক্ত খাতে ১৭ রান দিয়েছেন বোলাররা। যেখানে ওয়াইড ছিল ৮টি, নো বল ৩টি। এই অতিরিক্ত রান যোগ না হলে ঢাকার রান শতরানের নিচে আটকে যেত।
লক্ষ্য তাড়ায় রংপুর আগ্রাসন দেখিয়েছে। স্বল্প রানের লক্ষ্য বলে রয়েসয়ে ছিল না তাদের ব্যাটসম্যানরা। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যে ব্র্যান্ড চালু ছিল তা এই ম্যাচেও দেখা গেছে। আগের তিন ম্যাচে রানের খাতা খুলতে না পারা আজিজুল আজ ৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় মাঠ মাতানো অ্যালেক্স হেলস ২৭ বলে ৪৪ রান করেন। সাইফের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে ২৭ রান তুলে জয়ের কাজটা সহজ করে দেন খুশদীল শাহ।
আলাউদ্দিন বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোসাদ্দেক ১টি করে উইকেট পেয়েছেন। বোলিং ইনিংসে আলাউদ্দিন বাবু পরপর তিন ওয়াইড দিয়েও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল