দেশিয় শক্তিতে দুর্বার রাজশাহী
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

মাঠের বাইরে নানা অপ্রীতিকর ঘটনায় দুর্বার রাজশাহী টক অব বিপিএল। মাঠের ভেতরে সেসবকে পাশ কাটিয়ে রাজশাহী তাদের ‘দুর্বার’ নামের প্রতি সুবিচার করলো। টেবিল টপার রংপুরকে তারা চট্টগ্রামে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল। আট ম্যাচ পর প্রথম হারের তিক্ত স্বাদ পায় তারা। মুখোমুখি দ্বিতীয় দেখায় ঢাকায় ফিরেও রংপুরের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিলো পদ্মাপাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে রংপুরকে ২ রানে হারিয়ে এগার ম্যাচে পঞ্চম জয় তুলে প্লে’অফের লড়াইয়ে রাজশাহী। দশ ম্যাচে আট জয়ে রংপুর এখনো টেবিলের শীর্ষে।
লো স্কোরিং ম্যাচে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৯ উইকেটে ১১৯ রান করে। জবাবে ইনিংসের শেষ বলের আগের বল পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল রংপুর। শেষ পর্যন্ত ২ রানের আক্ষেপে পুড়ে কাজী নুরুল হাসান সোহানের দল।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২৫ রান লাগত রংপুরের। বোলার ছিলেন জিসান আলম। ব্যাটিংয়ে সাইফউদ্দিন। প্রথম দুই বল মিড অন ও মিড অফ দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সমীকরণ তখন নেমে আসে ৪ বলে ১৩ রান।
জোড়া ছক্কা হজম করা জিসান স্নায়ু স্থির রেখে পরের দুই বল ডট করেন। এবার পাশার দান পাল্টে সাইফউদ্দিনের ওপর চাপ। শেষ দুই বলে দুই ছক্কা ছাড়া গতি নেই। পঞ্চম বলটি জিসান ওয়াইড ইয়ার্কার করেন। সাইফউদ্দিন ব্যাট পেতে তা পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান। কিন্তু ৪ রানের বেশি পাননি। ম্যাচের ভাগ্য তাতেই লিখা হয়ে যায়। শেষ বলে আবার ছক্কা হাঁকালেও প্রবল আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
এই ম্যাচটি কোনো বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়াই খেলেছে রাজশাহী। পারিশ্রমিক জটিলতায় তাদের বিদেশি ক্রিকেটার মাঠে আসেননি। ফলে এগার স্থানীয় ক্রিকেটার নিয়ে মাঠে নামতে হয় বিপিএলের নবাগত দলটিকে। মাঠের বাইরের ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে দেশিয় শক্তির প্রদর্শনে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিতে নিয়েছে তারা।
রাজশাহীর জয়ের নায়ক পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে রংপুর শিবিরে শুরুর ধাক্কাটা তিনিই দিয়েছিলেন। তার বল বাড়তি গতি ও বাউন্স পাওয়ায় ব্যাটসম্যানরা ভুগছিলেন। নিজের প্রথম ওভারে সাইফ হাসানের উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয়। দ্বিতীয় ওভারে ফিরে সৌম্য ও মাহেদীকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করেন। তৃতীয় ওভারে রংপুরের অধিনায়ককে ফিরিয়ে পান চতুর্থ উইকেটের স্বাদ। ৪ ওভারে ১ মেডেনে ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। যেখানে ডট বল ছিল ১৯টি। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মোহর শেখ।
তাসকিন ২ উইকেট নিয়ে বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট নেওয়ার নতুন কীর্তি গড়েছেন। এর আগে সাকিব ২০১৯ সালে ২৩ উইকেট পেয়েছিলেন।
রংপুরের হয়ে শেষ পর্যন্ত লড়া সাইফউদ্দিন ৩১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫২ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান আসে রাকিবুল হাসানের ব্যাট থেকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে রাজশাহীর ইনিংস একদমই ভালো কাটেনি। ৬৭ রান তুলতে ৭ উইকেট হারায় তারা। প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান আকবর আলী যখন মাঠ ছাড়েন তখন তাদের রান কেবল ৮৪। শেষ দিকে সানজামুল ইসলামের ২৮ ও তাসকিনের ১৩ রানে তাদের রান ১১৯ এ পৌঁছায়।
রংপুরের হয়ে স্পিনার খুশদীল শাহ ১৯ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন সাইফ উদ্দিন ও রাকিবুল।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল