অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ধাক্কা, অ্যাশেজের শুরুতে নেই কামিন্স
অ্যাশেজ সিরিজের একেবারে শুরুতেই বড় আঘাত অস্ট্রেলিয়া শিবিরে। ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন দলের অধিনায়ক ও প্রধান পেসার প্যাট কামিন্স। ফলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পার্থে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে তাকে পাচ্ছে না অজিরা।
অস্ট্রেলিয়ার হেড কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড সোমবার (২৭ অক্টোবর) নিশ্চিত করেছেন, নিচের পিঠের চোট থেকে সেরে উঠতে কামিন্সের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে। তাই প্রথম টেস্টে তাকে বিশ্রাম দেওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না। তার অনুপস্থিতিতে স্টিভ স্মিথ নেতৃত্ব দেবেন অস্ট্রেলিয়াকে।
ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “আমরা কিছুদিন ধরে কামিন্সের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। এই ধরনের চোটে প্রতিদিনই নতুন কিছু দেখা যায়। প্রথম টেস্টে হয়তো সময়টা যথেষ্ট ছিল না। কিন্তু আমরা খুব আশাবাদী সে দ্বিতীয় টেস্টেই ফিরতে পারবে।”
তিনি আরও জানান, কামিন্স এই সপ্তাহেই বোলিং শুরু করবেন। যা তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় বড় অগ্রগতি। তবে নির্দিষ্ট করে তিনি কবে ফিরবেন, সেটি এখনই বলা সম্ভব নয়।
৩২ বছর বয়সী কামিন্স শেষবার খেলেছিলেন গত জুলাইয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে। সেই ম্যাচেই পেয়েছিলেন নিচের পিঠে চোট। কোচ ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “আমরা ভাগ্যবান যে দলে স্টিভ স্মিথের মতো অভিজ্ঞ একজন আছে, যিনি আগেও দারুণভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
কামিন্সের জায়গায় স্কোয়াডে যোগ দিচ্ছেন স্কট বোল্যান্ড। যিনি মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণে থাকবেন।
“অবশ্যই অধিনায়ককে হারানো ভালো খবর নয়। কিন্তু যখন আপনার কাছে বোল্যান্ডের মতো একজন বিকল্প থাকে, তখন সেটা খুব খারাপ অবস্থাও নয়,” যোগ করেন কোচ।
আগামী ২১ নভেম্বর পার্থে শুরু হবে অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট। কামিন্স এখনো আশা ছাড়ছেন না। সেপ্টেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “জিমে হালকা অনুশীলন করছি। এই ইনজুরিতে বিশ্রামটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ধীরে ধীরে ফিরব, লক্ষ্য অ্যাশেজেই মাঠে নামা। এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সময়ই বলে দেবে।” কামিন্সের জন্য পিঠের সমস্যা নতুন নয়। ২০১৮ সালেও একই ইনজুরিতে পুরো অফ-সিজন মিস করেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে ইংল্যান্ড আসছে পেসভিত্তিক দলে ভর করে। তাদের আক্রমণে থাকছেন জোফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, জশ টং, ব্রাইডন কার্স ও মার্ক উড। যারা সবাই স্পিডে ভয়ঙ্কর।
সাবেক ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড সম্প্রতি বলেন, “এটা সম্ভবত গত ১৫ বছরে সবচেয়ে দুর্বল অস্ট্রেলিয়ান দল। আর একই সঙ্গে ২০১০ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী ইংল্যান্ড দল।”
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও যোগ করেন, “এটা শুধু মতামত নয়, বাস্তবতাও তাই।” তবে বাস্তবতা হলো, ইংল্যান্ডের রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ। ২০০২ সালের পর মাত্র একবারই (২০১০-১১) তারা সেখানে টেস্ট সিরিজ জিততে পেরেছে।
২০২৩ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ ২-২ ড্র হলেও, তাতেই ট্রফি ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। আর ২০২১-২২ মৌসুমে ঘরের মাঠে তারা ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ৪-০ ব্যবধানে। যেখানে কামিন্স একাই নিয়েছিলেন ২১ উইকেট, গড়ে মাত্র ১৮ রান দিয়ে। কিন্তু এবার শুরুতেই তাকে হারিয়ে বড় পরীক্ষার সামনে অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিবেন স্মিথ। আর বল হাতে দায়িত্ব পালন করবেন বোল্যান্ড-স্টার্ক-হ্যাজলউডরা। আর অন্যপ্রান্তে ইংল্যান্ড প্রস্তুত পুরো শক্তি নিয়ে। অ্যাশেজ ২০২৫ মাঠে গড়ানোর আগেই হয়ে উঠছে অগ্নিপরীক্ষার মঞ্চ।
ঢাকা/আমিনুল