ঢাকা     শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ায় এক সপ্তাহ: ২য় পর্ব 

জয়দীপ দে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪২, ১৭ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৪:৫৪, ১৭ নভেম্বর ২০২২
ইন্দোনেশিয়ায় এক সপ্তাহ: ২য় পর্ব 

জাকার্তা বিমানবন্দরের বৈপুল্য আমাকে আবাক করে দিলো! আমাদের বিমান ভিড়েছিল ৩ নম্বর টার্মিনালে। এরকম আরো দুটি টার্মিনাল আছে সুকর্ণ হাট্টা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে। বিশাল টার্মিনাল হেঁটে যেন কুল পাচ্ছিলাম না। এর উপর একটা অনিশ্চয়তা। এখানে ইমিগ্রেশন সেরে আমাদের যেতে হবে অভ্যন্তরীণ বিমান ধরতে। আমাদের সঙ্গে ভিসা নেই। অন এরাইভাল ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করে রাখা আছে। কিন্তু সেটা কীভাবে গ্রহণ করব সেটাও প্রশ্ন। আমরা বাংলাদেশ থেকে আসা ৫ জন যখন দিগভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়াচ্ছি, খাকি পোশাক পরা দুটো ছেলে আমাদের পথ আগলে দাঁড়াল। ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ বলে চিৎকার করে উঠল! 

আমরা কিছুটা থতমত খেয়ে গেলাম। তাদের বুকে পিঠে রোমান হরফে কি যেন লেখা। মর্মোদ্ধার করা যাচ্ছিল না। ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে জানালো তারা ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে। তারাই আমাদের ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে নিয়ে গেল। তিনি আমাদের পাসপোর্টগুলো চেয়ে নিলেন। কথা ছিল ৩৫ ডলার করে দেওয়ার। কিন্তু কোন কথা না বলে সহাস্যে ভিসার স্টিকার লাগিয়ে দিলেন আমাদের পাসপোর্টে। এর ক্বরিৎকর্মতার প্রশংসা না করে পারলাম না। দুই যুবক আমাদের গাইড করে বাইরে নিয়ে এলেন। একটা লিফটে করে বিমানবন্দরের উপরিভাগে এলাম। ওমা, এখানে তো আরেক কারবার! কী যে বিশাল জায়গায় শত শত কাউন্টারে চেক-ইনের কাজ চলছে। আমরা গরুডা এয়ারলাইন্সের কাউন্টারে এসে লাইন দিলাম। অনেক যাত্রীর ভিড়। এর মধ্যে পেয়ে গেলাম নেপালের প্রতিনিধিদের। মন্ত্রণালয়ের সেই দুই কর্মচারী আমাদের শুভ কামনা জানিয়ে বিদায় নিলেন। 

জাকার্তা বিমানবন্দরের নাম সুকর্ণ-হাট্টা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। সুকর্ণ ইন্দোনেশিয়ার জাতির পিতা, সেটা বুঝলাম। কিন্তু হাট্টা কেন সঙ্গে? সুকর্ণের নাম এতো বেশি চর্চা করা হয়, তার সহযোদ্ধাদের নাম আড়ালে পড়ে যায়। ত্রিশের দশক থেকে সুকর্ণ ও মোহাম্মদ হাট্টা পরিকল্পনা করছিলেন জাপানীদের সহযোগিতা নিয়ে ইন্দোনেশিয়াকে ডাচ শাসনমুক্ত করবেন। অনেকটা আমাদের সুভাষচন্দ্র বসুর মতো। তবে সুভাষের চেয়ে সুকর্ণের ভাগ্য প্রসন্ন ছিল। তাঁকে জাপান যেতে হয়নি। জাপানিরাই ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া’য় হাজির হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ১৯৪২ সালে ইন্দোনেশিয়ার দখল নেয় জাপান। ডাচরা পালিয়ে যায়। জাপানিরা সুকর্ণের সহযোগিতা চায় পাশ্চত্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। তিনি স্বাধীনতার বিনিময়ে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৪৫-এ যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইনকে স্বাধীন ঘোষণা করলে জাপানিরাও ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিতে রাজি হয়। এর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। সেটার প্রধান হন সুকর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পরপর, ১৭ আগস্ট ১৯৪৫ সুকর্ণ, সহযোদ্ধা হাট্টাকে নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এখানে মজার একটা ঘটনা আছে। তিন ছাত্রনেতা সুকর্ণকে আগের দিন কিডন্যাপ করেছিল স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য। যাই হোক, ইন্দোনেশিয়ার দুই মহান নেতাকে সমান স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে প্রধান বিমানবন্দরটির নামকরণের মাধ্যমে।

যোগজাকার্তা শহরের হোটেল হায়াত রিজেন্সির লনে লেখক

প্রত্যেকটা দেশে প্রবশের আগে কাস্টমস ডিক্লারেশন ফরম দেওয়া হয়। কিন্তু জাকার্তায় দেওয়া হলো না। তার পরিবর্তে মোবাইলে একটা এপস ইন্সটল করতে বলা হলো। এয়ারপোর্টের বিভিন্ন স্থানে এর কিউআর কোর্ড শোভা যাচ্ছে। peduliLindungi নামের এপসটি ইন্সটল করে সামান্য কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতেই একটা কিউআর কোর্ড জেনারেট হলো। সেটা দেখাতেই বিনাবাধায় বেরিয়ে এলাম। বিষয়টি বেশ আকর্ষণীয় লাগল।  

জাকার্তা এয়ারপোর্টের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় ছিল ‘পটি’ করার ব্যবস্থা। হা হা হা। সিঙ্গাপুরে বড়ো কাজের পর পানি ব্যবহারের সুযোগ নেই। জাকার্তায় দেখলাম দারুণ এক ধরনের টয়লেট। তাতে জায়গা মতো পানি পৌঁছে যায়। কেবল একটা মোচড়ের অপেক্ষা। এ দারুণ কমোড হোটেলেও পেয়েছিলাম।

ঘড়িতে ১১টাও বাজেনি। প্লেন পনে তিনটায়। কী আর করা, কেবিন লাগেজ নিয়ে বসে পড়লাম খোলা চত্বরে। ওয়াইফাই ওপেন করতেই কানেক্ট হয়ে গেল। এই ওয়াইফাই পেতে কতই না হুজ্জোত করতে হলো সিঙ্গাপুরে। তাও শেষমেশ নেটের দেখা মেলে নি। অথচ জাকার্তায় ওপেন ইন্টারনেট। উচ্চগতির ইন্টারনেট পেয়ে বাসায় ফোন দিলাম। দেখি হোয়াটস এ্যাপে আমার অধ্যক্ষ মহোদয়ের মিসড কল। কল দিতেই তাঁর উৎকণ্ঠিত স্বর। আপনারা কি জাভায় যাচ্ছেন?

হ্যাঁ বলতেই তিনি সাবধান থাকতে বললেন। জানালেন জাভায় ফুটবল ম্যাচ থেকে শুরু হওয়া দাঙ্গায় পনে দুইশ মানুষ মারা গেছে। বুকের ভেতর মোচড় মেরে উঠল। কী কুক্ষণেই না পা রাখলাম ইন্দোনেশিয়ার মাটিতে। পত্রিকা পড়া শুরুর বয়স থেকে ইন্দোনেশিয়ায় বিভিন্ন গোলমালের খবর পড়ে আসছি। আচেহ, পূর্ব তিমুরের বিদ্রোহ নিয়ে প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন সংবাদ আসত একসময়। সেই ইন্দোনেশিয়া কি ফিরে এলো। কিন্তু এয়ারপোর্টের শান্তশিষ্ট মানুষগুলো দেখে মনে হলো না এরা এসবের কিছু জানে। জাকার্তা এয়ারপোর্টের ওয়াইফাই বাদে আরেকটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। তাদের ওয়াশ রুম। ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না- তার উপর কাজ শেষে বের হওয়ার সময় এর মান নিয়ে রেটিং করার সুযোগ আছে। কে ওয়াশ রুমটি পরিচ্ছন্ন রেখেছে তার ছবিসহ তথ্য দেওয়া আছে। বিষয়টি ভালো লাগল।

যোগজাকার্তা এয়ারপোর্ট, আর্ট গ্যালারি না এয়ারপোর্ট- ধন্ধে পড়ে যাওয়া

একটা উৎকণ্ঠা নিয়ে গারুডা ইন্দোনেশিয়ার যোগজাকার্তাগামী বিমানে উঠলাম। গারুডা ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। এই ‘গারুডা’ শব্দটি এসেছে হিন্দুপুরাণের গরুড় বা গরুৎমান থেকে। গরুড় দেবতা বিষ্ণুর বাহক। আদিগ্রন্থ বেদে জ্ঞানের প্রতীক হিসেবেও গরুড়কে দেখানো হয়েছে। মূলত মানুষের মাথাধারী এক ঈগল পাখি হচ্ছে গরুড়। সে তার মায়ের দাসত্বমুক্তির জন্য দেবতাদের কাছ থেকে জোর করে অমৃত নিয়ে এসেছিল। গরুড় মাতৃপ্রেম ও সাহসের প্রতীক। দেশ তো প্রতিটি নাগরিকের কাছে মায়ের মতোই। তাই গরুড় স্থান পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় প্রতীকে।   

গারুডা ইন্দোনেশিয়ার মেয়েগুলো সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মেয়েগুলোর চেয়ে সুন্দর ও কর্মতৎপর মনে হলো। ছোট প্লেন। হাঁটার রাস্তার দুপাশে তিনটি করে আসন। আমার আসন হলো মধ্যে। পাশে ইন্দোনেশিয়ার দুই যুবক যুবতী। যুবক পরিবশকর্মী। থাকে জাকার্তা। যাচ্ছে একটি কনফারেন্সে কথা বলতে। মেয়েটি যোগজাকার্তার চিকিৎসক। পেশাগত কাজ শেষে বাড়ি ফিরছে। অনেক কথা হলো দুজনের সঙ্গে। বলল দাঙ্গা নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। ইন্দোনেশিয়া বিশাল দেশ। এক মাথা থেকে আরেক মাথার দূরত্ব ৫০০০ কিলোমিটার। মানে লন্ডন থেকে আফগানিস্তান। কাবুলে বোমা ফাটলে যেমন লন্ডনে মানুষ ভয় পায় না, এখানেও একই অবস্থা। যেখানে মারামারি হয়েছে, সেটা যোগজাকার্তা থেকে কম করে ৬০০ কিলোমিটার। আমার মুখে হাসি ফুটল। আলাপ জমে উঠল দুজনের সঙ্গে।

ঘণ্টাখানেক যেতেই কোমরে বেল্ট বাধার ঘোষণা এলো। অর্থাৎ নামবার সময় এসেছে। ডাক্তার মেয়েটিকে টপকে জানালা দিয়ে দেখতে লাগলাম। মনে হলো সমুদ্রের পাশে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। তাতে নেমে পড়ছে বিমান। যোগজাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার ৫ম বৃহৎ শহর। হিসাব মতে একটা মফস্বল শহরই হবে। আশা করি সামনের এক সপ্তাহ প্রকৃতির কোলে ভালোই কাটবে। 

একটি স্থানীয় বিমানবন্দর হিসেবে বেশ বিশাল যোগজাকার্তার বন্দরটি। পরে শুনেছি এটাও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জাকার্তা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগজাকার্তার বিমানবন্দরের হয়ত তুলনা চলে না, কিন্তু তার একটা নিজেস্বতা আছে। যা আমাদের মুগ্ধ করে দিলো। বিমানবন্দরজুড়ে অসংখ্য শিল্পকর্ম। ভাস্কর্য চিত্রকলার ছড়াছড়ি। সব কিছুতেই এ অঞ্চলের কৃষিপ্রধান সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। আরেকটি জিনিস আমাকে অবাক করেছে, বিমানবন্দরটির প্রত্যেকটি কর্মী আমাদের করজোড়ে মাথা ঝুঁকে স্বাগত জানিয়েছে। মেয়েরা হিজাব পরা। কিন্তু মাথা ঝুঁকাতে তাদের কুণ্ঠা নেই। সাধারণত এয়ারলাইন্সের কর্মীদের কাছ থেকে এমন বিগলতি আচরণ দেখা যায়। কিন্তু এখানে সকল কর্মী। নিশ্চয়ই অনেক সরকারি লোকও আছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে যেন একটা সমবেত চেষ্টা চারদিকে। ভালো লাগল বিষয়টি। 

যোগজাকার্তাতে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম প্রচীন বৌদ্ধ মন্দির

এয়ারপোর্টেই হোটেল হায়াত রেজেন্সির কাউন্টার আছে। সেখানে যেতেই পেয়ে গেলাম জয়সী পোয়ানকে। সে ইন্দোনেশিয়ার মেয়ে। বর্তমানে ইউনেস্কোর দিল্লি অফিসের চিফ অফ এডুকেশন। বের হতেই দেখলাম সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছে ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি কালো টয়োটা এভানজা গাড়ি। একটাতে উঠলাম আমরা। কর্নেল জুনায়েদ জানালেন এ গাড়ি বাংলাদেশেও একসময় পাওয়া যেত। কিন্তু জনপ্রিয়তা পায়নি। ইন্দোনেশিয়া ভৌগোলিক নৈকট্যের জন্য জাপানি গাড়ি নির্মাতাদের আকর্ষণীয় স্থান। তারা বিপুল বিনিয়োগ করেছে এ দেশে। এখন ইন্দোনেশিয়ায় ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির কারখানা খুলতে পশ্চিমারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এর প্রধান কারণ ইন্দোনেশিয়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো নিকেলের মজুদ আছে। ব্যাটারি তৈরিতে নিকেল গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

কার্পেটের মতো মসৃণ পথ দিয়ে ছুটতে লাগল গাড়ি। মেঘলা দিন। চারদিকে সবুজ। দূরে কালচে সবুজ পাহাড়। এদের অনেকগুলো সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। ইন্দোনেশিয়ায় ১২৭টি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি আছে। এর জন্য ইন্দোনেশিয়াকে ‘ফায়ার রিং অব প্যাসিফিক’ বলা হয়। এর বড়ো অংশই জাভা দ্বীপে। যোগজাকার্তায় বহুকাল আগে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। ৮০০ বছর এ জায়গাটি পরিত্যক্ত ছিল। পরে আবার বসবাস শুরু হয়। ভূমিকম্প আর আগ্ন্যুৎপাত এখানকার মানুষের জীবনের অংশ। ২০১৪ সালের ভয়াবহ সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ার ১ লক্ষ ৬৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। সুমাত্রা দ্বীপে বেশি ক্ষতি হয়েছিল। ২০০৭ সালে আরেকটা সুনামিতে জাভার হাজার খানেক মানুষ মারা যায়। ২০১৮-র সুনামিতে সুলায়েসি দ্বীপের প্রায় ৪ হাজার মানুষ মারা যায়। 

গত বছরের ডিসেম্বরে পূর্ব জাভার সেমেরু পর্বতের অগ্ন্যুৎপাতে ২৭ জন মানুষ মারা যায়। গৃহহীন হয় হাজার হাজার মানুষ। মজার ব্যাপার প্রায় ৫ কোটি মানুষ কিন্তু এই আগ্নেয়গিরির আশেপাশেই থাকে। ভয় পায় না? নিশ্চয়ই পায়। তাহলে থাকে কেন? আসলে এই অগ্ন্যুৎপাত তাদের কাছে আশীর্বাদের মতো। কারণ অগ্নুৎপাতের পর ছাই ও লাভা জমিতে পড়ে জমির ঊর্বরতা বাড়িয়ে দেয়। আর বিষুবীয় জলবায়ু হওয়াতে এখানে সারা বছর বৃষ্টিপাত হয়। ফলে কী পরিমাণে শস্য এসব অঞ্চলে ফলে ভাবা যায় না। চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল দুপাশের ফসলের ক্ষেতে। ধান আর গমের ক্ষেত। মাঝে মাঝে উঁকি দিচ্ছে লোকালয়। টালির পেলাই সব বাড়ি। নিশ্চয়ই ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পেতে এভাবে তৈরি। রাস্তায় গাড়ির শৃঙ্খলা চোখে পড়ার মতো। কেউ লাইন ক্রস করে না। যারা গাড়ি পার্ক করেছে, রাস্তার ডিমার্কেশনের বাইরে। ইন্দোনেশিয়া যে আমার অজান্তেই এতো সভ্য ও সুশৃঙ্খল দেশ হয়ে গেছে দেখে অবাক হলাম। পথের মধ্যে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। এক অনির্বচনীয় সন্ধ্যা নেমে এলো। রাতের আঁধারে আলো ঝলমলে যোগজাকার্তা শহরে ঢুকলাম। গাড়ির ড্রাইভার রফিক। তার সঙ্গে আড্ডা জমল। তার ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। কেবল এ শহরেই ১১টি বড়ো ইউনিভার্সিটি আছে।

প্রায় দেড় ঘণ্টা পর হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে পৌঁছালাম। রাস্তার কাজ চলায় একটা জায়গা কিছুটা জ্যাম ছিল। তাই সামান্য বিলম্ব হলো। (চলবে) 

পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় এক সপ্তাহ

/তারা/ 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়