ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

মুকুটহীন সম্রাটের সান্নিধ্যে

ফয়সাল আহমেদ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ৩১ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১৩:৩১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মুকুটহীন সম্রাটের সান্নিধ্যে

“বসন্ত বাতাসে, ও সইগো
বসন্ত বাতাসে।
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ
আমার বাড়ী আসে।”...

বসন্তের আগমনীতে এক বিস্ময়কর বাউল প্রতিভা শাহ আবদুল করিম জন্মেছিলেন। কখনো নিখাঁদ মানবপ্রেমে বা দেশপ্রেমে, কখনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে-দ্রোহে এবং কখনো ভাবজগতের অতল জলে ডুব দিয়ে তুলে এনেছেন মানিক-রতন। বাউল শাহ আবদুল করিম তাঁর এই ভাবসম্পদের প্রকাশ করেছেন সহজ সরল গানের কথায় এবং মুগ্ধ করা সুরে। তাই তাঁর গান হয়েছে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়।

২০০৬ সালের ৩১ অক্টোবর। আমার জীবনের অসাধারণ এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেদিন। প্রথমবারের মতো বাউল শাহ আবদুল করিমের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল আমার। প্রথমে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের দিরাই। সেখান থেকে নৌপথে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগে শাহ আবদুল করিমের বাড়ি উজানধল গ্রামে পৌঁছাতে। সুনামগঞ্জ শহর থেকে সুরমা নদীর উপর দিয়ে আমাদের ইঞ্জিন নৌকা এগিয়ে চলেছে উজানধলের উদ্দেশ্যে। নৌকা নয়, ছোটখাটো লঞ্চ বলা যায়। নিচে কাঠের বেঞ্চ দিয়ে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা। উপরে রড দিয়ে ছোট ছোট চেয়ার। নদী আর হাওরের সৌন্দর্য দেখব বলে তীব্র রোদ সত্ত্বেও আমরা উপরেই বসি। নৌকা আজমিরিগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। দিরাই থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে আজমিরিগঞ্জ। মাঝে পড়বে উজানধল। আমরা ইতোমধ্যে আধা ঘণ্টার মতো এগিয়েছি। আমি ও আমার ভ্রমণসঙ্গী সিলেটের বন্ধু জীবন প্রশান্ত চিত্তে প্রকৃতি উপভোগ করছিলাম। আর গুণগুণ করে গাইছিলাম ভাটি অঞ্চলের নানা রকম গান। বলাবাহুল্য গানগুলো ছিল শাহ আবদুল করিমেরই। কী কারণে নৌকার ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলো। জীবন গেয়ে উঠলো ‘নৌকা চলে না, চলে না’ বলে। প্যারোডি শুনে আমি হেসে উঠি। 

মাঝি ও তার সহকারী অনেক চেষ্টা করে আবার চালু করল ইঞ্জিন। কিছু দূর যাওয়ার পর ইঞ্জিন আবারো বন্ধ হয়ে গেলো। এবার নিচ থেকে যাত্রীরা হুড়মুড় করে বেরিয়ে এলো। ততক্ষণে নৌকো একটি ঘাটে ভিড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো নৌকোর নিচে পানি উঠতে শুরু হওয়ায় এই হুড়োহুড়ি। মাঝি এবার আর ইঞ্জিন চালুই করতে পারল না। আমরা আরেকটি নৌকায় উঠলাম। এটি উজানধল পর্যন্ত যাবে। 

আমরা ইতোমধ্যে সুরমা থেকে কালনী নদীতে পড়েছি। নৌকা যতোই এগুচ্ছে ভাটি অঞ্চলের আসল রূপ আমাদের কাছে স্পষ্ট হতে লাগলো। বাউল করিমও আরো জীবন্ত হয়ে ধরা দিতে লাগলেন আমার কাছে। আমার অনুজ সাঈদ একই বছরের মার্চ মাসে বাউল শাহ আবদুল করিমের ৯০তম জন্মদিনে আয়োজিত উৎসব ও মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল। মেলা থেকে ফিরে এসে অনেক গল্পের সাথে সাঈদের যে কথাটি আমার মনে দাগ কাটে ‘দীর্ঘ নৌযাত্রা, হাওর ও কালনীর কূলে গিয়ে আমার মনে হয়েছে বাউল করিমের মতো এমন প্রতিভা জন্ম হওয়ার পেছনে প্রকৃতিও একটা কারণ।’ 

সত্যি ভাটি অঞ্চল শুধু শাহ আবদুল করিমই নন, হাছন রাজা, দূরবীন শাহ, রাধারমন দত্ত, শীতালং শাহ, আরকুম শাহ, সৈয়দ শাহ নুর, রশিদউদ্দিন, উকিল মুন্সী, জালাল খাঁসহ আরো অনেক সাধক বাউলের জন্ম দিয়েছে। বাউল গানের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা লালন শাহ কুষ্টিয়ার যে অঞ্চলে জন্ম নিয়েছেন, সেটাও পদ্মার তীরের প্রান্তিক অঞ্চল ও প্রান্তিক মানুষের এলাকা। আমরা যদি আরো বাউল বা লোকজ সঙ্গীত প্রতিভার দিকে তাকাই পাঞ্চু শাহ, সাধক মনমোহন দত্ত, কবিয়াল বিজয় সরকার, দ্বিজ দাসসহ আরো বহু গুণী সাধকদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। শিল্পের প্রাণ-প্রবাহের জন্য প্রয়োজন প্রকৃতি এবং মানুষের সম্মিলনে পারস্পরিক ভালোবাসার মেলবন্ধন। তবেই না জেগে ওঠে সৃষ্টির জোয়ার। শিল্প-সাহিত্য সাধনা এবং সৃষ্টির জন্য পরিবেশ ও প্রকৃতি একটি বড় অনুষঙ্গ। নগরে বসে আমরা তার নাগাল পাই না। নৌকায় ভাসতে ভাসতে, রঙ-বেরঙের নৌকা দেখতে দেখতে বাস্তব প্রকৃতির সাথে মানুষকে রূপক করে করিমের একটি বিখ্যাত গান মনে পড়ে:
কোন মেস্তুরী নাও বানাইল
কেমন দেখা যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ুর পঙ্খী নায়
গানটির শেষ দুটি লাইন:
কোথা হইতে আসে নৌকা
কোথা চলে যায়...

পাঁচ শতাধিক গানের স্রষ্টা বাউল করিমের গানে বারবার উঠে এসেছে ভাটি অঞ্চলের চিত্র। উঠে এসেছে প্রকৃতি ও মানুষের সংগ্রামের কথা। নৌকাকে প্রতীক ধরে বাউলের আরেকটি  গান হচ্ছে:
মহাজনে বানাইয়াছে
ময়ুরপঙ্খী নাও
সুজন কাণ্ডারী নৌকা
সাবধানে চালাও

বাউল সাধকগণ রূপক, প্রতীক ও উপমা দিয়ে গভীর তত্ত্বের কথা বলেন। তাই বাউল গান শুধুমাত্র কথা ও সুরে হারিয়ে যাওয়ার বিষয় নয়। বাউল গান গভীর উপলব্ধিরও বিষয়। 
মানুষ হয়ে তালাশ করলে মানুষ পায়
নইলে মানুষ মিলে নারে বিফলে জনম যায়

অসংখ্য গানে মানুষ বন্দনা করেছেন শাহ আবদুল করিম। আমরা গানের কথা ও ভাবের জগতের ডুব সাঁতার দিতে দিতে কখন যে বাউলের বাড়ির ঘাট পেরিয়ে খানিকটা দূরে চলে গেছি টেরই পাইনি। মাঝি বড় আক্ষেপ করে বললেন- আগে বলইে হতো, ‘পীর’ সাহেবের বাড়িতেই নামিয়ে দিতাম। আসলে উজানধল থেকে আমরা ধল বাজারে চলে এসেছি। এখান থেকে এক কিলোমিটার ফিরতি পথে উজানধলে বাউলের বাড়ি। আমরা বাকিটা পথ হেঁটেই রওয়ানা দেই। পথিমধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন কোথায় যাবো? আমরা বলি, বাউল করিমের বাড়ি যাবো। সবাই সম্মানের সাথে দেখিয়ে দিয়েছেন তাদের প্রিয় ‘পীর’ সাহেবের বাড়ি। পরে বাড়িতে গিয়েও দেখেছি অনেক ভক্ত-অনুরক্তগণ নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন মূলত ‘পীর’ সাহেবের কাছ থেকে দোয়া নেয়ার জন্য। গভীর সাধনা দ্বারা সিদ্ধ সাধকগণ, যিনি হয়তো মূলত সঙ্গীত সাধক, তিনিও গণমানুষের কাছে উচ্চ আসন লাভ করেন। আমাদের যুগের বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমও সকল মানুষের কাছে সেই আসন লাভ করেছেন। 

লম্বা পরিপাটি করে গোছানো বাবরি চুলওয়ালা এক যুবক আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে বাড়িরে ভেতরে নিয়ে যান। পরে জেনেছি এই বাবরি দোলানো চুলের মালিক কবি নজরুল ইসলাম রানা। নদীর ঘাট থেকে উঠানে উঠলে প্রথমেই চোখে পড়ে বাঁশ ও ছনের ছাউনি দেয়া ঘরে বসে শাহ আবদুল করিমের একমাত্র ছেলে শাহ নূর জালাল গান গাইছিলেন। আমরা যেতেই গান থামিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন। মোটামুটি বড়ো একটি বাড়ি। পাশেই বয়ে চলেছে কালনী নদী। উজানধল গ্রামটি পড়েছে বিশাল হাওর এবং সদাব্যস্ত কালনীর পাড় ঘেঁষে। শাহ নূর জালালকে অনুসরণ করে আমরা পৌঁছে যাই একটি ঘরে। এখানে বসে আছেন আমাদের এই সময়কার শ্রেষ্ঠ বাউল প্রতিভা। জীবন্ত কিংবদন্তী। অতি সাধারণ একটি ঘর। ঘরে দুটি খাট, কয়েকটি কাঠের চেয়ার, ছোট্ট একটি খাবার টেবিল। ঘরের দেয়ালের এক অংশে অনেকগুলো বাঁধানো সনদপত্র। মলিন কাঠের ফ্রেমের সদনপত্রগুলো সারিবদ্ধভাবে টাঙ্গিয়ে রাখা হয়েছে। মহৎ মানুষের জীবন যাপন অত্যন্ত সাদাসিধে হয়। বাউল করিমও এর ব্যতিক্রম নন। 

একুশে পদক থেকে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত এই শিল্পী পুরস্কারের আকাঙ্খায় বা অর্থের জন্য কিছু সৃষ্টি করেননি। সৃষ্টির আনন্দেই সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্র থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তাকে যে ‘সম্মান’ দেওয়া উচিত ছিল তা দেয়নি। তাঁর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে অনেকে ব্যবসা করেছে কিন্তু তাঁকে যথাযথ ‘সম্মানী’ও প্রদান করেনি। বরং ঠকিয়েছে অনেকে।

বাউল শাহ আবদুল করিমের সঙ্গে নূর জালাল ভাই আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। উদাসভাবে বাউল আমাদের তাকিয়ে দেখেন এবং বারবার সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় একটি প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের বাড়ি কোথায়? এতো দূর থেকে, এতো কষ্ট করে কেনো এসেছেন?‘ 

আমি বলি, আমরা আপনাকে দেখতে এসেছি। খুব বিষণ্নভাবে বললেন, ‘আমি এখন আর গাইতে পারি না, গান লিখতে পারি না।’ শাহ আবদুল করিমের এই আক্ষেপ আমাকে তীরের মতো বিদ্ধ করল। একজন সৃষ্টিশীল মানুষের সৃষ্টি থেকে দূরে থাকার তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করলাম। তাঁর গভীর ও অপলক দৃষ্টি দূরে কোথায় কী যেনো খুঁজে ফেরে! আমার কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি থেকে দূরে থাকা, অসুস্থ সময়কার উদাস দৃষ্টির কথা মনে পড়ে যায়। এক আশ্চর্য ব্যথা অনুভব করি বুকের মধ্যে।নিজেকে সামলে নিয়ে বলি, ‘আপনি যা সৃষ্টি করেছেন তা আমাদের জন্য অনেক বড়ো সম্পদ। আপনি আপনার সৃষ্টির মধ্যে মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।’ 

এক সময় নজরুল রানা, জীবন এবং শাহ নূর জালাল গানের ঘরে চলে যান। আমি বসে থাকি বাউল সম্রাটের পাশে। দু’জনই নীরবে বসে থাকি দীর্ঘক্ষণ। বাউলের উদাস দৃষ্টি দেখতে দেখতে বিস্মিত হয়ে ভাবি, কত বিচিত্র গান সৃষ্টি  করেছেন এই মানুষ! কী অসাধারণ কথা ও সুরের এক একটি গান সৃষ্টি হয়েছে ভেবে আমি অবাক হই। একে একে মনে পড়ে ‘আমি ফুল বন্ধু ফুলের ভ্রমরা’, ‘কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া’, ‘কৃষ্ণ আইলা রাধার কুঞ্জে ফুলে বইলা ভ্রমরা,’ ‘তোমরা কুঞ্জ সাজাওগো আজ আমার প্রাণনাথ আসিবে,’ ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু, ছেড়ে যাইবায় যদি’ এমনই কত শত হৃদয়ছোঁয়া প্রেমের গান।

বাউল শাহ আবদুল করিমের স্ত্রী সরলা বিগত হয়েছেন বহু বছর হয়। বাউল করিম তাঁর স্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ ছিলেন সবসময়। তাঁর ভাষায় ‘সরলা না থাকলে বাউল করিম তৈরিই হতো না।’ তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীর সমাধি বাড়ির উঠানে অতি সযতনে রক্ষিত। বাউল করিম তাঁর স্ত্রীর নামেই একটি গ্রন্থ লিখেছেন ‘আফতাব সঙ্গীত’। সরলা’র আসল নাম হচ্ছে আফতাবুন্নেসা। বাউল শাহ আবদুল করিমের অন্য দুটি বিখ্যাত গানের বই হচ্ছে ‘কালনীর কূলে’ এবং ‘কালনীর ঢেউ’।

বাউল শাহ আবদুল করিম বসেছিলেন ঘরের সদর দরজার সামনে। এর মধ্যে দিরাই থেকে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ একটি পরিবার আসে। তারা এসেছেন ‘পীর সাহেবে’র কাছ থেকে দোয়া নিতে। তিনি সবার খোঁজ খবর নিলেন পরম মমতায়। ভক্তগণ কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলেন। করিমের উপলব্ধিতে সেই দিন এখন আর নাই। বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক দুরবস্থা মানুষের মনে কী যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, সেইকথা জানতে ইচ্ছে করছিল। ইচ্ছে করছিল জিজ্ঞেস করতে, এই গানেরই শেষ চরণের কথা:
...করি ভাবনা, সে দিন আর পাব না
ছিল বাসনা, সুখী হইতাম
দিন হতে দিন আসে যে কঠিন
করিম দ্বীনহীন কোন পথে যাইতাম? 

এই যে ‘কোন পথে যাইতাম', করিম কী পেয়েছেন সেই পথের সন্ধান? আজ এই কঠিন সময়ে, প্রশ্নাকুল মানুষ তো সেই পথেরই সন্ধান করছে। বাউল করিম তাঁর গানের বাণীতে অনুসন্ধান করেছেন মানুষে মানুষে কেনো এতো বৈষম্য? কেনো এতো দুঃখ-কষ্ট? গান ও ভাবনায় ‘দুঃখ জয়ের মন্ত্র’ সন্ধানী বাউল তাই প্রশ্ন রেখেছেন:
জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে বলো ওগো সাঁই ?
এ জীবনে যতো দুঃখ কে দিয়াছে বলো তাই ।
দোষ করিলে বিচার আছে, সেই ব্যবস্থা রয়ে গেছে
দয়া চাইনা তোমার কাছে, আমরা উচিত বিচার চাই
দোষী হলে বিচারে, সাজা দিবা তো পরে
এখন মারো অনাহারে কোন্ বিচারে জানতে চাই।

দুপুরের আহার শেষে শাহ নূর জালালের কণ্ঠে, বাউল শাহ আবদুল করিম এবং নূর জালালের নিজের লেখা ও সুর করা কয়েকটি গান শুনে আমরা সিলেটে ফেরার প্রস্তুতি নেই। একজন মুকুটহীন সম্রাটের কাছ থেকে আমাদের বিদায় নিতে হবে এখন। বাড়ির সামনে থেকেই আমরা দিরাই যাওয়ার নৌকা পেয়ে যাই। যাত্রী আমরা দু’জনই। আমাদের বারণ সত্ত্বেও অসুস্থ শরীর নিয়ে বাউল সম্রাট ছেলে ও নজরুল রানার কাঁধে ভর দিয়ে নদীর ঘাট পর্যন্ত আসেন। জালাল ভাই বলেন, অতিথি এলে বাবা এভাবেই বিদায় জানান। শাহ আবদুল করিম হাত নেড়ে আমাদের বিদায় জানালেন। নৌকা চলতে শুরু করেছে দিরাই অভিমুখে। লক্ষ্য করি, আমরা যতক্ষণ না দৃষ্টিসীমার বাইরে গিয়েছি, ততক্ষণ নদীর ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকেন শাহ আবদুল করিম। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ছেলে নূর জালাল এবং নজরুল রানার সহযোগিতায় বাড়ি অভিমুখে রওয়ানা হন তিনি। 

তারা//

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়