ল্যাম্পপোস্টের শহরে এক লৌহ কবরী
দিলরুবা আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম
অনেক দিন আগের কথা, পাহাড় ঘেরা সবুজ শান্তির কোলে বসে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের ৫১৮ নম্বর রুমের জানালা দিয়ে দেখা যেত ঢিমেতালে মিটিমিটি করে জ্বলতে থাকা একটি ল্যাম্পপোস্ট। একটিই ছিল ওই বনজ বিথিময় নিরিবিলি লোকালয়ে যাতায়াতের পথের উপর। পাঁচতলার উপর থেকে তাই দেখতো মেয়েটি বসে বসে, আনমনে, গভীর নিঝুম অন্ধকার রাতে। সে সময় ছিল না ফেইসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ার যুগের লাগাতার ঝিঁঝিঁ ডাক। আটকে থাকতো না চোখ কেবল পিসি বা সেল ফোনে। চোখ গিয়ে ঠেকত চারদিকের অবয়বে, প্রকৃতিতে। শিয়াল বা কুকুরের ডাকে বহু রাতে উঠে গিয়ে মেয়েটি ভাবত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ওই রকম কোনো একটা ল্যাম্পপোস্টের নিচে লেখাপড়া করেছেন, পড়েছেন, একাকী। সেই মেয়েটিই যখন একদিন এক ল্যাম্পপোস্টময় শহরে এসে দাঁড়ালো তার অবাক হওয়া যে কি অপরূপ ছিল সে কথা বুঝাতেই কি এই কলম ধরা!
সেদিনের সেই মেয়েটিই অবাক হয়ে প্যারিসের আলোর ঝলকানিতে মুগ্ধ হতে হতে রাতের আইফেল টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে যেন মোহিত চোখে আবিষ্কার করলো আলোর সৌন্দর্যের কোনো বিকল্প নেই। চোখ ধাঁধানো এই সৌন্দর্য! সম্মোহনী এর শক্তি। বলাবাহুল্য, প্যারিসই ইউরোপের প্রথম শহর যেখানে গ্যাস চালিত ল্যাম্পপোস্ট দেখা যায়। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে পুরো ইউরোপ যখন তলিয়ে যেত অন্ধকারে, সেখানে প্যারিসের বুলেভার্ড আর স্ট্রীটগুলো আলোয় ঝকমক করতো। এ কারণে প্যারিস খ্যাত ‘আলোকিত নগরী’ বা ‘লা ভিলে লুমিয়ের’ হিসাবেও। এখানেই প্রচন্ড আলোর ঝলকানি নিয়ে সন্ধ্যা হতেই ঝিলিক দিয়ে ওঠে আইফেল টাওয়ার।
আইফেল টাওয়ারের রেপ্লিকা আমি আমেরিকার লাস ভেগাসে দেখছি। কিন্তু সে দেখা আর এই দেখার অনুভবে রয়েছে আকাশ পাতাল প্রভেদ। লোহাতে যেন লেইসের ক্রুশকাটার কারুকাজ, সুচারু তীক্ষ্ণ কোনো সুঁই ভেদ করেছে একে আঁকতে, বাঁধতে, সাজাতে। ধাতবের মাঝে সুর তুলেছে যেন এক নিমগ্ন ঋষি, তাই যেন তাকে, সেই কারিগরকে বলা হচ্ছে magician of iron. আর সে বলছে, “I ought to be jealous of the tower. She is more famous than I am.”
জগৎ খ্যাতি এনে দিয়েছে তাকে তার এই কর্ম ও কীর্তি। বহুদূরে চট্টগ্রামের এক পাহাড়পুরিতে থেকেও এক মেয়ে অবাক চোখে চেয়েছিল এর দিকে। নন্দিত এই ধাতব কর্ম মর্মর ভেদ করে অর্জন করেছে সাফল্যের অধিপত্য। ২০ হাজার বাতিতে ঝলমলে, ৭২ জন সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের কর্মে দাঁড়ানো ১০৬৩ ফুট লম্বা (৮১ তলা বাড়ির সমান) ঐতিহাসিক গুরুত্বধারী এই স্তম্ভ, যা নিঃসন্দেহে গুস্তাফ আইফেলের এক অসাধারণ মেধাময় কীর্তি।
কোটি কোটি মানুষের চোখ এর দিকে, কোটি মানুষ ছুঁয়ে এসেছে এটি। সেই মেয়েটিও একদিন দেখল; এই আমি একদিন তা দেখলাম। আকাশের বুকে যেন বিশাল এক বেনুনি ঝুলানো ওই আইফেল টাওয়ার আমাদের সম্ভাষণ জানাল। আমার মনে হলো ও হচ্ছে এক লৌহ কবরী। পৃথিবীর মাটি কামড়ে মহাশূন্যে ছোড়া এক বেনুনি।
লোহার সৌন্দর্য দেখতে, বুঝতে, মানতে হলেও বুঝি এক ধরনের পূর্বপ্রদত্ত উপাত্ত লাগে। একটা কাঠের পিঁড়ি কেবলি একটা কাঠের টুকরা যতক্ষণ না আমি জানি এর ইতিহাস। যেমন, আমার দাদি বসেছে সারা জীবন ওই পিঁড়িটিতে তাই এটি আমার আবেগের কাছে মূল্যবান। বা আমার দাদা কোনো এক দ্বীপ থেকে কোনো এক অমাবস্যার রাতে এক বাঁদরের গাছের তল থেকে ওটা কুড়িয়ে পেয়েছিল আর তারপরই কাচারীতে ওই মোড়া বা পিঁড়িতে বসে কাজ করতে গিয়ে কপালটাই হা হা হা করে খুলে গেল। সেই খুল যা সিসিম ফাঁকের গল্পটা ভালোবাসায় ওই পিঁড়িটাকে।
এতো গল্প, এতো কথা যাকে নিয়ে শুনে এসেছি শিশুকাল থেকেই তাকে, সেই লৌহ মানবীকে দেখবার সাধ পূরণ হওয়ার গল্পটাও আমার জন্য কম চমৎকার হবার কথা নয়! হয়েছেও তাই। আমার সাথী ছিল আমার বর আর মেয়ে। ওরা থাকলে সাথে যে কোনো যাত্রায় আমি এমনিতেও থাকি রূপসী কোনো এক ভুবনে।
টাওয়ারটি প্রথমে স্থাপনের প্রস্তাবনা ছিল স্পেনের বার্সেলোনায়। তাই যদি হতো তাহলে আমাদের আগে দেখে চলে যাওয়া সেই আনুমানিক প্রায় ৩০ কোটি লোক তখন যেত স্পেনে, প্যারিসে না। আমরাও যেতাম বার্সেলোনায়। সেদিনের সেই বার্সেলোনার নগর কর্তৃপক্ষের লোকজন আজ বেঁচে থাকলে কেবল হাতই কামড়াতো। আমার মেয়ে শুনে বলল, ওতে ওরা আরো বেশি ব্যথা পেত, নিজের হাত নিজে কেউ কামড়ায়? ও যেহেতু বড় (আঠারো হলেই বা পেরিয়ে গেলেই বড় হয়ে যাওয়া হয় এই পশ্চিমা বিশ্বে ) হয়েছে ভিন্ন মহাদেশে তাই এতোটা বড় হয়েও সে বোঝে না আমাদের অনেক অনুপ্রকাশ। কিন্তু ওর বাবা তো বুঝে, জানেও, তারপরও বলছে, আমার মনে হয় একে অন্যের হাত কামড়ে দিত, নিজের হাত নিজে কামড়াত না। আরো বলছে, শুম ঠিকই বলেছে। দৌড়ে দৌড়ে যেত একজন আরেকজনের হাত কামড়াতে। আমি আর কি বলবো! মেয়ের দিকে চেয়ে বললাম, দেব নাকি তোমার বাবার হাতে একটা কামড়! আমার মেয়েও কম পাজি না। সাথে সাথে বলল, আব্বুর কাছে ছোট এক বোতল স্যানিটাইজার আছে, এখন প্রশ্ন হচ্ছে ওটা সে তোমার দাঁতে স্প্রে করবে না তার হাতে?
বার্সেলোনার নগর কর্তৃপক্ষের সেই দিনের না পছন্দ করায় প্যারিসের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার রব আজও চারদিকে। ১৮৮৯ সালের ৩১ মার্চে মাত্র দুই বছর, দুই মাস, দুই দিনে ৩০০ শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল ‘লা দামে দি ফার’ অর্থাৎ লোহার নারীর। আর আমরা তাই দেখতে আগত। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে আমরা পৌঁছে গেলাম আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে।
দু’একর জমিজুড়ে এর ভিত্তি। টাওয়ারটিতে আছে অর্ধবৃত্তাকার চারটি তোরণ। লোকারণ্য। ফুর্তিময় চারদিক। উবার ড্রাইভার আমাদের যে জায়গায় নামিয়ে দিলো, বলল নামার জন্য এটাই সবচেয়ে নিকটতম স্থান, এরপর পদযুগল ভরসা। বেড়াতে গেলে হাঁটতে হবে প্রচুর। গায়ে শক্তি থাকাকালীন আমাদের উচিত ঘুরে নেওয়া, এতো দোড়ঝাপ বুড়া বয়সে কষ্টকর। কিন্তু যেটা হয় সেটা হচ্ছে যৌবনে পয়সা থাকে না, আবার যখন টাকা হয় তখন বিগত যৌবন, এ এক মহা অসম টানাপোড়েন। এটা আছে তো ওটা নাই। ড্রাইভার বলেছে, সোজা গিয়ে বায়ে গেলেই দেখতে পাবো টাওয়ারের প্রবেশ চত্বর। আশেপাশে আছেই তো হাটমান ধাবমান টুরিস্ট, ওদের পিছু নিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। বেশি দূর যেতে হলো না, একটু এগুতেই চোখে পড়লো টাওয়ারের প্রবেশ পথ। হাতের ডান পাশে রয়েছে কিছু ব্রেকফাস্ট শপ, সব কয়টির চেয়ার সামনের দিকে মুখ করা। পাশাপাশি বসার ব্যবস্থা। কম জায়গার কল্যাণে রোমান্টিকতা উপচে পড়ছে যেন পাশাপাশি ঠাসাঠাসি করে বসার এই ব্যবস্থাপনায় যা কিনা প্রায় পুরো শহরেই।
আমাদের পাশ দিয়েই গেলো দুইটি পরিবার, একই রকম জামা পরা। এ টু জেড সবার একই ধরনের পোশাক।বুঝাই যাচ্ছে বেড়ানো উপলক্ষে তারা অনেক কসরত করে এই পোশাক বানিয়েছে। সবচেয়ে ছোট যেটি, যার বয়স হবে বেশি হলে তিন বছর, সেই গুল্টুপুল্টু গুদগুদে বাচ্চাটিও দেখি একই রকমভাবে সজ্জায় সজ্জিত। সানগ্লাস তো আছেই, তাকে আবার কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাবাটি ধরে রেখেছে। সে চলাচল করতে পারছে কিন্তু নিয়ন্ত্রিত। দৌড়ে কোথাও পালাতে পারবে না। মনে হয় বাঁদরের শিরোমণি। এই রকম কিউট কিউট বাঁদর মার্কা আরো অনেক বাচ্চাকেই আমি দেখেছি আমেরিকাতেও বেঁধে নিয়ে ঘুরতে, এমন কি অস্ট্রেলিয়াতেও তাই দেখেছি। প্রথম যখন দেখেছিলাম মনে হয়েছে এ বড়ো নিষ্ঠুরতা। এখন চোখ সয়ে গেছে। কতক্ষণ কোলে রাখবে বা প্রেমে বা স্টলারে বসিয়ে রাখবে তার চেয়ে সাথে বেঁধে নিয়ে চলে। আর যতগুলো বাচ্চা এদের সাথে এদের অনেক বিড়ম্বনা আছে। গুনে দেখলাম নয়জন শিশু আছে বিভিন্ন বয়সী। আর দুইজন বাবা, দুইজন মা। তবে কার কয়টা বাচ্চা?
আমার মেয়ে বলল, তুমি ওদের জিজ্ঞেস করতে যেও না।আমার বর বলল, ওদের দিকে তাকাবার দরকার নেই। কিন্তু আমার খুব মজা লাগছে ওদের দেখতে। বাচ্চাগুলোর কান্ড কারখানাও বেশ মজাদার! দড়ি বাঁধা শিশুটি আমাকে একটু পরপর ফ্লাইং কিস দিচ্ছে। ইমতিয়াজ বলল, ওই ছেলেকে এই জন্যই বাপ বেঁধে রেখেছে। পরের দুইজনও দেখলাম ওকে নকল করে আমাকে ছুড়ছে ফ্লাইং কিস। দুই মায়ের একজন বাচ্চাদের নজর অনুসরণ করে আমার দিকে চেয়ে মিটিমিটি একটা হাসি দিল। চলার পথে এটাই আনন্দময় যেটা আমরা দেখি এবং পাই চারপাশ থেকে। ডান দিক দিয়ে ভারতীয় এক পরিবার হনহন করে এগিয়ে যাচ্ছে। ওই পরিবারের এক বয়স্ক মহিলা আছেন যিনি পরে আছেন শাড়ি। শাড়ি পরে উঠবেন আইফেল টাওয়ারে, বেশ বেশ! পরিবারের নাতনি গোছের কলেজ পড়ুয়া একজন পাশে পাশে যাচ্ছে বৃদ্ধার সাহায্যার্থে। তার হাতে ওই বৃদ্ধার জন্য পানি, লাঠি, ছাতা, শাল, তার নিজের আর দাদির ব্যাগ, কত কি আছে!
কোন দিক থেকে যেন এসে আমাদের ঠিক সামনে সামনে চলেছে এক প্রেগনেন্ট মহিলা ও তার স্বামী বা বয় ফ্রেন্ড। খুব সতর্ক হয়ে যাচ্ছে ওই লোক, তাই দেখে আমি বলে ফেললাম নির্ঘাত বয় ফ্রেন্ড। আমার বর অবাক হয়ে বলল, মানে কি? হাসব্যান্ড থেকে বয়ফ্রেন্ড ভালো হয় কি করে? আমাকে কিছু বলতে হলো না। সামনের লোকই বলল, না ভাই আমি এর পতি। জানান দিলো তিনি বাংলাদেশী। বৌ ভেনেজুয়েলার। কোথায় ওই ভেনেজুয়েলা? আমার তাৎক্ষণিক মনেও এলো না। মনে মনে এক চক্কর ম্যাপে ঘুরে এলাম। লোকটি আমার দিকে তাকিয়েই হাসছে। বললাম, আপনার কি টার্গেট, ওই টাওয়ারের উপরে উঠিয়ে ওনাকে ভেনেজুয়েলা দেখাবেন? ভদ্রলোক এবার হা হা করে হেসে উঠলেন। বললেন, না ভাই, ওকে সূর্য ডোবা দেখাব। আমি তো অবাক! অবাক হয়েই বললাম, ততক্ষণ থাকবেন? বলল, নয়তো আর কি? এতো খরচ করে উঠব, পয়সা উসুল করতে হবে না!
আমি এবারের ইউরোপ ট্যুরে যেখানেই যাচ্ছি রীতিমতো ধাক্কা খাচ্ছি বাড়ির লোকের মতন করে দেশি ভাই-ব্রাদারের সাথে। সর্বত্র আছেন দেশীয় এবং উপমহাদেশীয় জনগণ।ভেনেজুয়েলার মহিলাটি আমার দিকে চেয়ে বলল ‘কুকু’। একি পাখি নাকি কুকু করছে কেন? আমার মেয়ে শুমা বলল, ‘বনজো’। আমার দিকে চেয়ে বলল বাংলাতে, কুকু হচ্ছে হ্যালো। ‘বনজো’ জেনে রেখেছিলাম ‘হ্যালো’, এ আমায় নতুন কিছু শিখাল। আমি যেহেতু তার শ্বশুরবাড়ির লোক তাই আমি যথেষ্ট মোলায়েম ভাবে একটা হাসি দিলাম, যাতে করে আমার নাম না জানা অচেনা দেশি ভাইটিকে বৌর সামনে ছোট হতে না হয়। বলে না বসে, তোমাদের দেশের মানুষ এমন অমন, নাক তোলা, ঠোঁট বাঁকা। নিজের দেশের মান রাখতে, ম্যান, কত কি যে করতে হয়! হায় বাংলাদেশ যদি তা বুঝতো।
দেশি ভাইটি আমরা আমেরিকা থেকে গিয়েছি শুনেই বলে উঠলেন, When good Americans die, they go to Paris. বাপ্ রে, কি কথা! আমিও সাথে সাথে বললাম, আমরা মরিনি। উনি বললেন, আমি বলিনি, বলেছেন Oscar Wilde. আমি বললাম, অবশ্যই মানতে পারলাম না। আমি খুবই জোরেসোরে সাপোর্ট দিচ্ছি আমেরিকাকে। প্যারিস যতই সুন্দর হোক আতোটা দিওয়ানা হবে কি আমেরিকানরা! বললামও, নো ওয়ে। আই ডু নট থিঙ্ক সো। ওই ৩০-৩৪ বছরের দেশীজন এবার বলল, প্যারিস ইজ নট এ সিটি, ইটস এ ওয়ার্ল্ড। বলেই আবার বলল, আমি বলছি না, বলেছেন King Francis.
এই লোক কি একটা চলমান কোটেশন বুক? আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়লাম তো রে বাবা! বলেই ফেললাম, আমার মনে হয ঠিক না এটিও। বরং আমেরিকা অনেক বেশি আকর্ষণীয়, ওটা ইউনিভার্স। আমরা যে এতো দর্শন আউড়াচ্ছি তা কিন্তু অবশ্যি হেঁটে হেঁটেই, থামাথামি নেই। অন লাইনে আমার মেয়ে টিকেট কেটে নিয়েছে এখানে আসবার আগেই, ১১টার সময়েই ঢুকতে হবে। ১১টা প্রায় হয়ে এলো, তাই আমরা থামাথামিতে নেই, রীতিমতো দৌড়াচ্ছি। ওরা বাপ-মেয়ে টেনশনে আছে, স্লট না মিস হয়ে যায়। আমার চিন্তা নেই, আমি ওদের একনিষ্ঠ ফলোয়ার। ওরা যেদিকে আমিও সেদিকে। আমি এক পাল তোলা সাম্পান। ছুটছি বাতাসের টানে নির্ভাবনায়। আমার বাতাস হচ্ছে ওরা দুইজন।
মহাজ্ঞানী দেশি এবার দাঁড়িয়েছে। প্রেগনেন্ট বৌ নিয়ে তাকে একটু ঢিমাতালে চলতে হবে। এতক্ষণে যেন খবর হয়েছে তার।তবে আমার দিকে চেয়ে চেয়ে চোখ বড় বড় করেই বলছে, There are only two places in the world where we can live happy: at home and in Paris.
তারা//