ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আদম কেন অ্যাডামস পিকে নেমেছিলেন?

উদয় হাকিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩০, ১৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আদম কেন অ্যাডামস পিকে নেমেছিলেন?

আদম পাহাড়। অ্যাডামস পিক। আদম (আ.) কে যেখানে নামানো হয়েছিলো সেটাই অ্যাডামস পিক। শ্রীলঙ্কার ওই পাহাড়টি এখন রীতিমতো বিখ্যাত জায়গা। সেই আদম পাহাড়ে উঠব! পারব তো! উত্তেজনায় রাতে ঘুম হচ্ছিলো না।  

কতদিনের অপেক্ষা! ওই জায়গাটাতে যাওয়ার জন্য প্রায় ছয় বছর ধরে সুযোগ খুঁজছিলাম। অবশেষে সুযোগ পেলাম। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারব তো? শুনেছি পাহাড়টা এতো উঁচু যে, এর চূড়ায় সবাই উঠতে পারে না। আমি পারব তো?
চাঁদ উঠেছিলো আকাশে। খানিক আগেই ডুবে গেছে। বাইরের দিকটা অন্ধকার। ঠান্ডাও অনেক। না হলে একটু বাইরে গিয়ে ঘুরে আসতাম। নাল্লাথান্নির পাহাড়ি রাতের সৌন্দর্য দেখতাম।

একই বিছানায় ছিলেন সাংবাদিক ইমন। বেঘোরে ঘুমোচ্ছিলেন নাক ডেকে। শরীর ক্লান্ত। তারপরও ঘুম নেই চোখে। আহা আদম পাহাড়! এতো মায়া তোমার মধ্যে! বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। ওয়াশ রুমে গিয়ে টের পেলাম বাইরে বৃষ্টি। এই বৃষ্টি যদি মধ্য রাত অবদি থাকে, অথবা সকাল পর্যন্ত, তাহলে আর উঠা হবে না পাহাড়ে। বিকেলে খাওয়ার সময় রেস্টেুরেন্টে কেউ একজন বলছিলেন, বৃষ্টি হলে উঠা মুশকিল। আপনাদের ভাগ্য ভালো, গত রাতের পর বৃষ্টি নেই। ভালো আর কই? রাতে বৃষ্টি হলে পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে!

শুনছিলাম, একটানা বৃষ্টির শব্দ। ওই শব্দে মনে মনে ভালোই জব্দ হচ্ছিলাম। নিস্তব্ধ চারদিক। চলে আসলাম বিছানায়। ক্লান্ত শরীরেও ঘুম নেই। ভাবছিলাম গুগলে গিয়ে দেখি তো- আদমকে এই পাহাড়ে কেন নামানো হয়েছিলো? তার কবর-ই বা কোথায়। তাহলে হাওয়াকে কোথায় নামানো হয়েছিলো?

আদম (আ.) ছিলেন সৃষ্টির প্রথম মানব (ডারউইনের তত্ত্ব মানলে অবশ্য ভিন্ন কথা)। তবে শুধু ইসলাম নয়, ইহুদি এবং খ্রীস্টান ধর্ম মতেও তিনি সৃষ্টির প্রথম মানুষ। ইসলামে তাঁকে নবীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্ম মতে, আল্লাহ ফেরেশতাদের জানালেন, তিনি পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি পাঠাতে চাইছেন। ফেরেশতারা বললেন, দরকার কি? পৃথিবীতে মানুষ পাঠালে তারা রক্তপাত ঘটাবে। প্রতিনিয়ত ঝামেলা পাকাবে। অথচ আমরা সবসময় আপনার গুনকীর্তন করছি। আপনার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। এইতো যথেষ্ট। তখন সৃষ্টিকর্তা বলেছিলেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি যা জানি, তোমরা তা জানো না। একথা বলার পর কারো কোনো কথা থাকে?

এরপর আল্লাহ মাটি থেকে আদমকে সৃষ্টি করলেন। তার দেহে প্রাণ প্রাণ দিলেন। তাঁর পাঁজরের হাড় থেকে হাওয়াকে বানালেন। তাঁদের বেহেশতে থাকতে দেয়া হলো। মানুষকে সৃষ্টির সেরা বা আশরাফুল মাখলুকাত আখ্যা দিয়ে সব ফেরেশতাদের বললেন, আদমকে সেজদা করো। সবাই সেজদা করলেও একমাত্র ইবলিশ তা করেনি। যে কারণে তাকে শয়তান ডাকা হয়, ইবলিশ শয়তান! যার অনেক অর্থ আছে। সহজ অর্থে শয়তান মানে পাপী আত্মা।

তবে ধারণা করছিলাম, সবই ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত! যেমন স্বর্গে আদম হাওয়া থাকলেও তাদের গন্ধম নামক একটি ফল খেতে নিষেধ করা হয়েছিলো। যদিও জন্মের পর থেকে শুধু নাম শুনে আসছি। এমন কোনো ফল পৃথিবীর কোথাও আছে কি না জানি না। নাকি এটা শুধু স্বর্গের ফল। তবে ওই ফল খেতে কেন নিষেধ করা হয়েছিলো? জানি না।

বলা হয়ে থাকে, শয়তানের ধোকায় পড়ে স্বর্গের বাগানে সেই নিষিদ্ধ ফল গন্ধম খেয়েছিলেন আদম হাওয়া। এটা নিয়ে আল্লাহ তাদের উপর রুষ্ট হন। বাইবেলের ভাষায় এটাকে বলা হয় আদিপাপ, মানে প্রথম পাপ। মানব জাতির প্রথম পাপ! যাক বাবা, পাপ অন্তত আমি প্রথম করি নাই!

এই পাপের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ তাদের পৃথিবীতে পাঠান। আদম এবং হাওয়াকে আলাদা দুটি জায়গায় পাঠিয়েছিলেন। আদমকে সিংহল বা শ্রীংলঙ্কায় পাঠানো হয়। হাওয়াকে পাঠানো হয় হিজাযে। হিজায কোথায়? হিজায আরবি শব্দ। এর অর্থ বাঁধা। বাঁধা কোথায়? একটা বইয়ের বর্ণণা থেকে জানলাম, হিজায হচ্ছে সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ। এর পশ্চিমে লোহিত সাগর, উত্তরে জর্ডান, পূব দিকে নাজদ এবং দক্ষিণে আসির নামের এক স্থান। মানে সেটা জেদ্দা কেন্দ্রিক। আবার মক্কা মদিনাও এই অঞ্চলে। তবে সংক্ষেপে হিজায হচ্ছে সৌদী আরবের পশ্চিম অংশ। 

তার মানে, আদম (আ.) এবং হাওয়াকে দুটি ভিন্ন স্থানে নামানো হয়। আবার তারা একত্রিত হন। ইসলামের মতে, আরাফাত ময়দানে তারা মিলিত হন। যেটি সৌদি আরবে। কিন্তু সেই সৃষ্টির সূচনায় শ্রীলঙ্কা থেকে আদম আরবে গেলেন কীভাবে? আবার তাদের নাকি ১৪০ জোড়া সন্তান। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাবিল, কাবিল, আকলিমা, লাইউদা এবং শিস (আ.)। ওই শিস (আ.) মুসলমানদের নবী ছিলেন।

জানা গেলো, আদম এবং হাওয়াকে আল্লাহ কাবাঘর বানানোর আদেশ দিয়েছিলেন। তাঁরা সেটা বানিয়েও ছিলেন। নূহ নবীর মহা প্লাবন পর্যন্ত নাকি সেটা ছিলো। ক্লাস নাইনের ভূগোল বইতে পড়েছিলাম অ্যাডামস রিফ এর কথা। যেটি ভারতের দক্ষিনাঞ্চলে ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত। রিফ কী? জলের নিচের শীলা, বালি, প্রবাল, শৈবালসহ এ ধরনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও জৈবিক পদার্থ মিলিত হয়ে তৈরি করা ভূখন্ড। রিফের বাংলা অন্তরীপ। সাধারনত অপেক্ষাকৃত সরু জলরাশি স্থলভাগের ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে রিফ বলা হয়। হতে পারে ওই রিফ দিয়েই আদম ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করেছিলেন।

তবে অ্যাডামস রিফের কথা যতটা না শোনা যায়, তারচে অনেক বেশি শোনা যায় অ্যাডামস ব্রিজের কথা। যাকে রাম সেতুও বলা হয়। কখনো বলা হয় রাম বন্ধন। শ্রীলঙ্কার মান্নার উপকূলে অ্যাডামস ব্রিজ। এটি মিশেছে ভারতের রামেশ্বরাম উপকূলের সঙ্গে। মূলত মান্নার এবং রামেশ্বরাম এ দুটি যথাক্রমে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার দুটি দ্বীপ। উভয় দেশের এই দুই দ্বীপের মাঝখানে ভারত মহাসগর। যার দৈঘ্য বলা হয়েছে ৫০ কিলোমিটার। কোথাও কোথাও যার প্রস্থ ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, কিছু ওয়েব সাইটে দুই দেশের মধ্যে একটি রেল লাইন দেখানো হয়েছে। তবে কেউ কেউ বলছেন, এটি আসলে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যেকার রেল লাইন নয়, বরং শ্রীলঙ্কান অংশে মান্নার দ্বীপ থেকে শ্রীলঙ্কার মূল ভূখন্ডে যাওয়ার লাইন এটি। এর মাঝখানে জাহাজ পারাপারে জন্য চমৎকার গেট রয়েছে। একটা ফটোতে দেখলাম, রেল লাইন সমুদ্রের পানির খুব কাছাকাছি। আবার উঁচুতে একটি সড়ক পথও রয়েছে। অ্যাডামস এই ব্রিজ দিয়ে শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতের ভূখন্ডে গিয়েছিলেন বলে একে অ্যাডামস ব্রিজ বলে। আবার ভারতীয় ইতিহাসে যাকে বলা হয়েছে রামের ব্রিজ। ধর্ম ইতিহাস সব মিলিয়ে বিষয়গুলি অনেকটা জগাখিচুরি টাইপের। 

মেরিন আর্কিওলজিস্টরা জলের নিচে ব্রিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। ভূতত্ত্ববিদরা নাকি প্রমাণ পেয়েছেন- এক সময় ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে এই ব্রিজ ছিলো। এখনো সমুদ্রের পানির নিচে এর অস্তিত্ব মেলে। অনেকেই কাল্পনিক কিছু ছবি বা চিত্র দিয়ে অ্যাডামস ব্রিজকে চিত্রিত করেছেন। স্যাটেলাইট থেকে নেয়া কিছু ছবি ইমপোজ করে ব্রিজ দেখানো হয়েছে যা ওয়েব সাইট পাওয়া যায়। যাহোক সাগরের নিচে ডুবন্ত পথটিই মূলত আদম ব্রিজ হিসেবে খ্যাত। ব্রিটিশরা এর নাম দিয়েছে অ্যাডামস ব্রিজ। রামের ব্রিজ তারা বলতে চাননি। কারণ অ্যাডামস তাদের ধর্মের সঙ্গে যুক্ত, রাম নয়।

খ্রীস্টধর্মাবলম্বীদের ধারণা এই ব্রিজ দিয়ে শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতীয় ভূখন্ডে গিয়েছিলেন আদম। যদিও কোনো ধর্মেই ভারতে আদমের উপস্থিতি নিয়ে কিছু লেখা নেই। হিন্দু শাস্ত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, রাবণকে আক্রমণ করার জন্য রাম এই সেতু নির্মাণ করেছিলেন। রাবণের দেশ শ্রীলঙ্কায় তিনি গিয়েছিলেন এই সেতু দিয়ে। তাই এর নাম রাম সেতু। তবে এই সেতু প্রাকৃতিক নাকি মানুষের তৈরি সেটিও স্পষ্ট নয়। রামায়নে অবশ্য এই ব্রিজকে ‘সেতুবন্ধন’ ও বলা হয়। রামেশ্বরাম ভারতের তামিলনাড়–র দক্ষিন পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল। অন্যদিকে মান্নার হচ্ছে শ্রীলঙ্কার উত্তর পশ্চিম উপকূল।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ১৮ হাজার বছর আগে এই সেতুটি নির্মিত হয়। তবে শ্রীলঙ্কান অংশে কিছু শক্ত মাটি বা পাথুরে ঢিবি দেখা যায়, সেগুলো নাকি ৬০০ বছর আগের। ওই অংশে উজ্জ্বল বাদামি রঙের কিছু মাটির ঢিবিও রয়েছে।   

আমার একটা দীর্ঘদিনের অভ্যেস হলো বিমানে জানালার পাশে বসা। সবাই যখন ঘুমায় বা রেস্ট নেয়, আমি তখন জানালা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকি। দেখেছিলাম ওই অ্যাডামস ব্রিজের ঠিক উপর দিয়েই বিমান চলে। মানে ঢাকা- শ্রীলঙ্কান আকাশ পথে চলাচল ওর উপর দিয়েই। মেঘ না থাকলে উপর থেকে উজ্জ্বল লালচে মাটির ওই রাস্তা খুব পরিষ্কার দেখা যায়। সাগরের দিকে একটা দ্বীপে বাঁকানো লাইন ধরে গিয়ে শেষ হয়েছে। দ্বীপের উত্তর অংশে অবশ্য তেমন কিছু দেখা যায় না, শুধু নীল জল।  

আসলে সব তথ্য এলোমেলো লাগছিলো। এক জায়গায় দেখলাম বলা হয়েছে, ১৪৮০ সালে সামুদ্রিক ঝড়ে এ্যাডামস ব্রিজ ভেঙ্গে গেছে। আরেক জায়গায় দেখলাম, চুনা পাথরের তৈরি অসংখ্য শিলাখন্ডের সমন্বয়ে ওই ব্রিজ তৈরি। জলের নিচে যেগুলোকে সংযুক্ত করলে একটি শিকল বা মালার মতো লাগে।

বাল্মিকীর রামায়নে উল্লেখ আছে রামের সেনাবাহিনী ছিলো বানরদের নিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বানরদের দিয়ে এই সেতু বানানো হয়েছিলো। তার স্ত্রী সীতাকে রাবণের কবল থেকে উদ্ধার করতে এই সেতু দিয়ে তিনি শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন।

তবে প্রাচীন শাস্ত্রে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যবর্তী সমুদ্রকে বলা হয় সেতুসামুদ্রম। মানে ব্রিজের সমুদ্র। ওই রামেশ্বরম দ্বীপে একটি বিখ্যাত রাম মন্দির রয়েছে। রামেশ্বরাম দ্বীপ নাকি এক লাখ ২৫ হাজার বছর আগে গঠিত হয়েছিলো। সব মাথা খারাপ হওয়ার মতো তথ্য।
 
কিংবদন্তী এই ব্রিজটি প্রবাল এবং বেলে পাথরের শিকল। পণ করলাম, সুযোগ পেলে এই সেতু দেখতে যাব একদিন। অ্যাডামস পিক সামিট করার পরের অভিযান হবে অ্যাডামস ব্রিজ। এই ব্রিজ নিয়ে মিথও কম নেই। কম নেই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও। রামকে ভগবান আখ্যা দিয়ে বাল্মিকী বর্নণা করেছেন, রামের নির্দেশে এই ব্রিজ তৈরি হয়েছিলো। সাধারণের পক্ষে যা সম্ভব ছিলো না। ব্রিজের পাথরগুলি নাকি সিলিকার শেলের ভেতরে বাতাস ভরা! ফলে পাথর না ডুবে ভেসে থাকতো। এর উপর দিয়ে যারা চলাচল করতো তারাও ভেসে থাকতো!  

অ্যাডামস ব্রিজ থেকে মনে মনে ফিরছিলাম অ্যাডামস পিকে। আচ্ছা আদম কেমন ছিলেন? আবু হুরায়রার বরাত দিয়ে একটা হাদিসে বলা হয়েছে, আদম নাকি ৬০ ফুট লম্বা ছিলেন। সাধারনত কোনো মানুষ ৬ ফুট লম্বা হলে তার পা মিনিমাম ১ ফুট হয়। সে অনুপাতে আদমের পা হওয়া উচিত ১০ ফুট। অ্যাডামস পিকে যে পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে এটি অবশ্য ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি। যাক, কম বেশি তো হতেও পারে। এসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঁকি দিলো, আগে মানুষের গড় আয়ু ছিলো কম। তাহলে আদম কত বছর বেঁচে ছিলেন? সত্যিই কি আগেকার মানুষ অনেক লম্বা চওড়া ছিলো। নাকি বাটকু ছিলো? ডাইনোসর যেহেতু অনেক বড় প্রানী ছিলো, সেহেতু বড় মানুষও হয়তো ছিলো। ডারউইন তত্ত্ব মানলে অবশ্য ভিন্ন কথা!

আচ্ছা আদমের কবর কোথায়? ইন্টারনেটে দেখলাম, (বাইবেল অনুসারীদের মতে) আদম এবং হাওয়া বা অ্যাডামস ও ইভকে মাচপেলার নামে একটি গুহায় সমাহিত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ইব্রাহিম ও সারা, ইসহাক এবং রেবেকা, জ্যাকব ও লেহকে হেভ্রনের ভূগর্ভস্থ গুহায় সমাহিত করা হয়েছে। হেব্রন কোথায়? এটি জেরুজালেমের দক্ষিনে জুডিয়ান পাহাড় সংলগ্ন এলাকা। ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রাচীন পবিত্র স্থান এটি। যদিও এটি ফিলিস্তিনী অধ্যূষিত এলাকা। আড়াই লাখ ফিলিস্তীনির বিপরীতে মাত্র ৭০০ ইহুদী বাস করেন সেখানে। 

আদমের কবর কোথায় তা এটা স্পষ্ট করে কোথায় বলা নেই। কোথাও বলা হয়েছে, যে পাহাড়ে আদমকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিলো সেই পাহাড়ের কাছেই তাকে দাফন করা হয়েছে। কিন্তু কোন পাহাড়ে তার নাম উল্লেখ নেই। আবার শ্রীলঙ্কায় অ্যাডামস পিক বা সংলগ্ন পাহাড়ে এ ধরনের কোনো সমাধি আবিষ্কৃত হয়নি। একটা ইউটিউব চ্যানেলে বলা হয়েছে, মক্কার একটি পাহাড়ের গুহায় সমাহিত করা হয়েছে। ভারত মহাসাগর থেকে এই পাহাড়ের চূড়া দেখা যায়।

আবার বলা হয়ে থাকে, নূহ নবীর মহা প্লাবনের সময় আদম এবং হাওয়ার লাশ একটি সিন্দুকে ভরে বাইতুল মোকাদ্দেস এ দাফন করা হয়!এমনও শোনা যায়, আদম (আঃ) এর মাথা মসজিদে ইব্রাহিমের কাছে এবং দুই পা আবইতুল মোকাদ্দেসের কাছে সাকরা নামে বিখ্যাত পাথরের মধ্যে সমাহিত করা।

অ্যাডামস পিক আর অ্যাডামস ব্রিজ আমার মাথা খারাপ করে দিচ্ছিলো। আপাতত আর ওপথে যেতে চাইছিলাম না। আদম পাহাড়ে উঠতে চেয়েছিলাম সেখানে আগে উঠে নিই। অনেক রাত হয়েছে। একটু হলেও ঘুমানো দরকার। না হলে খাড়া পাহাড়ি পথে উঠতে গিয়ে নিচে পড়ে যাই যদি!

শ্রীলঙ্কা/উদয় হাকিম/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়