বাস্তবতা মেনে ভবিষ্যতে তাকিয়ে মোসাদ্দেক
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বার্মিংহাম থেকে : একবার সাকিবের কথাই চিন্তা করুন। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আমলে চেয়েও তিনে ব্যাটিং করতে পারেননি। সেই সাকিব এখন গিয়ার শিফট করে নিজেকে উঠিয়েছেন তিনে। পারফর্ম করছেন দিব্যি।
সেখানে মোসাদ্দেকের চিন্তা করবে কজন। ঘরোয়া লিগ ও বয়সভিত্তিক দলগুলোতে মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত এ ব্যাটসম্যান। কিন্তু জাতীয় দলের ব্যাটিং লাইন আপ ও বিরাট নামগুলোতে তাকে খেলতে হচ্ছে ৭ নম্বরে। তাতে তার কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু ওপরে ব্যাটিং করার আবদারও করতে পারছেন না হার্ডহিটার।
‘প্রিমিয়ার লিগ কিংবা বয়সভিত্তিক যে কোনো দলে কিন্তু আমি ওপরে ব্যাটিং করে আসছি। এখানে আমার ওপরে যারা ব্যাটিং করছেন তারা আমার থেকে বেশি ক্যাপাবল। তাদের যে রেকর্ড, আমি চাইলেও এখন ওপরে জায়গা পাব না। এখন আশা বাদ দিয়ে, সামনের জন্য অনুশীলন করব ইনশাআল্লাহ। সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করব।’
নতুনের আগমণে পুরোনোদের জায়গা ছেড়ে দেওয়া পৃথিবীর সবথেকে রুঢ় সত্য। একালের সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা জায়গা করে নিয়েছিলেন হাবিবুল বাশার, জাভেদ ওমর, আফতাব আহমেদ ও পাইলটদের। ঠিক তেমনি একদিন সাকিব, মুশফিকদের জায়গা করে নেবে মোসাদ্দেক, মিরাজ, সৌম্য, লিটনরা। তাদের হাতেই থাকবে লাল-সবুজের পতাকা। মোসাদ্দেক খেলছেন নিজের প্রথম বিশ্বকাপ।
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের অঘোষিত নায়ক ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেই থেকে দলের নিয়মিত ক্রিকেটার। বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে ৯৮ রান ও ৩ উইকেট পেয়েছেন। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৫ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন। টিম ম্যানেজম্যান্টের তার থেকে যে চাওয়া তা ফুলফিল করতে পারছেন মোসাদ্দেক। তাতেই তৃপ্তি পাচ্ছেন ডানহাতি স্পিন অলরাউন্ডার।
‘আমার নিজের সন্তুষ্টির থেকে যদি দল সন্তুষ্ট হয় সেটা আমার কাছে মুখ্য বিষয়। দল সন্তুষ্ট তো আমিও সন্তুষ্ট। আমি আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছি না। আমি যখন এখানে আসি আগের থেকেই আমার চিন্তা ছিল যে আমি সুযোগ পেলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। সুযোগ পেলেই যে ভালো করব সেই নিশ্চয়তা নেই। আমি আমার নিজের কাজটা ঠিকমতো করার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে কিছু না। এখন পর্যন্ত তাই করেছি। সামনের ম্যাচগুলোতে সেই চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।’
৭ নম্বরে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জটা সাদরেই গ্রহণ করে এ ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এটা শুধু আমার জন্য না, সবার জন্য চ্যালেঞ্জিং। ৭ নম্বরে নেমে তখন বড় ইনিংস খেলা সম্ভব হয় না। তখন নিজের থেকে দলের রানটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। সবাই চেষ্টা করে এখানে এসে যেন দ্রুত রানটা তুলতে পারে। প্রিমিয়ার লিগ থেকেই এ চেষ্টা করে আসছি। এখনও সেই চেষ্টায় আছি। স্ট্রাইক রেট নিয়েই চিন্তা করছি। চিন্তায় থাকে যখনই ব্যাটিংয়ে যাব তখন ১০০’র বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাটিং করব।’
আর বোলিংয়ে মোসাদ্দেকের চিন্তা শুধু ডট বল। উইকেটের থেকে ডট বলই তার কাছে মুখ্য। মুক্ত আকাশে মেলে ধরার সুযোগ থাকলেও মঞ্চ প্রস্তুত নয় মোসাদ্দেকের। হয়তো সাকিব, মুশফিকের পরবর্তী জায়গাটাই তার জন্য অপেক্ষা করছে। মাঝের সময়টুকুতে নিজেকে ওই স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য চলবে অক্লান্ত পরিশ্রম।
রাইজিংবিডি/বার্মিংহাম/২৯ মে ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন