ক্রিকেটের জাগরণ হবে ক্রিকেট জন্মভূমিতে
লন্ডন থেকে ইয়াসিন হাসান: শিরোনাম চমকে দিতে পারে। ক্রিকেট জন্মভূমিতে নতুন করে ক্রিকেট জাগরণ! রূঢ় সত্য। বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি জয়ের মধ্য দিয়ে নতুন করে ইংল্যান্ডে শুরু হয়েছে ক্রিকেট জাগরণ।
ক্রিকেট যখন এখানে শুরু হয়েছিল তার আগের থেকে ফুটবলের জোয়ার। ক্রিকেট খেলত ধনীরা। আর ফুটবল আমজনতার বিনোদন। তাইতো ফুটবল ইংল্যান্ডের প্রাণ। ক্রিকেট জীবনের ধারকও হতে পারে না! তবে এখানকার ক্রিকেটের যে সুযোগ সুবিধা তাতে মনে হতে পারে ক্রিকেটও ফুটবলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। এ ধারণা ভুল।
ফুটবলের সঙ্গে এখানে পাল্লা দেয় শুধু রাগবি। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় প্রধান খেলা রাগবি। তাই ক্রিকেট অনেক পিছিয়ে। হ্যাঁ এটা ঠিক ক্রিকেটের পালগাটে কিছু সমর্থকও আছে। যাদের দিন শুরু হয় ব্যাট-বলের ঠুকঠাক আওয়াজ শুনে, দিন শেষ হয় পাঁনশালায় ক্রিকেট নিয়ে আড্ডা দিয়ে। ইংল্যান্ডের টেলিগ্রাফ বড় করে শিরোনাম করেছে,‘দ্য নিউ বিগান।’ ভেতরের কথা,‘জয়গান ছিল এখন জাগরণ শুরুর অপেক্ষায়।’
এখানকার ক্রিকেটটা আবার ক্লাব ভিত্তিক। কাউন্টির ক্লাবগুলো গড়ে তোলে খেলোয়াড়। সাসেক্স, মিডলসেক্স, ইয়র্কশায়ার, সারে, ডারহাম, এসেক্সের রয়েছে নিজস্ব একাডেমি। এখানের স্থাপনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। প্রায় প্রত্যেক কাউন্টি ক্লাবের রয়েছে নিজস্ব মাঠ ও অনুশীলন মাঠ। রয়েছে ম্যানেজার ও কোচ।
১১ বছর থেকে প্রবেশ করা যায় ক্লাবে। এরপর শুরু হয় পরিচর্যা। ধাপে ধাপে তরুণরা হয়ে উঠেন ভরসার নাম। সেখান থেকে তারা চলে আসেন জাতীয় দলে। রুট, মরগান, স্টোকস, বাটলার তারা সবাই নিজ নিজ ক্লাবের খেলোয়াড়। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সাথে তাদের নামের পাশে যোগ করা হয় ক্লাবের নাম। এটাই তাদের ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য এখন থেকে আরও ছড়িয়ে যাবে বলে বিশ্বাস ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখানো হয়েছিল পে টু চ্যানেলে। সেটাও ফ্রি। স্কাই স্পোর্টসের ভাষ্যমতে, নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের ফাইনাল দেখেছে ইংল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ।’ মরগান, বাটলাররা, স্টোকসরা যেভাবে শিরোপা জিতেছে তাদের উৎসব দেখে তরুণরা আরও ক্রিকেটের ওপর আগ্রহ তৈরি করবে।
লর্ডসের ফাইনাল উপভোগ করতে প্রেসবক্সে সাংবাদিক বাবার সঙ্গে এসেছিলেন ছোট্ট টাকার। বাটলারদের উল্লাসে যোগ দেন তরুণ টাকারও। বাবার সঙ্গে হাই ফাইভ করতে গিয়ে বলেন,‘আমিও ক্রিকেটার হবো।’ সৃষ্টিকর্তা পারেন সবকিছু। হয়তো টাকারের স্বপ্নও একদিন পূরণ হবে। হয়তো ২০ বছর পর লর্ডসের কোনো ফাইনালে টাকার উঁচিয়ে ধরবে বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি। এমন স্বপ্ন দেখানোর জন্য ধন্যবাদ পেতেই পারেন মরগান ব্রিগেড। যাক এবার অন্তত ক্রিকেট নিয়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে ক্রিকেট জন্মভূমিতে।
রাইজিংবিডি/লন্ডন/১৭ জুলাই ২০১৯/ইয়াসিন/শামীম
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন