ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘অগ্নিকাণ্ডের ছবি না তুলে পানি এগিয়ে দিয়ে আগুন নেভানো যায়’

রফিক মুয়াজ্জিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ৫ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘অগ্নিকাণ্ডের ছবি না তুলে পানি এগিয়ে দিয়ে আগুন নেভানো যায়’

রাইজিংবিডি ডেস্ক : অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অতি উৎসাহী লোকদের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে আগুন নেভানোয় সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন কোথাও আগুন লাগে, সেখানে শুধু শুধু বিপুল সংখ্যক জনগণ জড়ো হয়ে দমকলকর্মীদের আগুন নেভানোর কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এদের মধ্যে অনেকে আছে যারা কেবল কী হচ্ছে দেখার জন্য যায় এবং মোবাইলে সেলফি তোলে। আমি বুঝি না, এখানে সেলফি তোলার কী আছে?’

তিনি বলেন, ‘ঘটনার ছবি না তুলে তারা কয়েক বালতি পানিও তো এগিয়ে দিয়ে আগুন নেভানোয় অংশ নিতে পারে। তাদের আসলে মানসিকতাটার পরিবর্তন দরকার এবং কীভাবে আগুন নেভানোয় সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে চিন্তা করা উচিত।’

শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার প্রারম্ভিক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, আগুন লাগলে এখন পানি পাওয়া যায় না। ঢাকায় এত খাল ছিল, এত পুকুর ছিল, অথচ এখন নাই। কজেই যারাই কোনো স্থাপনা করবে সেখানে যেন জলাধার টিকে থাকে। আর পুকুর দেখলে তার মধ্যে দালান করা এটাও একটা প্রবণতা, যেটি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, গুলশান লেক এখন যা আছে তার দ্বিগুণ চওড়া ছিল। একেকজন ক্ষমতায় এসেছে, জিয়া এসেছে অর্ধেক ভরাট করে প্লট বানিয়ে দিয়েছে, এরশাদ এসেছে প্লট বানিয়েছে। খালেদা জিয়া এসে প্লট বানিয়েছে। এভাবে বানাতে বানাতে লেকের অর্ধেক আছে। আর বনানী লেকটা তো বন্ধই।

সরকারপ্রধান বলেন, এভাবে জলাধারগুলো একে একে করে বন্ধ করা, এটাও বোঝা উচিত যে আগুন লাগলে পানি নাই। ভূমিকম্প হলে কোথাও গিয়ে দাঁড়ানোর জায়গা নাই। তাহলে অবস্থাটা কী দাঁড়ালো।

তিনি বলেন, দালানগুলো এমনভাবে বানানো হয় যে তার ফায়ার এক্সিট থাকে না, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন করতে গিয়ে ফায়ার এক্সিট বন্ধ। সেখান দিয়ে কারো ওঠার উপায় নাই, নামারও উপায় নাই। মার্কেটগুলোতে ফায়ার এক্সিট মাল রাখার জন্য বা স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগুন লাগলে দায়িত্ব হচ্ছে, ফায়ার বিগ্রেড আগুন নেভাবে। কিন্তু আগুন যাতে না লাগে, যারা দালানগুলো বানায়, যারা বসবাস করে, যারা ব্যবহার করে- সকলেরই দায়িত্ব আছে। সেই দায়িত্বটা পালন না করে কোনো ঘটনা ঘটলেই কেবল সরকারের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হয়। আমরা বারবার বলি, যখন ডিজাইন দেওয়া হয় তখনো বলি- যারা স্থাপনাগুলো ব্যবহার করছেন তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব, যেন সেখানে আগুন না লাগে। অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা যেন থাকে। আর সাথে সাথে কী করতে হবে সেটাও যেন দেয়া থাকে।

শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘ভবনের প্রতি ইঞ্চি জায়গা লাভজনক ব্যবহারের জন্য নিজেদের সর্বনাশটা যেন কেউ ডেকে না আনে। সর্বস্বান্ত না হন।’

তথ্যসূত্র : বাসস

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ এপ্রিল ২০১৯/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়