ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অন্ধ মায়ের ভিক্ষার সঙ্গী জেডিসি পরীক্ষার্থী মেয়ে

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ২৩ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অন্ধ মায়ের ভিক্ষার সঙ্গী জেডিসি পরীক্ষার্থী মেয়ে

ভোলা সংবাদদাতা: ভিক্ষা করে সংসার চালান অন্ধ মা। আর সেই মায়ের ভিক্ষার সঙ্গী হতে হয় তারই জেডিসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে। ঘটনাটি ভোলার লালমোহন উপজেলা সদরের।

এই ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জেডিসি পরীক্ষা। এই সময়েও দেখা গেছে, ক্লাস রেখে প্রতি বৃহস্পতিবার অন্ধ মাকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে বেরিয়ে পড়েছে মেয়ে।

মেয়ে স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী। ওই মাদ্রাসার সুপার জানালেন ‘মেয়েটি পড়াশোনায়ও ভাল। মা অন্ধ থাকায় একা ভিক্ষা করতে পারেন না। তাই মাকে সহযোগিতা করতে ওকে একদিন ছুটি দিতেই হয়।’

কথা হয় মা ও মেয়ের সাথে। জানা যায়, বাবা মনছুর সংসার ছেড়েছে অনেক দিন। তারা জানায়, পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে গেছে। আর ফিরে অসেনি। রেখে গেছে অন্ধ মা ও দুই মেয়েকে। চলে যাওয়ার সময় এই মেয়ে গর্ভে ছিল। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

ভিক্ষা করেই বিয়ে দেন বড় মেয়েকে। সে মেয়ের ঘরে নাতি-নাতনি হয়েছে। এ অবস্থায় মেয়ের জামাই তাকে চাপ দিচ্ছে অটোরিকশা কিনে দেওয়ার জন্য। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা।

এদিকে এই মেয়েও বড় হয়ে উঠেছে মায়ের ভিক্ষাবৃত্তির অর্থে। লেখাপড়া করিয়েছেন মেয়েকে। এবার জেডিসি পরীক্ষা দেবে, এটা মায়ের আনন্দ। অন্ধ মা বলেন, ‘মেয়ে বড় হচ্ছে। সে মাদ্রাসায় পড়ে। ক্লাস রেখে ভিক্ষা করতে আসতে চায় না। লজ্জা পায়। তবুও বুজিয়ে শুনিয়ে তারপরও নিয়ে আসি।’

মেয়ে জানায়, ‘ ক্লাস বাদ দিয়ে ভিক্ষার সঙ্গী হতে আমার খারাপ লাগে, কী করুম আমরা গরিব। মা অন্ধ। চোখে দেখেন না। বাবাকে আমি জন্মের পর চোখে দেখিনি। বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও জানি না।’

মাদ্রাসা সুপার মাওলানা শফি উল্যাহ বলেন, ‘ও আমাদের মাদ্রাসার নিয়মিত ছাত্রী। মডেল টেস্ট ভাল দিয়েছে। আশা করি পরীক্ষাও ভাল হবে। গরিব অসহায় ভিক্ষা করে সংসার চলে দেখে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছি।’




রাইজিংবিডি/ভোলা/২৩ অক্টোবর ২০১৮/ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়