ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অবৈধ সম্পদের ফাঁদে পরিবারের ৪ সদস্য

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ৯ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অবৈধ সম্পদের ফাঁদে পরিবারের ৪ সদস্য

শরীফ মো. আল-আমীন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহকারী কমিশনার (কাস্টমস) পদে যোগ দিয়ে খুলনা বিভাগ ও সুনামগঞ্জের কাস্টমসের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করেছেন। এরই মধ্যে ব্যাংক হিসেবে তিনি প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বিশুদ্ধ করতে ব্যবহার করেছেন পরিবারের তিন সদস্য ও বন্ধুসহ ১০ আত্মীয়ের ব্যাংক হিসাব। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে প্রকৃত অর্থের যোগানদাতা শরীফ আল আমীন নিজেই।

এ কারণে দুদকের চার্জশিটভুক্ত আসামি হতে যাচ্ছেন কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ১১ জন। সম্প্রতি কমিশন থেকে এ বিষয়ে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন।

দুদকের তদন্তে দেখা যায়, শরীফ আল আমিন দুর্নীতি ও ঘুষসহ অবৈধ উৎসের টাকায় নিজ নামে বাগেরহাটের ব্র্যাক ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকার এফডিআর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংকের ক্যাম্পাস করপোরেট শাখায় ১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৫২ টাকা এফডিআর করেছেন। এছাড়া আল আমিনের মা শরীফ হাসিনার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংকের ক্যাম্পাস করপোরেট শাখায় ৪৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকার সঞ্চয়পত্র, গোপালগঞ্জের ইসলামী ব্যাংকে ৩০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, তার বড় বোন শরীফা খানমের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক শাখায় ৬১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সঞ্চযপত্র, আল আমিনের স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার গোপালগঞ্জ সোশ‌্যাল ইসলামী ব্যাংকে ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার এফডিআর, গোপালগঞ্জের এক্সিম ব্যাংকে ১৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংকে জমাকৃত ২৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, আল আমিনের বন্ধু মো. রেজওয়ানুল হকের ব্র্যাক ব্যাংকে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ও ব্যাংক এশিয়ার করপোরেট শাখায় ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবধারীরা। তার অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে নিকট আত্মীয়দের কাউকে মৎস্য ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসার অংশীদার দেখিয়েছেন নথিপত্রে।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বলেন, ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা হয়। সম্প্রতি কমিশন চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জের সহকারী কমিশনার (কাস্টমস) শরীফ মো. আল-আমীন, তার বন্ধু ও সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. রেজওয়ানুল হক, আল আমীনের শরীফ হাসিনা আজিম, বোন শরীফা খানম, আল আমীনের স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা, আত্মীয় খায়রুল আলম, ছালেহা বেগম, রাবেয়া আক্তার, ফাতেমা বাচ্চু, এম এম হুমায়ুন কবির এবং কাজী নাদিমুজ্জামান।

তদন্তে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যা কাগজে আর্থিক তহবিল সৃষ্টির মাধ্যমে শরীফ মো. আমীন দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৬ কোটি ২৬ লাখ এগার হাজার ২২২ টাকা অর্জন করেছেন। যা বৈধ করতে তিনি উৎস গোপন করার চেষ্টা করেছেন ও গোপনে সরাসরি সহায়তা করেছেন আসামিরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে চার্জশিট দাখিল করবে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা।


ঢাকা/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়