ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আইসিজেতে আইনি যুক্তির কাছে কি হেরে যাবে বাস্তবতা?

সাজেদ রোমেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আইসিজেতে আইনি যুক্তির কাছে কি হেরে যাবে বাস্তবতা?

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠণের বাস্তবতা গাম্বিয়া আবেগ দিয়ে তুলে ধরলেও বুধবার মিয়ানমারের বিদেশি আইনজীবীরা শক্ত আইনি যুক্তি তুলে ধরেছেন অভিযোগের বিপক্ষে।

দেশটির কাউন্সিলর অং সান সু চি এবং তার দেশের আইনজীবী ছাড়াও গণহত্যা আইনে দক্ষ বিশ্বে খ্যাতনামা পাঁচজন আইনজীবী যুক্তি তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে ছিলেন দুজন নারী আইনজীবী।

বিদেশি আইনজীবীরা জেনোসাইড কনভেনশনের কয়েকটি আর্টিক‌্যাল, একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে অসামঞ্জস্যতা, অন্যান্য গণহত্যার সঙ্গে মিল-অমিল এবং অভিযোগকারী গাম্বিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এসব বিদেশি আইনজীবী মূলত জেনোসাইড কনভেনশনের আর্টিক‌্যাল ৮ ও ৯ সামনে এনে গাম্বিয়ার অভিযোগ করার এখতিয়ারের বিরোধিতা করেন।

কানাডার আইনবিদ উইলিয়াম সাবাসসহ পাশ্চাত্যের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, জেনেভা কনভেনশনের আর্টিক‌্যাল ৮ ও ৯ এর প্রতি দৃষ্টি দিতে অনুরোধ করেন ১৭ বিচারককে। বলেন, সেখানে আছে, জেনোসাইডের বাদি ও বিবাদি দুই পক্ষই। মামলা করা হয় যেকোনো রাষ্ট্রকে এবং তা আরেকটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। কিন্তু মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে ওআইসির পক্ষে এবং ওআইসির আর্থিক সহায়তায়।

মিয়ানমারের আইনজীবীরা আরেকটি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী মামলাকারী ও বিবাদি দুপক্ষই বিবাদমান দেশ হতে হয়। এক্ষেত্রে গাম্বিয়ার বিবাদমান দেশ নয়, দেশটির সঙ্গে মিয়ানমারের কোনো বিরোধ নেই। তাই গাম্বিয়া কোনোভাবেই মামলা এ আদালতে করতে পারে না, অভিযোগটি বাতিল করা হোক।

মামলাটি বাংলাদেশ করলে কি জোরালো হতো?- এ বিষয়েও কথা বলেন মিয়ানমারের বিদেশি আইনজীবী। তারা বলেন, বাংলাদেশ মামলা করতে পারতো, তাতেও টিকতো না, কেননা মিয়ানমার বাংলাদেশের সরাসরি কোনো ক্ষতি করেনি। সেদেশের ভেতরে কারো ক্ষতি করেনি।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে এই আইনজীবীরা বলেন, গাম্বিয়া যে সংস্থার পক্ষে মামলাটি করেছে, সেই ওআইসির সর্বশেষ প্রতিবেদনেও রাখাইন বিষয়ে জেনোসাইড শব্দটি ব্যবহার করেনি, তাতে লেখা হয়েছে এথনিক ক্লিনজিং।

প্রসঙ্গত, জেনোসাইড বা গণহত্যা বলতে বোঝায় ধর্মীয়, ভাষা এবং জাতীয়তা ভিন্ন এক জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা আর এথনিক ক্লিনজিং বা জাতিগত নিধন মানে একটি জনগোষ্ঠীকে বিতাড়িত করা, সেটা কখনো শান্তিপূর্ণ হতে পারে না।

আরো পড়ুন




ঢাকা/সাজেদ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ